যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক ট্রাইব্যুনাল কাদের মোল্লার বিচারের যে রায় দিয়েছে তা ছিল একপ্রকার প্রহসন। সেই প্রহসনটা কেন হয়েছিল বা এর পিছনের কারণগুলো কি ছিল সেটা আমি ব্যাখ্যা করেছি “সরকার যে ভয়টি পেয়েছিল লেখার শিরোণামে”। সেখানে আমি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি, একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কি কি চাপ থাকে সেগুলো তুলে ধরার। যাইহোক, রায়টি ঘোষিত হয় গত ৫ই ফেব্রুয়ারী এবং সেইদিনই আমি লিখেছিলাম, “এই রায় মানিনা, ফাসির কোনো বিকল্প নাই”। ফাঁসির বিকল্প কেন নেই সেটাও পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছি। ঠিক তখন শাহবাগে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও হরতালের করেন যানবাহন না থাকায় থাকায় যাওয়া হয়ে উঠেনি কিন্তু ব্লগে আমি আন্দোলন চালিয়ে গেছি। এই রায়ের কারণে মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে, চারদিকে ছিঃ ছিঃ রব উঠে যায়। ক্ষোভ যে এত বৃহৎ হতে পারে তা সরকার ন্যূনতম আন্দাজও করতে পারেনি। মানুষ ক্ষেপে গিয়ে সরকারকে গালমন্দ করলেও, পরিশেষে লাভ হয়েছে সরকারেরই। সরকার বুঝতে পেরেছে যে জনগন সত্য ব্যাতীত কোন মিথ্যা চায়না, তাদের সাথে কোন ধাপ্পাবাজি চলবেনা। তবে এই সমর্থনটা সরকারের খুব প্রয়োজন ছিল, খুব প্রয়োজন ছিল। সরকার এই রায় নিয়ে ভয়াবহ চাপে ছিল, দেশীয় আন্তর্জাতিক সহ গৃহযুদ্ধের স্পষ্ট চাপ ছিল। এই চাপ মুক্ত হয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে মানুষের এই সতস্ফূর্ত সমর্থনের খুব প্রয়োজন ছিল। তবে মানুষেরা, অর্থাৎ আমরা সবাই যারা এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত তারা সরকারকে একটা সু্যোগ দিয়েছি বলে বলতে পারি। তবে এই আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ তাদের একবার প্রমাণিত করল। শাহবাগ থেকে শুরু করে দেশের , বিদেশের সকল জায়গায়, সকল মাধ্যমে সকল উপায়ে গণবিস্ফোরন করে প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারা আসলেই শিবির জামাত মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়, ফাঁসির কোন বিকল্প ও চায়না। এত সুশৃঙ্খল, ও সুন্দর ভাবে সত্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন মানুষ আগে কখনো দেখেছে বলে মনে হয়না। জনগন তাদেরকে একবার প্রমাণ করেছে মহা মহাসমাবেশে শিবির ও জামাত নিধনের প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে। সরকার ও তাদের পর্যালোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ বিষয়ক ট্রাইব্যুনাল আইনটি সংশোধন করে আপীল করার করার উদ্যোগ নিয়েছে। মানুষের এত সমর্থন ও সাহসে পুলিশ সহ প্রশাসনের সকলে উদ্দীপ্ত হয়েছে। তাই কক্সবাজারে যখন জুম্মার নামাযের পর জামাত শিবির পুলিশের উপর হামলে পরে, পুলিশ ও তাদের ছেড়ে দেয়নি। তাই এই সংঘর্ষে প্রশাসনের অনেকে আহত হলেও তিনজন পাকিস্তানি কুকুর মারা যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামাত শিবির সরকার ও জনগণকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। তারা আগামী সোমবার এই দেশ একদিনের জন্য অচল করে দিতে চায়, তারা এই দিন জনগণ স তাদের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করবে। সর্বপরি তারা, এই আন্দোলনের মধ্যেও তারা দেশকে হুমকি দিতে পারে, দেশের অভ্যন্তরে থেকে। তাই সরকারকে এখন প্রমাণ করতে হবে যে তারা সঠিক পথে আছে। আর জনগণকেও প্রমাণ করতে হবে যে শুধু মুখেই নয় কাজেও তারা রাজপথে আছে। শিবির নিধন কর্মসূচী চলবে। সরকারকে যেভাবে প্রমাণ করতে হবে সেটা হল আগামী সোমবার কোনভাবেই হরতাল হতে দেয়া যাবেনা, জামাত শিবির প্রতিহত করতে হবে। তারপরে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি নিশ্চিত করে, আইন করে এদের নাগরিকত্ব বাতিল সহ ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। আর জনগণকে এবার স্লোগানের সাথে লাঠি নিতে হবে। যেখানে জামাত শিবির সেখানেই গণধোলাই, সেখানেই তাদের নিধন করতে হবে, যেভাবে পাগলা কুকুর নিধন করা হয়। আসুন আমরা আমাদের প্রমাণ করি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




