বুয়েটের বাঁশ আর লোডশেডিং এর যুগপৎ আক্রমনে ক্লান্ত,পরিশ্রান্ত হয়ে ব্লগিংকে শুধুমাত্র মন্তব্য প্রদানের মাঝেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলাম
কিন্তু এই নবউদ্যোগের শুরুতেই খেলাম বিশাল ধাক্কা!!!মাথায় লেখার কোন আইডিয়াই আসছে না
কাল ঘুম থেকে উঠলাম সকাল ৭:৩০ এ।এক বন্ধু রিকশা নিয়ে আসবে ৮:৩০ এ। তার সাথে প্রেস ক্লাব যাবো,সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বুয়েট ক্যাম্পাস। তাই রাতে ঘুমানর আগেই আলার্ম দিয়ে রেখেছিলাম। ভাবলাম দিনের সবকিছুই ভাল কাটবে,কারণ প্রথম ধাপটিই পরিকল্পনামাফিক সম্পন্ন হয়েছে।কিন্তু বিধি বাম!!! প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েই চলে গেল ২০টা মিনিট
প্রেসক্লাবে নেমেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে হন্টন শুরু এবং মিনিট পাঁচেকের মাঝেই বৈশাখী হন্টন আনন্দের যে আশা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম,তার অবাঞ্ছিত মোহমুক্তি ঘটল রৌদ্রের খরতাপে।তাই যাত্রার দিক পরিবর্তন করলাম হলের উদ্দেশ্যে।হলে গিয়েই গা এলিয়ে দিলাম ঠান্ডা বাতাসে। আরেকটি ভালো কাজ করলাম বন্ধুদের ঘুম থেকে উঠিয়ে।
১০টার দিকে সবাই একসাথে ক্যাফের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।সেখানে আরো অনেক বন্ধুও এসে যোগ দিল।সবাই একসাথে কিছুক্ষণ গান গাইলাম। প্রেমিক বন্ধুরা একসময় বিদায় নিল আমাদের কাছ থেকে। আর আমরা ব্যাচেলররা বসে বসে বৈশাখী শাড়ি পরা ললনাদের দেখতে লাগলাম
চোখের ব্যায়াম শেষ হলে সবাই মিলে বের হলাম ক্যাম্পাস ভ্রমণে।এরই মাঝে এক বন্ধু ঘোষনা দিয়ে বসল সে আজ তার পছন্দের মেয়েটিকে মনের কথা জানিয়ে দেবে।আরেকটা ব্যাচেলর কমছে এই দুঃখকে পাশে রেখেই বন্ধুর সাহায্যে ঝাপিয়ে পড়ার প্রতিজ্ঞা করলাম সবাই
আসন্ন এই অ্যাডভেঞ্চার অঙ্কুরেই ঝড়ে পড়ায় আমরা টিএসসির উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম।দুপুরের মাঝে পুরো ভার্সিটি এলাকা ঘোরা শেষ করে এক বন্ধুর বাসায় ঘাটি গাড়লাম দুপুরের খাওয়ার জন্য।খাওয়া শেষে এক ঘন্টা বিশ্রাম- এর মাঝেই হোষ্ট বন্ধুটি কি-বোর্ড বাজিয়ে আর গান শুনিয়ে তার অসাধারণ প্রতিভার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিল
৬:০০টার দিকে আবার আর্কিটেকচার বিল্ডিং এর উদ্দেশ্যে যাত্রা, লক্ষ্য সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপভোগ।তবে মূল লক্ষ্য ছিল "শিরোনামহীন"-এর কনসার্ট।আগে আগে যাওয়ায় দ্বিতীয় সারিতেই জায়গা পেয়েছিলাম।যা হোক আমাদের পরিশ্রম বৃথা যায়নি।বাউল গান আর আর্কির নিজস্ব ব্যান্ডের উপস্থাপনা ছিল চমৎকার।বাউল গান যথারীতি সুপারহিট।আমিও সুযোগ পেয়ে আমার ঝাকড়া চুল ঝাকিয়ে নিলাম
তারপর এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ-শিরোনামহীনের আগমন।তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে শিরোনামহীন মঞ্চে প্রবেশ করল।কনসার্ট শুরু হল বুয়েটের জাতীয় সংগীত ক্যাফেটারিয়া দিয়ে।এরপর তারা পরিবেশন করল-একা পাখি,নদী,সূর্য,ইচ্ছে ঘুড়ি,বন্ধ জানালা,বুলেট কিংবা কবিতা। ব্যতিক্রমধর্মী পরিবেশনা হিসেবে ছিল "পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে"।
কনসার্টের সমাপ্তি ঘটল হাসিমুখ দিয়ে যেন আমরা হাসিমুখে স্ব-গৃহে প্রত্যাবর্তন করতে পারি।সবশেষে তুহিন ভাই খালি গলায় বাংলাদেশ গানটির কয়েক লাইন গেয়ে শুনালেন।মোহাবিষ্ট একটি ঘন্টা কিভাবে কেটে গেল বুঝলাম না!!!এক আনন্দময় অনুভূতি নিয়ে হলে ফিরে চললাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




