সেদিন খুব সম্ভবত তারার মেলা বসেছিলো কিংবা নাম না জানা কোন উৎসব। অমাবস্যার বুকে স্নিগ্ধ কোন ফুলের মতো ফুটে থাকা কোন রাত। আমি বোধহয়, আমাকে সেখানে হারিয়ে ফেলেছিলাম কিংবা সেই রাতের স্মৃতি থেকে দূরে থাকতে আমার আমিকে সেখানে রেখেই ফিরে এসেছি এই সমস্ত দিবারাত্রির ঘোর অমাবস্যায়।
তারপর কতো জোছনা এলো, আমি ভিজতে চাই, ভিজতে ভিজতে কাঁদতে চাই। কাঁদার নিয়ম নেই, তাই জোছনায় ভেজা হয়না। জোছনা রাত নিতান্তই কুৎসিত কোন রাত, অমাবস্যার অন্য প্রান্ত কেবল। অন্ধকার রাতে গুটিশুটি মেরে থাকা কালো বিড়ালের পিঠে ছড়ে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করতো এক সময়। একটা সময় ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখতে পেতাম, কার্নিশ জুড়ে ঝুলতে থাকা সমুদ্রফেরত শহর। শহরের নাগরিক ভাবনা থেকে অনেক অনেক দূরে সরতে চেয়ে চেয়ে নিজেকে রেখে এলাম যে সেখানে, যেখানে আদতে কারো অস্তিত্ব নেই।
আমি অবশ্য একটা সময় ভাবতাম, কেউ বোধহয় থাকে ওখানে। তারাদের মেলার ঠিক মাঝখানে, যত্ন করে কেউ আমাকে পড়ে এখনো। যেখানে নিজেকে ভুল করে রেখে এলাম, সেখানে আসলে কেউ থাকেনা। পরে কেউ, সে পথে হাটতেও চায়নি। দূরতম বাতিঘর ভেবে নয়, অপ্রকাশিত স্বপ্নদের বিভ্রান্তি ভেবে আমাকে আহত করে কেউ জানলো না , মৃত পাখিদের ডানা মেলা পথ ধরে গেলেই দেখা যাবে ঘুমিয়ে আছে অমলিন কেউ।
ধীরে ধীরে, হয়ে গেলাম দন্ডপ্রাপ্ত আসামী। কার্নিশে ঝুলে থাকা রোদের গায়ে আঙ্গুল ছোঁয়াতেও দ্বিধার সাগরে ভাসতে থাকি, হাহাকারের মতো শোনানো কবিতার কথাগুলো থেমে যায় অঙ্কুরেই, আমার আমিকে বলা যায়না, লিখা যায়না, ছোঁয়া যায়না। দূরের ঘুমিয়ে থাকা দেশের সেই তারার মেলার আমিকে ফিরে পাবা যেন দূরতম দূরাশা, একাকী বাতিঘরের চেয়ে ও অনেক বেশী দূরে, নক্ষত্রসম দূরত্বই বোধহয় হয়েছে আমার আর আমার মাঝে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৭ রাত ১:৫৪