আস্তিকরা দাবি করে থাকে তারা বিশ্বাসী।
কিন্তু সত্যিই
কি তারা বিশ্বাসী ?
আস্তিকরা যুগ যুগ ধরে বিশ্বাস
করে এসেছে অলৌকিকতায় ।
তারা বিশ্বাস করে এসেছে এই
বিশ্বজগতের একজন
অতিক্ষমতা সম্পন্ন কেউ
আছে যে সবকিছু সৃষ্টি করেছে ।
তারা কুসংস্কার বিশ্বাস
করে এসেছে । জ্বিন-পরী, ভুত-
প্রেত, শয়তান-দেবদূত
বা ফেরেশতা এবং সৃষ্টিকর্তা ইত্যাদি কাল্পনিক
অস্তিত্তগুলোকে বিশ্বাস
করে এসেছে সবসময় ।
কিন্তু কিছু মানুষ ছিল যারা এসব
কিছু বিশ্বাস করতো না ।
তারা ছিল বাস্তববাদী । যেসব
বিষয় মানুষের দৃষ্টিগোচর ছিল
না সেসবে তারা অবিশ্বাস
করে এসেছে সবসময় । তারা জ্বিন-
পরী, ভুত-প্রেত, শয়তান-দেবদূত
বা ফেরেশতা এমনকি সৃষ্টিকর্তাকে তারা অবিশ্বাস
করতো কারণ তাদের যুক্তি ছিল
এসব স্বত্বাগুলো মানুষের
কল্পনা এবং বাস্তবে এদের কোন
অস্তিত্ব নেই । কিন্তু যখন
আস্তিকরা দাবি করতো যে এগুলোর
অস্তিত্ব আছে তখন এই
অবিশ্বাসী লোকগুলো প্রশ্ন
করতো আস্তিকদেরকে যে তোমরা যে দাবি করো ওই
সব স্বত্বাগুলোর অস্তিত্ব
আছে তোমরা কি কখনো সেগুলোকে দেখেছো অথবা প্রমান
করতে পারবে ঐসব জ্বিন-পরী, ভুত-
প্রেত, শয়তান-দেবদূত
বা ফেরেশতা এবং সৃষ্টিকর্তার
সত্যি অস্তিত্ব আছে ? কিন্তু
তারা কখনই সেই সব কাল্পনিক
স্বত্বাগুলোর অস্তিত্বের কোন
প্রমান দেখাতে পারতো না ।
ফলে অবিশ্বাসী মানুষগুলো কখনই
সেই সব কাল্পনিক স্বত্বাগুলোর
অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো না ।
আবার আস্তিকগুলো সেই সব
কাল্পনিক চরিত্রগুলোর
অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো কোন
প্রকার যুক্তি-প্রমান ছাড়াই ।
ফলে তারা নিজেদেরকে বিশ্বাসী বলে দ্বাবি করতো ।
এবং যারা ঐসব কাল্পনিক
অস্তিত্বে বিশ্বাস
করতো না তাদেরকে বলতো অবিশ্বাসী ।
কিন্তু
সত্যি কি তারা অবিশ্বাসী ছিল
।তারা যা কিছু দেখা যায়
না অথবা যার কোন বাস্তব
অস্তিত্ব নেই
সেগুলোকে অবিশ্বাস
করতো কিন্তু তারা ছিল
বাস্তবতায় বিশ্বাসী । তাদের
মতে যার কোন অস্তিত্ব নেই
তাকে বিশ্বাস করা অর্থহীন ।
অর্থাত প্রকৃত পক্ষে তারাও ছিল
বিশ্বাসী আস্তিকদের মতই । কিন্তু
তারা ছিল বাস্তবতায়
বিশ্বাসী এবং কল্পনায়
অবিশ্বাসী । কিন্তু
আস্তিকরা ছিল কল্পনায়
বিশ্বাসী কিন্তু বাস্তবতায়
অবিশ্বাসী ।
বর্তমানেও মানুষ জ্বিন-পরী, ভুত-
প্রেত, শয়তান-দেবদূত
বা ফেরেশতা এবং সৃষ্টিকর্তায়
বিশ্বাস করে । যেগুলোর বাস্তব
কোন অস্তিত্ব নেই । তবুও
তারা এইসব কাল্পনিক
চরিত্রগুলোর প্রতি অন্ধ-বিশ্বাস
স্থাপন করে চলে ।
তারা বাস্তবতায় বিশ্বাস
করে না ।
তারা বিজ্ঞানে বিশ্বাস
করে না । অর্থাত
তারা বাস্তবতায়
অবিশ্বাসী এবং বিজ্ঞানে অবিশ্বাসী ।
কিন্তু তারা কল্পনায় বিশ্বাসী ।
আবার
বিপরীতক্রমে যারা বাস্তবতায়
এবং বিজ্ঞানে বিশ্বাসী তাদেরকে নাস্তিক
বলা হয় । আস্তিকদের
কাছে নাস্তিকরা অবিশ্বাসী কারণ
তারা অবাস্তব ও কাল্পনিক
যেসবের অস্তিত্ব বাস্তব
জগতে নেই
সেসবে তারা অবিশ্বাস করে। আর
তাই
আস্তিকরা দাবি করে নাস্তিকরা অবিশ্বাসী এবং তারা বিশ্বাসী ।
কিন্তু যখন আস্তিকরা বিজ্ঞানের
সত্য মেনে নেয়
না এবং বাস্তবতা বহির্ভূত
অবাস্তবতায় ও কল্পনায় অন্ধ-
বিশ্বাস স্থাপন করে তখন
তারা বিশ্বাসী হয়
বটে তবে সেটা হচ্ছে কল্পনায়
বিশ্বাসী । কিন্তু
নাস্তিকরা অবাস্তবতা এবং কল্পনাতে বিশ্বাস
করে না কিন্তু তারা বাস্তবতায়
এবং বিজ্ঞানে বিশ্বাস স্থাপন
করে । কারণ বিজ্ঞান
হচ্ছে বাস্তব জ্ঞানের সমাহার ।
অন্য দিকে ধর্ম হচ্ছে কল্পনায়
এবং অবাস্তবতায় বিশ্বাসের
আড্ডাখানা । আর তাই
তারা বিশ্বাসী বলে দাবি করে বটে কিন্তু
বাস্তবতা হচ্ছে তারা কুসংস্কারাচ্ছন্
ন, অন্ধবিশ্বাসী এবং কল্পনায়
বিশ্বাসকারী ।
ফলে তারা হচ্ছে বাস্তবতায়
এবং বিজ্ঞানে অবিশ্বাসী ।
অর্থাত আস্তিকরা কল্পনায়
বিশ্বাসী কিন্তু বাস্তব জ্ঞান,
বিজ্ঞানে অবিশ্বাসী ।
প্রক্ষান্তরে নাস্তিকরা ধর্ম
এবং ধর্মের কাল্পনিক
চরিত্রগুলোকে অবিশ্বাস
করে কিন্তু তারা বাস্তবতায়
বিশ্বাস করে; তারা বাস্তব
জ্ঞান, বিজ্ঞানে বিশ্বাস করে ।
সুতরাং নাস্তিকরা বাস্তবতায়
এবং বিজ্ঞানে বিশ্বাসী কিন্তু
কল্পনায়
এবং মিথ্যা ধর্মে অবিশ্বাসী ।
আস্তিক বিশ্বাস করে আত্মায়;
কিন্তু বাস্তব
জগতে আত্মা বলে কিছু নেই ।
বিজ্ঞান বলে আত্মার কোন
অস্তিত্ব নেই । এটি কিছু মানুষের
কল্পনা মাত্র এবং প্রাচীন
অন্ধবিশ্বাস । আর তাই নাস্তিক
আত্মায় অবিশ্বাস স্থাপন করে ।
ফলে তারা আস্তিকদের
কাছে অবিশ্বাসী । কিন্তু
বিজ্ঞানে বিশ্বাসী । কিন্তু
আস্তিকরা বাস্তবতা ও বিজ্ঞানের
বাইরে থেকে আত্মায় বিশ্বাস
করে ফলে তারা অন্ধবিশ্বাসী ।
আবার আস্তিকরা আত্মায় এত অন্ধ-
বিশ্বাসী যে তারা বিজ্ঞানকেই
অস্বীকার করছে । অর্থাত
তারা বাস্তবতায় অবিশ্বাস
করছে;
তারা বিজ্ঞানে অবিশ্বাস
করছে । অর্থাত
তারা বিজ্ঞানে ও বাস্তবতায়
অবিশ্বাসী । কিন্তু
নাস্তিকরা বাস্তবতায় ও
বিজ্ঞানে বিশ্বাসী কিন্তু
তারা অবাস্তব কল্পনার আত্মায়
অবিশ্বাসী ।
আস্তিকরা বিশ্বাস করে জ্বিন-
পরী, ভুত-প্রেত, শয়তান-দেবদূত
বা ফেরেশতা এবং সৃষ্টিকর্তার
অস্তিত্ব আছে । কিন্ত বাস্তব
জগতে এসব কাল্পনিক চরিত্রগুলোর
কোন অস্তিত্ব নেই । এগুলো কিছু
মানুষের কল্পনার
দ্বারা তৈরী কৃত কিছু চরিত্র
যেগুলোর অস্তিত্ব বাস্তব
জগতে নেই । এবং বিজ্ঞান এসব
অস্তিত্তগুলোকে সরাসরি অস্বীকার
করে । আর নাস্তিকরা এই
বাস্তবতা বিশ্বাস করে ।
ফলে নাস্তিকরা বাস্তবতায়
বিশ্বাসী এবং বিজ্ঞানে বিশ্বাসী কিন্তু
ধর্মে বা কল্পনায় অবিশ্বাসী ।
কিন্তু আস্তিকরা এই
মিথ্যা কাল্পনিক
চরিত্রগুলোকে বিশ্বাস
করে যেগুলো সরাসরি বিজ্ঞানের
বিপক্ষে । অর্থাত
আস্তিকরা কল্পনায় বিশ্বাস
করছে কিন্তু বাস্তবতায় অবিশ্বাস
করছে । অর্থাত
আস্তিকরা বিজ্ঞানে অবিশ্বাসী ।
আবার আস্তিকরা বিশ্বাস
করে মানুষকে এবং অন্যান্য সকল
প্রানীকে তাদের কাল্পনিক
সৃষ্টিকর্তা সরাসরি মানুষ
এবং ঐসব
প্রাণী রূপে তৈরী করে পৃথিবীতে ছেড়ে দিয়েছে ।
কিন্তু বিজ্ঞান বলে মানুষসহ
অন্যান্য সকল
প্রাণী এসেছে প্রথমে জড় পদার্থ
থেকে একটি প্রাণী এবং পরে একটি প্রাণী থেকে পর্যায়
ক্রমে পরিবর্তিত হয়ে অর্থাত এক
প্রাণী থেকে অন্য
প্রাণীতে পরিবর্তিত হয়ে সকল
প্রাণী এবং মানুষ বিবর্তিত
হয়েছে । এটাই বাস্তব জ্ঞান । আর
এটাকে নাস্তিকরা মেনে নিয়েছে ।
আর তাই
নাস্তিকরা হচ্ছে বাস্তবতায়
বা বিজ্ঞানে বিশ্বাসী কিন্তু
কল্পনায় অবিশ্বাসী । কিন্তু
আস্তিকরা এই
সত্যটিকে মেনে নিতে পারে না বা অবিশ্বাস
করে ফলে তারা বাস্তবতায়
অবিশ্বাসী । কিন্তু
তারা বিশ্বাস
করে সৃষ্টিকর্তা নামে এক
কাল্পনিক স্বত্বা মানুষ এবং সব
প্রানীকে সৃষ্টি করেছে যেটা বাস্তবতা বিরোধী এবং বিজ্ঞান
বিরোধী । ফলে তারা কল্পনায়
বিশ্বাসী ।
বিজ্ঞান বলে মহাজগত সৃষ্টি হবার
পূর্বে কোন সময় সৃষ্টি হয়নি ।
এবং মহাবিশ্ব সৃষ্টি হবার
সাথে সাথে সময় সৃষ্টি হয়েছে ।
আর তাই বিশ্বজগতের কোন
সৃষ্টিকর্তা নেই । কারণ বিশ্বজগত
সৃষ্টি করতে হলে সৃষ্টিকর্তার
সময়ের প্রয়োজন যে সময় সৃষ্টিই
হয়নি তখন পর্যন্ত ।
ফলে বিশ্বজগতের কোন
সৃষ্টিকর্তা নেই । থাকা সম্ভবও নয়
। আর এটাই বিশ্বাস
করে নাস্তিকরা ফলে তারা বিজ্ঞানে বিশ্বাসী এবং কল্পনায়
অবিশ্বাসী ।
প্রক্ষান্তরে আস্তিকরা বিশ্বাস
করে সময়ের বাইরে থেকেও
সৃষ্টিকর্তার বিশ্বজগত
সৃষ্টি করা সম্ভব । যেটা সম্পূর্ণ
বাস্তবতা বিরোধী এবং বিজ্ঞান
বিরোধী ।
ফলে আস্তিকরা বাস্তবতায়
অবিশ্বাসী এবং বিজ্ঞানে অবিশ্বাসী কিন্তু
কল্পনায় বিশ্বাসী ।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে আস্তিকরা বিশ্বাসী কিন্তু
বাস্তবতায় নয় ।
তারা বিশ্বাসী কল্পনায়,
মিথ্যা ও ভ্রান্ত ধারনায়
তারা অন্ধ-
বিশ্বাসী এবং বাস্তবতায়
অবিশ্বাসী ।
আবার নাস্তিকরা বাস্তবতায়
এবং বিজ্ঞানে বিশ্বাসী কিন্তু
কল্পনায় এবং মিথ্যা ও ভ্রান্ত
ধারনায় অবিশ্বাসী ।
আর তাই
নাস্তিকরা অবিশ্বাসী নয়
বরং নাস্তিকরাই প্রকৃত
বিশ্বাসী । তারা বাস্তবতায়
বিশ্বাসী । কিন্তু আস্তিকরা প্রকৃত
বিশ্বাসী নয়
বরং তারা মিথ্যা ও কল্পনায় অন্ধ-
বিশ্বাসী কিন্তু
তারা বাস্তবতায়
এবং বিজ্ঞানে অবিশ্বাসী ।
প্রকৃত
পক্ষে নাস্তিকরা সত্যে বিশ্বাসী এবং মিথ্যায়
অবিশ্বাসী । কিন্তু
আস্তিকরা মিথ্যায়
বিশ্বাসী কিন্তু
সত্যে অবিশ্বাসী ।
আর তাই বলা যায় নাস্তিকরাই
প্রকৃত
বিশ্বাসী এবং আস্তিকরা প্রকৃত
অবিশ্বাসী ।