
এটা আদিত্য বাবুর প্রথম ছবি।
আগের পর্বঃ আমার ছোট্ট বাবুটা (১)
বাবু জন্ম নেয়ার পর ডাক্তারের সাথে কথা বলে মাথা হালকা গরম হয়েছিলো। কিন্তু বাবু'র মা তখনও ওটিতে, ওর জন্য চিন্তা হচ্ছিলো খুব। পরে আরেকজন ডাক্তার বের হয়ে আসলেন, উনাকে প্রশ্ন করে জানলাম যে সে ভাল আছে, এখন আর কোন সমস্যা নেই। উনি সরাসরি ক্লিনিকের লোকজনকে দায়ী করলেন, বললেন ওরা ভোর ৫টার আগে সাধারনত গাইনি ডাক্তার বা সার্জনকে খবর দেয়না। কিন্তু ডাক্তারের ঘুমের চাইতে বাচ্চার আর রোগীর জীবন অনেক মুল্যবান, এটা এই অশিক্ষিত লোকগুলো বোঝেনা। উনি আমার হাতে ঔষধের লম্বা লিস্ট ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। আমি ছুটে বের হয়ে গেলাম ঔষধ আনতে, কিন্তু সবচেয়ে বেশী দরকারী ২টা ঔষধ সিরাজগঞ্জ শহরে কোন ফার্মেসিতে ছিলনা। আল্লাহর অশেষ রহমত - সেই সময় মা বাবা আর ছোট বোনটা (উনারা খুব ভোরে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছিলেন) ছিলেন টাঙ্গাইলের কাছাকাছি, মোবাইলে উনাদের কাছে ঔষধের নাম দিয়ে দেই, উনারা টাঙ্গাইল থেকে নিয়ে আসেবেন বলে। বাকি সব কিছু নিয়ে আমি দ্রুত ফিরে আসি ক্লিনিকে।
এসে দেখি আমাদের জন্য সবচাইতে ভাল কেবিনটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যার টয়লেট চরম নোংরা ও নস্ট, ফলে অন্য রুমের টয়লেট ব্যবহার করতে বলছেন। একের পর এক অব্যবস্থাপনায় মেজাজ এমনিতেই খারাপ ছিল, সে অবস্থায় ওদের অফিসে ঢুকে দেখি রাতের সেই আলট্রাসনোগ্রাম করা ডাক্তার ঝিমাচ্ছে। খুব শান্ত গলায় উনাকে জিজ্ঞেস করি যে কাল রাতে উনি যে দু'বার আলট্রাসনোগ্রাম করেন, তখন কোন সমস্যা পেয়েছিলেন কি না, উনি বললেন (সম্ভবত আমার মেজাজ খারাপ বুঝে গেছিলেন) যে সমস্যা ছিল, সেটা ক্লিনিক কতৃপক্ষকে জানিয়েছেন, সেই সময়েই ক্লিনিকের ম্যানেজার (মালিকের শালা, আর কোন যোগ্যতা উনার নেই) ঢোকেন সেই রুমে আর আলট্রাসনোলজিস্টের সাথে এই কথা নিয়ে তর্ক শুরু করে দেন। মেজাজ ঠিক রাখতে বা পেরে আমিও দুচারটা কথা বলে ফেলি, এতে ম্যানেজার সাহেব আমার উপর চরম ভাবে রেগে যান, বুঝতে পারি এটাই চাইছিলেন উনি (খাটি বাংলায় যাকে বলে "ভাব নেয়া")
সেই সময় বাবু'র মা'কে ওটি থেকে বের করে কেবিনে দেয়া হয়। ওর সে সময় মাত্র জ্ঞ্যন ফিরেছে, চোখ খুলেই আমাকে দেখতে পেয়ে বলে - বাবু? আমি বললাম বাবু ভাল আছে, আমার মতই হয়েছে দেখতে আর চুলগুলো তোমার মত, সিল্কি। বাবুর'মা আমার হাতটা ধরে বলে - খুশী হইছো? আমি কিচ্ছু বলতে পারিনি - সে আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা আল্লাহ পৃথিবীর কোন বাবা মা কে দেননি।
কেবিনে এসে দেখি বাবুকেও নিয়ে এসেছেন মা। আমার ছোট্ট সাইজের পিচ্চি বাবুটা তখন বড় বড় দুটি চোখ মেলে চারিদিকে দেখার চেষ্টা করছে
এই সময় আমার মা বাবা আর ছোট বোন ঢাকা থেকে এসে পৌছান। আরও লোকজন আসতে থাকে ক্লিনিকে, কাজেই আমাকে আবার ছূটতে হয়, এবার মিষ্টির দোকানে

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০০৯ দুপুর ২:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



