
আগের পর্বঃ আমার ছোট্ট বাবুটা (৩)
বাসায় আনার আগে আমি রাতে কখনই বাবুর সাথে থাকিনি। মা থাকতেন, সারারাত ওর কাঁথা বদলে দেয়া লাগতো, আমি সাহস পেতামনা। আর তিন সপ্তাহ পরে বাবুও আর একেবারে কাদা কাদা মাটির পুতুলের মত নরম ছিলনা, অনেক শক্ত হয়ে গেছিলো। যেদিন ওকে বাসায় নিয়ে আসি, ওকে নিয়ে আমাদের ঘরে ঢুকতেই যেন ঘরটা উজ্জ্বল হয়ে যায়
অল্প একটু কান্না করে, খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে যায় বাবু। আমরাও গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নেই, তারপর ওর জন্য আরও কিছু জিনিস কিনে নিয়ে আসি। সমস্যা হলো যা দেখি তাই কিনে ফেলতে ইচ্ছে করে। বাসায় ফিরে এসে দেখি বাসা ভর্তি মেহমান, বাবুকে দেখতে আসছে সবাই। সবাই কোলে নিচ্ছে, বাবুও চুপ করে আছে, কান্নাকাটি নেই। মজা লাগে এই ভেবে যে বাবুটা মিশুক আছে, কেউ কোলে নিলেই অনেক বাবু কান্না শুরু করে দেয় ... সেটা বিব্রতকর
অনেক রাতে লোকজন চলে গেলে আমি আমার সোনামনিটাকে একা পাই, উনি এর মধ্যেই দু'বার ঘুম দিয়েছেন ফেলেছেন। কাজেই রাত ১২টার পর উনার চোখে আর ঘুম ছিলোনা সেদিন। ওর মা ক্লান্ত হয়ে ঘুমে পড়ে যাচ্ছে দেখে আমি ওকে কোলে করে নিয়ে বসার ঘরে চলে আসি। দেখি আমার একুইরিয়ামের দিকে ও তাকাচ্ছে বার বার। একুইরিয়ামের নীলাভ সাদা আলো ওর কাছে ভাল লেগেছে মনে হয়। একুইরিয়াম দেখতে দেখতেই আমার কোলে ঘুমিয়ে পড়ে বাবু, আমি ওকে শুইয়ে দিয়ে নিজেও ওর পাশে শুই, ক্লান্তিতে চোখ বুঁজে আসে আমারও। ঘন্টাখানেক পর দেখি কাথে ভিজিয়ে বেচারা ওর ছোট্ট বিছানাটা থেকে আমার বুকের মধ্যে সরে আসার চেষ্টা করছে। এতো মায়া লাগে ওর ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে, ঠিক করি সারা রাত আর ঘুমাবোনা, সারা রাত আমি আমার সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবো।
এর পর থেকে আর কোন রাতে আমি ঘুমাইনি। ঠিক করে নেই - সকালে আমার মা ঘুম থেকে না ওঠা পর্যন্ত আমি জেগে থাকব। মা উঠলে বাবুকে মা'র কাছে দিয়ে আমি ঘুমাবো, আর বাবুর মা সকালের কাজগুলো দেখবে। সেই কথা মত বিছানায় শুতে এসে দেখি একা একা লাগে। এক রাতেই এত মায়া হয়ে গেছে বাবুর জন্য

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




