somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রেমিকারা - কাঁকন পর্ব ;)

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগের পর্বঃ
আমার প্রেমিকারা - ইলোরা পর্ব ;)
আমার প্রেমিকারা - হুমায়রা পর্ব ;)
আমার প্রেমিকারা - জেনী পর্ব ;)

বগুড়া আসিবার পর আমি বগুড়া জিলা স্কুলে ভর্তি হইলাম। আর আমাদের গ্রামের বাড়ী রংপুরে হওয়ায় প্রায়শই গ্রামের বাড়ী যাওয়া হইতে লাগিল। সেই সুবাদে কাঁকনের সাথে মাঝে মাঝেই দেখা হইতে লাগিলো। কাঁকন আমার চাচাতো বোন। বাড়ীতে যাইয়াই আমরা বড় চাচার হেলিকপ্টারে (স্যালো ইঞ্জিনের তৈরী ছোট ট্রাক্টর বিশেষ) করিয়া সকাল বেলাতেই শহরের বাসা হইতে গ্রামে চলিয়া যাইতাম, সারাদিন সেইখানে খেলাধুলা করিয়া সন্ধ্যায় ফিরিতাম। মাঝে মাঝে কাঁকনও আমাদের সহিত শহরে চলিয়া আসিতো। যদিও সে আমার ছোট বোনের সহিত বেশী খেলিতো, তথাপি উহার সাথে ক্রমেই আমার সখ্যতা বৃদ্ধি পাইতে লাগিলো।

একদা এক রাত্রিতে আমরা সকলে বিছানায় বসিয়া টিভিতে হিন্দি মুভী অবলোকন করিতেছিলাম। পাশাপাশি বসিয়াছিলাম আমি, আমার বোন ও কাঁকন। আমি মাঝে মাঝেই আমার দক্ষিন হস্ত পেছনে রাখা বালিশের উপর রাখিতছিলাম। এক্ষনে হঠাৎ আমার হস্তের উপর কোমল আরেকখানি হস্তের পরশে শিহরিত ও বিব্রত হইলাম, কাঁকনও দ্রুত হাত টানিয়া লইলো, কিন্তু কেহ কিছুই বলিলামনা। কিছুকাল পরে আবারও আমি উক্ত স্থানে পুনরায় হাত রাখিলাম, মন তখন মোটেও হিন্দি ফিল্মের ঢিসুম ঢিসুমের প্রতি মনযোগী হইতে পারিতেছিলনা। মুহুর্তকাল পরে আবার আমার হস্তের উপর কোমল হস্তটির উপস্থিতি আমাকে শিহরিত করিলো, কিন্তু এইবার আমি আর হাত সরাইয়া নিলামনা। সুকোমল হাতটিও জায়গা বদল করিলোনা বরং সকলের অজান্তে উহার হস্তটি আমার হস্তের কোমলতা অথবা কাঠিন্য পরীক্ষা করিতে লাগিলো :P:P:P এই অবস্থায় কখন যেন ঘুমাইয়া পড়িয়াছিলাম খিয়াল রাখিতে পারি নাই।

পরদিন সকালে উঠিয়া দেখিলাম কাঁকন তাহার বাড়ীতে চলিয়া গিয়াছে, সাথে আমার ভগ্নীটিকেও লইয়া গিয়াছে। আমার আর সেইদিন উহাদের বাড়ীতে যাওয়া হইয়া উঠিলনা, যদিও আমার মন সমস্ত দিন উহার কাছেই পড়িয়া ছিল;) কেমন যেন লজ্জা লজ্জা লাগিতেছিল, মনে হইতেছিল আমাদের ছোঁয়াছুয়ি খেলার কথা যেন সকলে জানিয়া গিয়াছে এবং সকলে কেমন সন্দেহের চোখে আমার দিকে তাকাইতেছে, অথচ ঘটনা তখনও কেউ জানেনা। সন্ধ্যার কিছুকাল পুর্বে আমার ভগ্নী ফিরিয়া আসিলো এবং আমাকে খুঁজিতে লাগিলো। কিন্তু আমি পাশের বাসায় থাকাতে আমার আসিতে সামান্য দেরী হইয়া গেল, এই সময়ের মধ্যে আমার অতিশয় অসহিষ্ণু ভগ্নী কাঁকনের দেওয়া একখানা প্রেমপত্র ও গুলাব পুষ্প আমার মাতৃদেবীর হস্তে সমর্পন করিলো। পত্রখানীতে তেমন কিছুই লেখা ছিলোনা, শুধু অত্যন্ত দুর্বোধ্য বাংলা হস্তাক্ষরে লিখা ছিল - "আমি তোমাকে ভালবাসি" - যাহার পাঠোদ্ধার করিতে আমার মাতৃদেবীর মুহুর্তকাল সময় ব্যায় হইয়াছিল। ততক্ষনে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া চরম লজ্জা শরমের মধ্যে পড়িয়া গেলাম, কারন তখন সকলে এই বিষয় লইয়া তীব্র হাসাহাসিতে ব্যস্থ ছিল :P:P

পরদিন খুব ভোরে উঠিয়া আমরা বগুড়া চলিয়া আসিলাম, আমার প্রেমের ফুল অঙ্কুরেই বিনাশ হইলো :(( আমি উহাকে ভালবাসা জানাইবার কোন অবকাশ পাই নাই। মাসাধিককাল পরে যখন পুনরায় বাড়ীতে গমন করিলাম তখন জানিতে পারিলাম কাঁকন ততদিনে তাহাদের বাড়িতে অবস্থানরত জায়গীর মাষ্টারের প্রেমে পড়িয়া গিয়াছে :((:((

এরপর কাঁকনের সহিত কোনকালেই আমার সহজ স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়িয়া উঠে নাই। বরাবর আমি তাহা হইতে অথবা সে আমা হইতে লুকাইয়া পলাইয়া নিজেকে ছুপাইয়া চলিতাম। শেষবার উহাকে দেখিয়াছিলাম আমার ছোট চাচার বিবাহের দিনে, যখন সে নিভৃতে এক নির্জন কোনে আমাকে একেলা পাইয়া আমার হাতখানি ধরিয়া ক্ষমা চাহিয়া লইয়াছিল যদি আমার মনে কোন কষ্ট থাকে - তাহা ভাবিয়া। আমি তাহাকে বলিতে পারিনাই যে আমিও ততদিনে লোপার প্রেমে হাবুডুবু খাইয়া খাইয়া ডুবিতেছি আর ভাসিতেছি :D:D

ক্রমশ ... আমার প্রেমিকারা - লোপা পর্ব ;)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:১৯
৭৭টি মন্তব্য ৭৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×