somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই ‘আবুল’ এর লড়াইয়ে অন্য কিছু আছে। ??

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জমে উঠেছে অর্থমন্ত্রী ‘আবুল’মাল আবদুল মুহিত ও জনতা ব্যংকের চেয়ারম্যান ড. ‘আবুল’ বারকাতের লড়াই। দুই ‘আবুল’ এর লড়াই অবশ্য নতুন কিছু নয়। গেল কয়েক বছর ধরে চলছিল এই স্নায়ুযুদ্ধ আর এখন তা প্রকাশ্যে এসে পড়েছে।অনেকে বলছেন, দুই আবুলের এই বাগযুদ্ধে খোদ হাসিনা সরকার বিব্রত।কিন্তু এই লড়াই এর নেপথ্যে অন্যকিছু আছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক অতি বিশ্লেষকেরা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই লড়াই নিয়ে সামনের দিনে কোন পরিনতিতে নিবেন তা নিয়ে জোর হিসাব নিকাশ চলছে। দেশের দুই বরেণ্য অর্থনীতিবিদ এর মধ্যে থেকে আবুল মালের প্রতি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাবোধ। অন্যদিকে বারকাতকে ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করেন শেখ হাসিনা- এমন আলোচনা বিদ্যমান থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দু’জনের পছন্দ করার প্রধান কারণ ছিল তাঁদের ব্যক্তি সততা। কিন্তু দু’জনাই একে অপরকে অসৎ বলে পরস্পর পরস্পরকে সাম্প্রতিক সময়ে তির্যক মন্তব্য ছুঁড়লে দুই ‘আবুল’ সম্ভবত এখন শেখ হাসিনার রোষানলে পড়তে পারেন বলে আশংকা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ঠোঁট কাটা ব্যক্তি হিসাবে আবুল মাল আবদুল মুহিতের একেক সময়ে অপ্রিয় সত্য কথা বলার অভ্যাস তাঁকে ভোগাতে পারে বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। অন্যদিকে প্রায় একই চরিত্রের ব্যক্তি হয়েও আবুল বারকাতের বিবৃতি নতুন করে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করছে বলে অনুমিত হয়। কারণ বুধবার বারকাত অর্থমন্ত্রীকে এক প্রকারের অসৎ মন্ত্রী হিসাবেই দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, “অর্থমন্ত্রী একজন ইন্টেলেকচুয়াল ফ্রড। সে কার্যত জনতা ব্যাংকে একজন দালাল খুঁজছে। আমার ক্ষমতার মেয়াদে তিনি অনভিপ্রেত সুপারিশ করতেন।”

অপরদিকে সাম্প্রতিক সময়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত, আবুল বারকাতের জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদের এক্সটেনশন বিষয়ে বলেন, একজন আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবি অর্থনীতিবিদ হিসাবে তাঁকে ৫ বছর রাখা হয়েছিল- যা যথেষ্ঠ। কারণ পদটি কারোর জন্য চিরস্থায়ী নয়।

এদিকে বুধবার বারকাত যে অভিযোগ বা প্রশ্ন তুলেছে তার উত্তর দেওয়ার রুচি আমার নেই বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।তিনি বলেন, বারকাত কী বলল, না বলল- তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি তার কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না ।

ক্ষুব্ধ মুহিত বলেন, সারা দিন আমি বিভিন্ন প্রোগ্রাম নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। শুনেছি বারকাত আমার বিরুদ্ধে কী সব বলেছে।

সততা, মিথ্যাচার, স্বজনপ্রীতির যে অভিযোগ আবুল বারকাত তুলেছেন, তার কোনো জবাব দিতে রাজি নই আমি।

জনতা ব্যাংকের সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ করার কারণ হিসেবে বারকাত সোমবার অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদবির না রাখার একটি অভিযোগ করেছিলেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় মুহিত মঙ্গলবার বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে মেয়াদ বাড়ার সম্ভাবনা না দেখে এসব কথা বলছেন বারকাত। বারকাতের সব অভিযোগ বিরক্তির সঙ্গে উড়িয়ে দিয়ে মুহিত বলেন, আমার সততা ও দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলার যোগ্যতা বারকাতের নেই। শুধু বারকাত কেন, এই দেশের কারো নেই।

তিনি বলেন, বারকাত যা বলেছে, বলুক। তার রুচি অনুযায়ী সে বলেছে। আমি কেমন, আমার সততা ও দেশপ্রেম কেমন- তা দেশবাসী জানে। বারকাত কী বলল, না বলল- তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি তার কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না ।

অন্যদিকে বুধবার বারকাতের বক্তব্যে আবুল মালের অর্থনীতি নিয়েও সমালোচনা করতে দেখা গেছে। সে বিষয়ে আমাদের সংবাদ কর্মী অর্থমন্ত্রীকে কোনো জিজ্ঞাসা না করলেও বাংলাদেশ ইস্যুতে তা বড় বিষয় বলে মত দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইয়ুসুফ আলী জননেতা ডট কম কে বলেন, “দেশের দুই ইমেজ সম্পন্ন অর্থনীতিবিদের লড়াই ‘অর্থনীতি’ কেন্দ্রিক হলে জমতো। বারকাত কিছুটা শুরু করলেও জ্যেষ্ঠ আবুল বৃহস্পতিবার সে দিকে যেতে পারতেন। এখন তাঁদের লড়াইটি ব্যক্তি কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। যেখানে স্বার্থ সংলিষ্টতা থাকায় দু’জনাই বিতর্কিত হচ্ছেন বলে মত আমার।তবে এই লড়াইয়ে রাজনৈতিক ইন্ধন আছে এবং সেখানে হাসিনা সরকারের বিশেষ টিম কাজ করছে। লড়াইটি নিষ্পত্তি হতে বাধ্য।”

এদিকে এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মাস দুয়েক আগ হতেই দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা আবুল মাল ও আবুল বারকাতের লড়াই চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। কারণ সে সময় জনতা ব্যংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রহমান কে আবুল বারকাতের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পরিষদ এক্সটেনশন দিতে চাইলেও বাঁধ সাধেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সেই বিষয়ের সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছ পর্যন্ত পৌঁছালেও আবুল মাল মুহিত তা নস্যাত করে দেন। ঠিক তাঁর দু’মাস পর আবুল বারকাতের চেয়ারম্যান পদের সময় বর্ধিত করার সুযোগ থাকলেও অর্থমন্ত্রী এবারেও কট্টর ছিলেন।

অন্যদিকে ১২ জানুয়ারী সরকার গঠনের পর গুজব ছিল, একজন অর্থ প্রতি মন্ত্রী হিসাবে মন্ত্রী পরিষদে জায়গা পেতে পারেন আবুল বারকাত। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর অনিচ্ছায় তা হয়ে ওঠেনি বলে সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় হতে জানা যায়।

অপরদিকে দুর্নীতি পিছু ছাড়েনি দুই ‘আবুল’ কেও। দেশের কোনো পর্যায়ের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এমন কি গণ মাধ্যম এই দুই ‘আবুল’ কে নিয়ে সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে প্রচ্ছন্ন হয়ে আছেন তা না প্রকাশ করলেও দুজনের একে অপরকে দোষারোপ করার মুল বক্তব্য দুর্নীতি কিংবা স্বজনপ্রীতি প্রশ্রয় পাচ্ছে।

এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, জনতা ব্যংকের সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রশিদ কে ধরে রাখতে সুবিধা ভোগী এক ব্যবসায়ী শ্রেনী প্রায় ২০০ কোটি টাকার বাজেট রেখেছিলেন অতি উচ্চ পর্যায়কে হাত করতে। এই বাজেট সম্পর্কে খোদ আবুল বারকাত জানতেন এবং তিনি মনে প্রাণে চেয়েছিলেন, আমিনুর রশীদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে থাকুক। একজন ব্যক্তি কেন্দ্রিক স্বভাবে থাকা আবুল বারকাতের ঐ বিষয়ে কেন এত আগ্রহ ছিল তা খতিয়ে দেখতে যেয়ে ইতোমধ্যে জননেতা ডট কমের কাছে আসা শুরু করেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

অন্যদিকে আবুল বারকাতের বক্তব্যে প্রমাণিত হয়, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ধোয়া তুলসী পাতা নন। তিনিও অযাচিত সুবিধা চেয়েছেন বলে আবুল বারকাত নিশ্চিত করেছেন। অর্থমন্ত্রী নিজেও কেন বারকাতের বক্তব্যের জবাব দিলে না তা নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা।

মহাজোট সরকারের মেয়াদে পদ্মা সেতুর ঘটনায় সমালোচনায় ছিলেন সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী। সেই দুই ‘আবুল’ সমাচার শেষ হতে না হতেই আবারো দুই ‘আবুল’। এখানেও দুর্নীতি, যোগ হয়েছে ক্ষমতার লড়াই। ‘চার আবুল’ থেকে ‘দুই আবুলে’ আসলেও হাসিনা সরকারে ‘আবুল’ থেকেই যাচ্ছে!

প্রথম প্রকাশ ্‌্‌্‌
http://jononeta.com
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×