somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোমোডো ড্রাগন

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ পুঞ্জের একটি দ্বীপের নাম কোমোডো। এই দ্বীপে কোন মানূষ বসবাস নেই। চারিদিকে গভীর অরন্য। ছায়াছায়া অন্ধকার। ভেজা মাটি। এই কোমোডো দ্বীপের একটি রহস্যময় প্রানীর কথা প্রচন্ড চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করল। ১৯১২ সালে এই দ্বীপে একটি বিমান ভেঙ্গে পড়ল। বৈমানিক কোন মতে বেচে যায়। কোমোডো দ্বীপে বেশ কিছু হিংস্র প্রানী আছে। বৈমানিক বুদ্বি করে এই সব প্রানীর হাত থেকে রক্ষা পান, কিন্ত এমন এক প্রানী তিনি দেখেন যা তাকে আতঙ্কিত করে তোলে। তিনি দেখেন প্রানীটির মুখ থেকে আগুন বের হচ্ছে। সেই দ্বীপ থেকে উদ্বার পেয়ে বৈমানিক সভ্য জগতে এসে বর্ননা করেন তার রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার কথা। তিনি জানান আগুন মুখো ড্রাগন তিনি দেখেছেন সেই দ্বীপে।

তার এই কথাকে অনেকেই পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দেন। ড্রাগন হচ্ছে চীনের একটি কাল্পনিক প্রানী। ড্রাগন নিয়ে পুরাকালে অনেক গল্প গাথা সৃষ্টি হয়েছে। চীনের পৌরানিক কাহিনীতে অনেক ড্রাগনের গল্প আছে। আধুনিক সভ্য জগতে এই পৌরানিক প্রানীটি কিভাবে দেখা যাবে?

১৯২৭ সালে এক দল আমেরিকান অভিযাত্রী কোমোডো দ্বীপে যায় সেই রহস্যময় প্রানীটির খোজে। তারা সেই ভয়ঙ্কর প্রানীর ছবি তুলতে সমর্থ হয়। যখন সেই ছবি প্রকাশিত হয় তখন অনেকেই রীতিমত বিস্মিত হয়। এই ধরনের বিচিত্র আকারের প্রানী সভ্য জগতে আছে তা অনেকে কল্পনাই করতে পারেনি। তবে আমেরিকান অভিযাত্রী দলের নেতা বলেন, ওই প্রানীটির মুখ দিয়ে আগুন বের হয়না। বের হয় কমলা রঙের চকচকে জিব। সেই জিবটি যখন সাই সাই করে বের হয় ঢুকে তখন মনে হয় আগুন ঝলকাচ্ছে।

এরপর একদল ফ্রান্সের টিভি তথ্যচিত্র কলাকুশলী সেই দ্বীপে যায় এবং ছবি তোলে। সেই ছবির নাম দেয়া হয় কোমোডোর ড্রাগন। এযেন স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের “দ্য লষ্ট ওয়ার্ল্ড”। বিজ্ঞানীরা বলেন এই ধরনের প্রানী ৫০ কোটি বছর আগে অষ্ট্রেলিয়ায় ছিল। এরা হচ্ছে মনিটর লিজার্ড টাইপের প্রানী।

বিজ্ঞানীদের কথায় রহস্য আরো ঘনীভূত হল। জাকার্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিজ্ঞানের বিজ্ঞানীরা ব্যাপকভাবে এব্যাপারে অনুসন্ধান চালাতে থাকেন। ১৯৬১ সালে মধ্যে কোমোডোতে বেশ কিছু অভি্যান চালানো হয়। এর ফলে জানা গেল বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেল শুধু কোমোডোতেই না আশেপাশে আরো চারটি দ্বীপে রয়েছে এই প্রানী। আবারো চিন্তায় পড়লেন বিজ্ঞানীরা, দূরের অষ্ট্রেলিয়া থেকে কিভাবে এখানে আসলো এসব প্রানী। কেমন করে এতদিন টিকে রইল এখানে? পৃথিবীর অন্য কোথাওতো নেই।

এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে আগ্রহ প্রাকাশ করল রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা। ঠিক হল ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা যৌথ উদ্দ্যেগে এক অভিযান চালাবে।

জাহাজে করে এক সময় সেই দ্বীপে গেলেন বিজ্ঞানীরা। দ্বীপে নামার কিছুক্ষনের মধ্যেই দুটি ড্রাগন দেখলেন তারা, একটি তের ফুট অন্যটি সাত ফুট। শক্ত সমর্থ পা, খয়রি কালো রঙ। মাটির ওপর লেজটাকে ঘষটে ঘষটে হাটে। প্রচন্ড শক্তি এদের লেজে। বিজ্ঞানীরা একটি মরা হরিন এনেছিলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই হরিন দুটি সাবাড় করে ফেলল রাক্ষস দুটো একেবারে শিংসুদ্ব। কয়েকদিন পর বিজ্ঞানীরা দেখলেন লেজের এক বাড়িতে একটি বুনো শুয়োর মেরে ফেলল। খুব পেটুক স্বভাবের এরা। সারাক্ষন খাই খাই করে। খাবারের লোভ দেখিয়ে বেশ কয়েকটিকে ধরা হল। জাকার্তা চিরিয়াখানায় এনে রাখা হল। গবেষনার খাতিরে তিনটি প্রানী ব্যবচ্ছেদ করা হল, দেখা গেল এরা আসলেই ৫০ কোটি বছর আগের অষ্ট্রেলিয়ার রহস্যময় পুরানো প্রানী।

একটি ড্রাগনকে সমুদ্রে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হল, দেখা গেল দিব্যি সাতরে তীরে চলে এসেছে। এথেকে অনুমান করা যায় প্রানীগুলো সুদুর অষ্ট্রেলিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে এখানে এসেছে। এরপর প্রশ্ন থাকে এতগুলো বছর প্রানী গুলো কিভাবে টিকে থাকল? উত্তর হল পরিবেশের জন্য। কারন সেই সব দ্বীপে তাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। খাবারের কোন ঘাটতি পরেনি। ডাইনোসরের সমসাময়িক এই প্রানীটি প্রকৃতির বিস্ময় হয়ে এখনও টিকে আছে, খাবার হিসাবে এদের দেয়া হচ্ছে অষ্ট্রেলিয়া থেকে আনা খরগোষ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ৭:৪৭
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×