somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রাভেলগ বেইজিং-১ ফরবিডেন সিটি, তিয়েনআনমেন স্কোয়ার

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


টিকেট করে ফরবিডেন সিটির ভেতরে গেলাম। ঢুকতে প্রথমেই এক জায়গাতে ফরবিডেন সিটির রেকর্ডেড প্রোগ্রাম পাওয়া যায়, এই যন্ত্র দিয়ে জায়গাগুলোর ইতিহাস ও তথ্য জানা যায়, এছাড়া গাইড ও আছে, ঘণ্টায় ১৫০ বা ২০০ আর এম বি তাকে দিতে হবে। আমরা নিজেরাই ভেতরে চলে আসলাম। বিশাল এই নগরে রাজা বাদশাহ থাকতেন, সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল এই এলাকায়। এখন এই নগর সবার জন্য উম্মুক্ত।


ফরবিডেন সিটি
আমরা আস্তে আস্তে ভেতরে এগিয়ে চলেছি। এখানে সারাদিন কাটানো যায়। তারপর ও এই নগর পুরো দেখে শেষ করা সম্ভব হবে না। সম্রাটদের সবকিছুই বিশাল এলাকা নিয়ে। ধাপে ধাপে প্রাসাদ গুলো বানানো। এক স্তরের পর বেশ ফাঁকা জায়গা তারপর আবার প্রাসাদ। এখনে রাজ দরবার, রাজ অন্তপুর এবং আরও অনেক দরবার কক্ষ আছে। এক দিকে হাঁটতে শুরু করে আমরা চলছি তো চলছি। প্রাসাদ গুলো প্রথমে প্রায় একরকম লাগে । তবে একটু ভাল করে দেখলে এগুলোর মধ্যে পার্থক্য বোঝা যায়।


দুপুর দুইটা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে দেখে সবাই ক্লান্ত হয়ে গেলাম। মাঝে একটা প্রাসাদের খোলা বারান্দায় আইসক্রিম বিক্রি হচ্ছে দেখে সেখান থেকে আইসক্রিম কিনলাম। এখানে দুই দিকে দুটো সুভেনির সপ আছে। ফরবিডেন সিটি, তিয়েনআনমেন স্কোয়ার ও চীনের প্রাচীরের অনেক সুন্দর সুন্দর সুভেনির এখানে পাওয়া যায়। আবার হাঁটা শুরু করলাম। এক পাশে বসার জন্য বেঞ্চ পাতা দেখে বসে পড়লাম। আমাদের মত অনেকে এখানে বসে বিশ্রাম নিচ্ছে। এই এলাকাতে প্রথম শ্রেণীর আন্তর্জাতিক মানের টয়লেট সুবিধা আছে। বেশ সুন্দর এ পরিস্কার এলাকা। ফ্রেস হয়ে নিলাম। তারপর একটু দূরে বেশ বড় একটা সুভেনির সপ দেখালাম, এখান থেকে কিছু সুভেনির নিলাম, দাম একটু বেশী হলে ও কোয়ালিটি ভাল। এই এলাকায় দুই প্রাসাদের মাঝে বসার জন্য অনেক বেঞ্চ পাতা। একটু ছায়া দেখে বসে পড়লাম।


আর এই প্রাসাদ দেখার শখ নেই কারুর, তাই কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আমরা তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের দিকে রওয়ানা হলাম। ফরবিডেন সিটি থেকে বের হলেই অনেক দোকানপাট এখানেও অনেক সুভেনির পাওয়া যায়। এই জায়গাতে চীনা মিষ্টির দোকান দেখলাম। নানা ধরনের শুকনা ফল দিয়ে এখানে মিষ্টি বানায়। কয়েকটা টেস্ট করলাম। আমার কাছে ভাল লাগল। কিছু মিষ্টি কিনলাম এখান থেকে। বিকেল বেলা তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে বেড়াতে এলাম। বিশাল এই ঐতিহাসিক চত্তর দেখে মনটা ভরে গেল। এই এলাকা সুন্দর ভাবে সাজানো, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিস বেশ তৎপর। চেয়ারম্যান মাও সে তুং এর মমি এখানে আছে তবে তা দেখা হয়নি। চীনের বিশাল লাল পতাকা বাতাসে পত পত করে উড়ছে এখানে। রাস্তার অন্য পাড়ে মূল স্কোয়ার। এই স্কোয়ার নানা রঙের ফুলের বাগান ও সুন্দর সুন্দর ভাস্কর্য দিয়ে সাজানো।


তিয়েনআনমেন স্কোয়ার
রাস্তা পার হয়ে আমরা সেখানে গেলাম। অনেক হাঁটতে হল, দশ বার লেনের রাস্তা পার হতে হয়, সেখানে ট্রাফিক পুলিস সিগনাল দিয়ে দর্শকদের পারাপারে সাহায্য করছে। ছবি তোলার অনেক স্পট আছে এই স্কোয়ারে, আমরা ঘুরে ঘুরে ছবি তুললাম। এই চত্তরেই এক সময় অনেক বিক্ষোভকারীকে ট্যাংক চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়ছিল। এখন সেই ঘটনা ইতিহাস হয়ে গেছে। এখানে ফেরী করে চীনের পোস্টকার্ড বিক্রি করছে কয়েকজন হকার। সারা চীন দেশের অনেক সুন্দর ছবি প্রিন্ট করে পর্যটকদের কাছে বিক্রি করছে এরা। অনেকে কিনছে। বিদেশী কমই দেখলাম। চীনের মানুষেই গমগম করছে এলাকাটা।
শেষ বিকেলে ফেরার পথে এই চত্বরের কাছেআমরা দুই নাম্বার লাইনের কুইয়ানমেন মেট্রো স্টেশনথেকে জিয়াংগোমেন মেট্রো স্টেশনে এসে আমাদের এপার্টমেন্টে ফিরে এলাম। এই স্টেশনঅন্য লাইনের হলেও এই লাইন থেকে প্রায় সব লাইনে যাওয়া যায়। আমাদের এলাকার কাছেই ইয়ংআনলি মেট্রো স্টেশন, এখনেই সিল্ক সিটি নামের বেশ বড় মার্কেট, এই মার্কেটে দরাদরি করে জিনিষপত্র কিনতে হয়। আমরা এই মার্কেটে চলে এলাম। বিশাল মার্কেট সব জিনিসই এখানে পাওয়া যায়, দেখে এবং চিনে জিনিষ কিনতে হয়, তা না হলে দামে এবং কোয়ালিটিতেও ঠগার সম্ভাবনা আছে।
রাতে কিছু কেনাকাটা করে এখানে ডিনার করে নিলাম। পাঁচ কিংবা ছয় তালায় ফুড কোর্ট, এখানে দেশী খাবার পাওয়া যায়, তাই সেখানে খাবারের অর্ডার দিলাম। রাতের বেলা মজা করে ভুরিভোজন শেষে হেঁটে হেঁটে আমাদের আবাসে ফিরে এলাম। পরের দিন গ্রেট ওয়াল দেখার জন্য রেডি হলাম। একটা প্যাকেজ ট্যুরের সাথে আমরা সেখানে যাব ঠিক করলাম।
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×