
১৯৭৪ – ৭৫ সালের কথা। সে সময় কুমিল্লার টমসম ব্রিজ বিমান বন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমান নিয়মিত চলাচল করত। খুব অল্প সময়ে কুমিল্লা থেকে ঢাকার তেজগাঁ বিমান বন্দরে বিমান নামত। কুমিল্লা থেকে ২০ টাকা দিয়ে টিকেট কিনে এই বিমানে ভ্রমন করা যেত। এর চেয়ে আগে হয়ত কম দাম ছিল টিকেটের তবে সেটা আমার জানা নেই।
আমার বাবা সে সময় তার পরিবার ও আমার ছোট মামাকে নিয়ে কুমিল্লা থেকে ঢাকা পর্যন্ত বিমানে আসার প্রস্তুতি নেয়। সব মিলিয়ে পাঁচ জন, ভাড়া একশত টাকা। বেশ উত্তেজনা অনুভব করছিলাম। প্রথম বিমান ভ্রমন। মামার জন্যও সেবার প্রথম বিমান ভ্রমন ছিল।
ফকার ফ্রেন্ডশিপ বিমান ছিল সেটা। বিমানের সামনে ডানা। আমরা সময় মত বিমানবন্দরে হাজির হলাম। মানুষ জন কম, বিমানে অনেক যাত্রী। বিমানে উঠার পর এয়ার হোস্টেস কাগজের কাপে এক গ্লাস জুস আর কাগজের ট্রে তে করে নাবিস্কো চকলেট নিয়ে আসল। আমরা সেখান থেকে দুটো চকলেট আর জুস নিলাম। এই জুস খাবার পর্ব চলতে চলতেই বিমান তেজগাঁ বিমান বন্দরে নামার ঘোষণা দিল।
তখন হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর চালু হয়নি। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট গুলো তেজগাঁ বিমান বন্দরে ল্যান্ড করত।বিমান ভ্রমনের প্রথম অভিজ্ঞতার রেশ স্মৃতি থেকে মুছে যাওয়ার আগে তাই সবার সাথে শেয়ার করলাম। এর কিছুদিন পর আবার ঢাকায় আসতে হল, তখন টিকেটের দাম বেড়ে চল্লিশ টাকা এবার আমরা চারজন। এর পর টিকেটের দাম বেড়ে ১২০ টাকা হলে আমাদের ক্ষমতার বাইরে তা চলে যায়। অনেক বছর তাই আর বিমানে ভ্রমন করা হয়নি।
কুমিল্লার সেই বিমান বন্দরও আজ নেই, তেজগাঁতে আর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নামে না। দেশের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের সবার একটাই কাজ হওয়া দরকার তা হল, যে যেখানেই আছি সেখানে থেকে নিজের সেরাটা দেয়া আর দেশকে ভালবাসা যাতে আমাদের এই দেশ থেকে কাউকে অন্য দেশে থাকার চিন্তা না করতে হয়। গর্বিত বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা যেন পৃথিবীর বুকে আমাদের স্থান করে নেই। সবাই ভাল থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


