কি হল এপাশ -ওপাশ করছ কেন? ঘুমাবেনা আজ?
- উফফ...এত ঘুমিয়ে হবেটা কি? চোখটা একটু খোলা রাখ না। দেখ কি সুন্দর আকাশ। তুমি জানালা কেন লাগিয়েছ? খোল ওটা...
- না আমার ইচ্ছে নেই, আকাশ দেখার।
-কেন?
- আমি ক্লান্ত। আমার বিশ্রামের দরকার।
-ধুর..আমার ইচ্ছের কোন দামই নেই তোমার কাছে...
- তোমার ইচ্ছের দাম দিয়ে হবেটা কি? তোমার না আছে আকার, না আছে কোন পরিশ্রম করার ক্ষমতা। শুধু এলোমেলো চিন্তা করে আমাকে খাটানো... যথেষ্ট হয়েছে আজ আর না...!
- হ্যা..আমি তো অক্ষমই। বাধা পড়েছি যে তোমার সাথে। বিধাতা তোমাকে আর আমাকে আলাদা করলেই পারতেন.!!
- পাগলের মত প্রলাপ করনা। তুমি, আমি আলাদা হলে, এ পৃথিবীতে কি কাজ করতাম আমরা?
[ এ পর্যায়ে সত্ত্বা চুপ। তার উত্তর জানা নেই। সে দেহের ভেতরে বন্দি! ]
দেহ : মন খারাপ করনা। আজকাল অনেক ব্যস্ত থাকি তো, তোমাকে সময় দেয়া হচ্ছেনা। আকাশটাই তো দেখবে ! জানালাটা খুলে দিচ্ছি...
- থাক তার দরকার নেই।
- রাগ করনা। দেখে নাও আকাশটা। তোমার তো স্মৃতি ধরে রাখার বাক্সের সাথে ভাল সম্পর্ক আছে। আকাশটাকেও ওখানে বন্দি করে ফেল। আমার বিশ্রামের সময় তুমি সময় করে আকাশটা আবার দেখ।
- সত্ত্বা মুচকি হেসে, আমি দেখলে তো তোমাকেও দেখতে হবে। আর আমাকে তো চেন, আমার জল্পনাকল্পনার সব রঙ মিশিয়ে তারপর আমি দেখব আকাশটা আর দৃশ্যপট গুলোও আমি সাজাবো...
- আচ্ছা সাজিও। নিজের ইচ্ছামত...
[কিছুক্ষণ এর মধ্যেই দেহ বিশ্রামে চলে যায়। আর সত্ত্বার দুষ্টুমি শুরু হয়। নানা ধরনের এলোমেলো স্মৃতি নিয়ে তার সাথে কখনও আকাশটাকে জুড়ে দেয়, কখনও দৃশ্যপটের মানুষগুলোকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়...]
→→→
পরদিন সকালে,
মানুষরূপী দেহটা জেগে ওঠে। আর ভাবতে থাকে কি যেন দেখেছিলাম গতরাতে। অল্প কিছুদূর মনে পড়ার পরই, স্মৃতিগুলো যে যার জায়গাবদল করে নেই। সত্ত্বা বেশ খুশি হয়। দেহ সারাদিন চেষ্টা করে যায় পুরো সপ্নটাকে মনে করার। কিন্তু সে ব্যর্থ...
[ মুহুর্ত খুবই গুরুত্বপূর্ন সত্ত্বার কাছে। একটা ভাল মুহুর্ত সে আজীবন জমা রাখতে পারে স্মৃতিবাক্সে। মুহুর্ত যত সুন্দর স্মৃতিও তত সুন্দর। তাই বলে এটা নয়, খারাপ মুহুর্ত স্মৃতি ধরে রাখবে না। স্মৃতি খারাপ মুহুর্ত গুলোকেও বন্দি করে রাখতে চাইবে। কিন্তু, আপনি যেমন খারাপ জিনিস চান না নিজের জন্যে, ঠিক তেমনি সত্ত্বাকে বলুন, খারাপ মুহুর্ত গুলোকেও বাদ দিয়ে দিতে...]
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৪৭