অর্ক খুউব বড় একটা ডিসিশন নিল । সে ঠিক করল সুইসাইড করবে।
ইফতি তাকে আর পছন্দ করে না । অর্কের পুরো পৃথিবীজুড়ে ইফতির বসবাস। ইফতি যখন তাকে আর চাইছেনা সে আর বেচে থেকে কি করবে?
সেদিন অর্ক যে কাজটা করেছিল , প্রথমেই ফরজ গোসলটা ঠিকঠাক করে নিল। মোটামুটি দেখে ভাল ড্রেস আপ (পরদিন ছবি পেপারে আসবে কিনা…) করে বেরিয়ে পড়ল মরবার উদ্দেশ্যে । গন্তব্য তার ছিল রেললাইন । রেললাইনে গিয়ে ইফতিকে একটা ফোন দিবে, তারপর সে ট্রেনে সামনে দাঁড়িয়ে সুইসাইড করবে । রাস্তা হেটে গিয়ে পৌছাল গন্তব্যে ।
কথামত সে ইফতিকে ফোন দিতে লাগল । কিন্তু ইফতি , অর্কের নাম্বার ব্লকলিস্টে রেখেছে । অর্ক কয়েকটা মেসেজ পাঠাল ইফতিকে । তাও ব্লকলিস্ট থেকে নাম্বারটা সরালোনা ইফতি ।
অর্ক আটবারের মতন ট্রাই করেছিল ট্রেনের সামনে ঝাপ দেবার কিন্তু তার ভয় তাকে বাধা দিচ্ছিল । বার বার আত্মহত্যা করলে জাহান্নামে যেতে হবে এই চিন্তা মাথায় আসতেছিল। সে ইফতিকে মেসেজ করল যে, সে পারেনাই সুইসাইড করতে। ইফতি কোন রিপ্লাই দিলনা । অর্ক ঠিক করল সে মারা গেছে ইফতির জন্য । সে আর ইফতিকে বিরক্ত করবেনা । তার ভালবাসা এখানেই শেষ । ইফতি যদি ফোন দেয় তাকে , সে কথাটা জানাবে তাকে । ইফতি আর ফোন দিলনা । অর্কও আর ফোন দিল না । অনেক কষ্ট করে নিজেকে ঠিক করে রাখল । কয়েকদিন সে নিজের সাথে নিজে অভিনয় করে বেচে থাকার ট্রাই করে যাচ্ছিল, একটাই আশা নিয়ে ছিল , ইফতি একবার ফোন দিয়ে তার সাথে কথা বলবে ।
কিন্তু ইফতি আর ফোন দেয়না । চারদিন পর অর্ক ইফতিকে মেসেজ দিল , সে একটু কথা বলতে চাই, তার সাথে । ইফতি রিপ্লাই দিলনা ।
অর্কের কষ্ট শেয়ার করার মত বা তার মনের কথা বোঝার মত কেউ ছিলনা । সে অনেক বেশি কষ্ট আর ডিপ্রেশন এর মধ্যে ছিল । শান্তিতে কাদতেও পারতনা। কাথার নিচে শুয়ে শুয়ে আস্তে আস্তে চোখ দিয়ে পানি ফেলত । অর্ক ইফতিকে আরেকটা মেসেজ পাঠাল সে বাচতে চাই । ইফতি ফোনই অফ করে দিল ।
অর্কের আর বুঝতে বাকি থাকলনা । ইফতি তাকে ভুলতে চাচ্ছে । কিন্তু অর্ক ভুলতে পারছেনা কোনভাবেই । আর পারবেও না কোনদিন ।
অর্ক বুঝতে পারল সে মারা গেলে ইফতির কিছু হবে না । সে অর্ককে ছাড়া থাকতে শিখে গেছে । সবকিছু সহ্য করা যায় , ভালবাসার মানুষের নেগ্লেক্ট করা সহ্য করা যায় না । অর্ক ঠিক করল সে সুইসাইড করবেই । তার ধর্মের কথা ভুলে যাবে । তার নিয়তিতে আত্মহত্যাই লেখা ছিল , এটাই সে মেনে নিবে । তার কষ্ট আর স্বপ্ন গুলো তার সাথেই দাফন হয়ে যাবে । ইফতির কিছুই হবে না। সে তো ভালই বাসেনি কখনও। শুধুমাত্র প্রয়োজনে ইউজ করে গেছে । অর্কের কাছে ইফতি, স্বার্থপর, মিথ্যাবাদী , ধোকাবাজ হয়েই থাকবে ।
অর্ক সবকিছু ভাবা বাদ দিয়ে দিল। আর সুইসাইড করার জন্য তৈরী হতে লাগল। সে ঠিক করল বারান্দার কাপড়ের দড়ি ফ্যানের সিলিং এ লাগিয়ে আত্মহত্যা করবে । আর যেহেতু ইফতি সবখান থেকে তাকে ব্লক করে রেখেছে , তাই সে তার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট দিবে আর তার ক্লোজফ্রেন্ডকে একটা মেসেজ পাঠিয়ে দিবে তার গল্পটা তাকে পড়ার জন্য । আর তার শেষ একটা ইচ্ছার কথা তার ক্লোজফ্রেন্ডকে জানিয়ে দেবে ।
বাবা-মা-আর বোনের কথা মনে পড়ছে অর্কের । বোঝার চেষ্টা না করলেও ,তারা তাকে কিছুটা ভালবাসত । অর্ক চেষ্টা করেছিল, বেচে থাকার । ইফতি সুযোগই দিল না ...!!!
ইফতি খুউব বেশি ভাল আছে, অর্ককে ছাড়ার পর । অর্ককে তার লাইফে জায়গায় দিবেনা সে । যাই হোক, ইফতি ভাল থাকুক । অর্কের তাকে বিরক্ত করাটা উচিত হবে না । অর্কের আত্মহত্যা করাটাই বেটার । শুধু ইফতিকে কয়েকটা কথা বলার ছিল তার । হবেনা, আর । ভাল থেক ইফতি । অর্ককে মেরে ফেলার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ । ভাল থেক । অনেকবেশিই ভাল থেক... !!
কিছু মানুষ শুধু কমপ্লিমেন্ট পাবার আশায় বদলে যায় । তার শেকড় পরিবর্তন করে ফেলে ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:১৮