somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী ভ্যান গগের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

২৯ শে জুলাই, ২০১১ দুপুর ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কে না জানে ডাচ চিত্রকর ভ্যান গগ ছিলেন ওস্তাদ আঁকিয়ে, চিত্রকলায় Expressionism -এর পথিকৃৎ । এই ওস্তাদের ছবি ও বিচিত্র জীবন নিয়ে আজও আমাদের আগ্রহের কমতি নেই। এই কিছু দিন আগেও খবরে উঠে এলেন ভ্যান গগ। কায়রোর মাহমুদ খলিল জাদুঘর থেকে চুরি গেছে তাঁর চিত্রকর্ম … এ নিয়ে হইচই পড়ে গেল। ১৯৭৮ সালে একবার ওই একই জাদুঘর থেকে চুরি গিয়েছিল এই ওস্তাদের ছবি; পরে ১৯৮৮ সালে তা কুয়েত থেকে উদ্ধার করা হয়। তো, যাকে নিয়ে এত হইচই মানুষ হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন?

…নেদারল্যান্ড শব্দের মানে: ‘নিম্নভূমি’। দেশটির অবস্থান সমুদ্রসীমার নীচে, বাধ দিয়ে টিকে আছে। এই দেশটাকে হল্যান্ডও বলা হয়। তবে হল্যান্ড হল নেদারল্যান্ডের একটি প্রদেশ। কাজেই অনেকের মতে নেদারল্যান্ড বোঝাতে হল্যান্ড ব্যবহার করা অনুচিত। নেদারল্যান্ডের অধিবাসীরাই- ‘ডাচ’। এই শব্দের অর্থ: ‘যে নেদারল্যান্ডের থেকে এসেছে বা যে নেদারল্যান্ডের বাস করে’। নেদারল্যান্ডের ভাষাও ‘ডাচ’ নামে পরিচিত। ১৮৫৩ সালের ৩০ মার্চ নেদারল্যান্ডে ভিনসেন্ট ভ্যান গগ-এর জন্ম। । জায়গার নাম জুনডারট।জুনডারট এর নিসর্গ। এই রহস্যময় নিসর্গই শিল্পীকে অনুপ্রাণিত করে থাকবে। তবে ভ্যান গগ এর বেশির ভাগ ছবিরই প্রেক্ষাপট ফ্রান্স।ভ্যাগ গন এর বাবা ছিলেন প্রোটেস্ট্যান্ট যাজক। যে কারণে ভ্যান গগ-এর শৈশবে কট্টর ধর্মীয় আবহ ছিল। আর তার প্রভাবে হয়ে উঠেছিলেন একনিষ্ট খ্রিস্টান। যাজকবৃত্তি গ্রহন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিশোর বয়েস থেকেই ভ্যান গগ অতিরিক্ত আবেগপ্রবন ছিলেন। আর ছিলেন অস্থির। ঘন ঘন মূর্চ্ছা যেতেন। কান কেটে ফেলেছিলেন বলে রটনা আছে। আসলে তিনি কান কাটেননি, কানের লতি কেটে ফেলেছিলেন মাত্র। যা হোক। কখনও আর্ট গ্যালারির সেলসম্যান, কখনও ফরাসি ভাষার শিক্ষক, কখনও ধর্মতত্ত্বের ছাত্র, কখনও ধর্মপ্রচারক হিসেবে জীবিকা বেছে নিলেও বেশি দিন কোনও পেশায় টিকতে পারেননি ওই অস্থিরতার জন্যই । বছর দুয়েক খনিশ্রমিকদের সঙ্গে বসবাস করেছিলেন। শ্রমিকের জীবনের কঠোরাতা উপলব্দি করতে পেরেছিলেন।ঠিক এই সময়েই ধর্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। তবে মানুষের ওপর বিশ্বাস হারাননি। বলেছিলেন, An artist needn’t be a clergyman or a churchwarden, but he certainly must have a warm heart for his fellow men. দুঃখদারিদ্র শিল্পীকে মানসিক যন্ত্রনা দিলেও সৌন্দর্যবোধ বাঁচিয়ে রেখেছিল। ভ্যান গগ-এর ধ্যানজ্ঞান হয়ে ওঠে শিল্প। তবে ঈশ্বর বিশ্বাস পরিত্যাগ করেননি। বলেছিলেন, But I always think that the best way to know God is to love many things. কী অসাধারণ কথা!

উনিশ শতকে শিল্পের তীর্থভূমি ছিল প্যারিস। প্যারিসে গিয়েছিলেন ভ্যান গগ। ওখানে এক ভাই থাকতেন। সেই ভাইয়ের নাম থিও। তার সঙ্গেই ঘনিষ্টতা গড়ে উঠেছিল। থিও হয়ে উঠেছিল ভ্যান গগ এর বন্ধু। জীবনে ৮০০ চিঠি লিখেছেন ভ্যান গগ। বেশির ভাগই থিওকে। একবার লিখেছিলেন, Conscience is a man’s compass. ধর্মবিশ্বাসের সরূপ এভাবে বদলে গিয়েছিল. অল্প সময়ে প্রায় ৯০০ ছবি আঁকেন। অবশ্য জীবদ্দশায় মাত্র একখানি ছবি বিক্রি করতে পেরেছিলেন। তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে যখন তিনি মৃত। প্যারিসের কাছে জীবনের শেষ তিন মাস কাটান। ডা. Paul Gachet অসুস্থ শিল্পীকে দেখাশোনা করতেন। Gachet ছিলেন দরদী মানুষ। ডাক্তারের ছবিও এঁকেছেন ভ্যান গগ। Portrait of Dr. Gachet. এটি ভ্যান গগ-এর আঁকা ৯০০ ছবির মধ্যে অসম্ভব জনপ্রিয়। আসলে এই দয়ালু ডাক্তারের সহৃদয়তা পৃথিবীর মানুষ আজও মনে রেখেছে। শিল্পপ্রেমিক মহৎ হৃদয়ের অধিকারী ডা: Dr. Gachet নিঃসঙ্গ একজন চিত্রকরের শেষ জীবনে সেবা করেছিলেন। ১৯৯০ সালে ছবিটি ৮২.৫ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়.।জীবনের শেষ পর্যায়েও ছবি এঁকেছেন ভ্যান গগ। পরিচিত সব দৃশ্য … গ্রামের গির্জা …গম ক্ষেত …গম ক্ষেতে কাক …

‘গম ক্ষেতে কাক’ ছবিটা আঁকা শেষ করে নিজেকে গুলি করেন ভ্যান গগ। সময়টা ১৮৯০ সালের ২৯ জুলাই।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×