somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমিষ-ই-নিরামিষ

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা বলি বর্তমানের যুগ বিজ্ঞানের যুগ। সমস্ত কিছুই বিজ্ঞান ভিত্তিক।সেটা আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে সকল জিনিস। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল “আমরা কতজন এই বিজ্ঞানকে অনুসরন করি? বিজ্ঞানের কথা শুনি?” বাল্য বিবাহের
কথা আমরা সকলেই শুনেছি। রাজা রামমোহন রায় (১৮১৮-১৮২৫খ্রী:) বাল্যবিবাহ সহ নানারকম সামাজিক কু-প্রথার বিরূদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু আজ ২০১০ সালেও আমাদের সমাজ থেকে বাল্যবিবাহকে পুরোপুরি রদ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে বাল্যবিবাহ না দেওয়ার বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যও রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ
বলা যায় অনেক গ্রামের কথা যেখানে এখনও ছোট ছোট মেয়েদের বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়। শুধু গ্রামই নয় আমার দেখা এমন অনেক মেয়ে আছে যারা আমাদের বিদ্যালয়েরই ছাত্রী ছিল। কিন্তু কপালের সিঁদুর তাদেরকে শিক্ষা থেকে সরিয়ে দিয়েছে অনেক দূরে। আমি নাম না বললেও তোমরা চিনতে পারবে তাদের। তাদের মধ্যে একজন ছিল ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী এবং অপরজন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। তাদের আর পরের শ্রেণীতে পড়তে দেখা গেল না। তারা এখন কপালে সিঁদুর আর শাড়ি পরে শিক্ষাকে বিসর্জন দিয়ে সংসার করছে। এরকম অনেক উদাহরণ দেওয়া যায় যা বিজ্ঞানকে লঙ্ঘিত করে। এখন আসা যাক প্রবন্ধের নামের বিষয় বস্তুর দিকে(“আমিষ-ই-নিরামিষ”)। নামটা কি রকম অদ্ভুদ না? এর ক্ষেত্রেও কিন্তু আমরা বিজ্ঞানকে অনুসরন করি না। আমরা সকলেই জানি আমিষ ও নিরামিষ দুটি খাদ্যের বিভাগের নাম। কিন্তু এই দুটি নামের ক্ষমতা অনেক বেশী। যেমন আমরা যদি কাউকে জিজ্ঞেস করি- “তোমাদের বাড়িতে আজ কি রান্না হয়েছে?” উত্তরস্বরূপ সে বলবে মুগ ডাল, পনিরের তরকারি, ভাত ইত্যাদি। কিন্তু সে এই খাবারের নামগুলো না বলে যদি সে বলত আমাদের আজ নিরামিষ। তাহলে আমরা বুঝে যেতান কি কি খাবার হয়েছে তার বাড়িতে। কমবেশী আমরা হিন্দুধর্মাবলী সকলেরই বাড়িতে দু তিন দিন নিরামিষ খাবার খাওয়ার ব্রত থাকে। সেই দিন আমরা মুগডাল, পনিরের তরকারি, সয়াবিন এককথায় বলা যায় মাছ, মাংস, পেঁয়াজ বা আমিষ জাতীয় খাদ্য বাদে সব খাওয়া যাবে। যেমন দুধ, মাখন, ছানার পনির, মিষ্টি ইত্যাদি। কিন্তু আমিষ জাতীয় খাদ্য নিরামিষের দিন একদম খাওয়া যাবে না। শুনলে অবাক হবে বিজ্ঞানের মতে দুধ, ছানার পনির, মাখন, ঘি এইসব কিন্তু আমিষ জাতীয় খাদ্য যা আমরা নিরামিষ হিসেবে খাই। তাহলে নিরামিষ জাতীয় খাদ্যই আমিষ জাতীয় খাদ্য হোলোত। এতদিন আমরা সপ্তাহে একদিন বা দুদিন ঠাকুরের ব্রত পালনের জন্য নিরামিষ জাতীয় খাবার খেতাম সেগুলোত আসলে আমিষই। আমরা বলছি নিরামিষ খাচ্ছি কিন্তু খাচ্ছি আসলে আমিষই। আবার আমাদের সৃষ্টি যে খাদ্য গুলো আমিষ জাতীয় খাদ্য যেমন- পেঁয়াজ, রসুন সেগুলো কিন্তু আসলে নিরামিষ। আবার ভাবো মুসুরির ডাল আমরা নিরামিষের দিনে খাই না আবার একই ডাল জাতীয় খাদ্য কলাইয়ের ডাল, মুগডাল আমরা নিরামিষের দিনে খাই। বিজ্ঞানের সংজ্ঞা অনুযায়ী যে সমস্ত খাদ্যে কার্বন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত তাদের প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাদ্য বলে। সুতরাং আমরা বিজ্ঞানকে এককোণে সরিয়ে দিয়ে নিজেদের মনেরমত আমিষ ও নিরামিষ জাতীয় খাদ্যগুলোকে এক এক সারিতে স্থান দিয়েছি। তাহলে “আমিষ-ই-নিরামিষ” আবার “নিরামিষ-ই-আমিষ”। তাই আমাদের এই আমিষ ও নিরামিষের বিজ্ঞানভিত্তিক সংজ্ঞার জন্য লড়াই করতে হবে। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা আমিষ এবং নিরামিষের দ্বন্দ্বের এবার
মিমাংশা করতে হবে আমাদেরই। আশা করি তোমরা সবাই তা করবে।

শুভম পাল
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:০১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×