কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনো করি ... দিনের একটা বড় অংশ ডাটাবেজ, প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ কিংবা লজিক ডিজাইনের মত বেরসিক বিষয়বস্তু নিয়ে নাড়া চাড়ার পিছনেই যায়। তাই হয়ত বিদঘুটে এই টপিকটা আজ মাথায় চাপল। যাই হোক, দীর্ঘ দিন ফেসবুক চালিয়েছি, কত যে যৌক্তিক-অযোক্তিক স্টাটাস, কত আবেগময় মেসেজ আদান প্রদান !!! প্রতিটা শব্দ, প্রতিটা বাক্য মস্তিষ্ক থেকে নিংড়ে নিংড়ে বের করে আনা। কোন স্টাটাস এমন মানুষটিকে ডেডিকেট করে লেখা যে কোনদিন আপ্নাকে হয়ত একটা মূহুর্তও ডেডিকেট করেনি, কোন স্টাটাসে ফুলে ফেপে উঠেছে আপ্নার অভিমান কিংবা কোনটিতে আপ্নার প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি। তবে শুধু আমি না, খুব কম মানুষই হয়ত চিন্তা করে দেখেছেন যে ঐ মস্তিষ্ক নিংড়ানো অনুভূতিগুলার শেষ পরিনতি টা কেমন হয় !!!
এই ভার্চুয়াল পৃথিবীটা আপ্নার আমার অনুভূতির ঐ লিখিত রূপটা গ্রহন করতে উন্মুখ হয়ে থাকে। ওগুলোকে ওরা জমা করে রাখে …… খানিকটা আপ্নার ব্যাংকে জমা রাখা আসলটার মতন। তারপর সেখান থেকে নানা উপায়ে তারা এক রকমে করে খাচ্ছে। রোজ কার আশা - প্রত্যাশার কেচ্ছা গুলোকে একটা আক্ষরিক রূপ দিয়ে আম্রা পাঠিয়ে দিচ্ছি সার্ভারে। সার্ভার থেকে আপ্নার আমার ঐ মস্তিষ্ক নিংড়ানো কেচ্ছা গুলো বন্দী হয়ে যাবে ডাটাবেজ নামক একটা বন্দীশালায়। কোন লেখাটি লিখতে গিয়ে আপ্নার অজান্তেই কিবোর্ডের উপর এক ফোটা চোখের জল পড়ে গেছে, কোন মেসেজটি পড়ে আপ্নি ঐ রাতে দু'টো ল্যাক্সোটেনিল খেতে বাধ্য হয়েছিলেন - এগুলো ডাটাবেজ বুঝবে না। তাকে চেনানো হয়েছে কিছু পূর্ণ ও ভগ্নাংশ সংখ্যা, কিছু টেক্সট - আপনার আমার বস্তাপচা আবেগ গুলোও ঐ সো কল্ড "Data Type" ছাড়া কিছুই নয় বৈকি তার কাছে। আর তারপর সেগুলো zero আর one এ বিশ্লিষ্ট হয়ে দখন নেয় কোন একটা মেমরীতে।
এগুলা হয়ত সবাই আমরা জানি। জানি যে আমার আজকের এই রূপক আবেগটুকুর শেষ পরিনতি হবে বাইনারি একটা চেহারা। তবুও .... তবুও আমরা রোজ আবেগ-অনুভূতি গুলোকে সার্ভারে পাঠিয়ে দিচ্ছি। পারছি না সামান্য অভিমানকে ঠেলে ভালোবাসার মানুষটিকে বলতে "আমি তোমাকে ভালোবাসি" .... পারছিনা আমাদের মূল্যবান আবেগ - অনুভূতি গুলোকে সঠিক মানুষের কাছে তুলে দিতে। হয়ত দূরত্ত্ব নামক অধ্যায়টার শুরু এভাবেই এবং এখান থেকেই ………………
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:২০