somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীলাঞ্জনা @ ২২

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর থেকে বাসার দিকে আমার একটু কালেভদ্রেই যাওয়া হয় … একে তো দূর … দ্বিতীয়ত ক্লাস মিস দেওয়া পসিবল না। কিন্তু কিছুদিন আগে একটা এক্সিডেন্ট এর জন্য আমাকে প্রায় ১৫ দিনের মত বাসায় থাকতে হয়। খেয়াল করলাম আমাদের পাড়ায় একটা অদ্ভুত পরিবর্তন হয়েছে … সেটা হল মেয়েদের মেসের পরিমান বেড়ে গেছে। গেট থেকে বের হলেই চোখে পড়ে একটা ছেলে একটা মেয়ে হেটে যাচ্ছে … ছেলেটার হাতে সাইকেল, মোটামুটি আন্দাজ করা যায় ওরা কলেজ স্টুডেন্ট। খুব পোলাইটলি হেটে যায় … রাস্তার দিকে তাকিয়ে, পাড়ার বড়দের নিজেরা সাইড হয়ে জায়গা করে দেয়। মানে ওরা কি বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড না শুধু বন্ধু এটা বোঝাও বড্ড শক্ত। খুব স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে বলতে ওরা হেটে যায়, মাঝে কেউ একজন দুম করে হেসে দেয়। আমার একটা সমস্যা হল ওদের দেখে আমি হাসিটা কন্ট্রোল করতে পারিনা … এই রকম কাপল দেখলেই আমার নচিকেতার #নীলাঞ্জনা গানটার কথা মনে পড়ে যায়। বয়েসের কারনে আমি যে জিনিস গুলো ছাপিয়ে এসেছি তার ভিতরে এটাকে অস্বাভাবিক ভাবে মিস করি। মিথ্যা বলবনা … একটু হিংসাই হয় ওদের দেখে। না … হিংসাটা এমন না যে আমার গার্লফ্রেন্ড নাই কিংবা এই সুন্দর রোমান্টিক হাটাটা আমি মিস করছি … এমন মোটেই না। আমার হিংসা লাগে এজন্য যে আমি বয়েসটা পেরিয়ে এসেছি। বয়েসের একটা পর্যায়ে নচিকেতা কিংবা অঞ্জন দত্তদের থেকে অনেক প্রভাবিত হয়েছি সেটা অকপটেই স্বীকার করব… পারহ্যাপস গিটার টা হয়ত ঐজন্যই হাতে উঠেছে। হ্যা ইচ্ছেও হত একটা নীলাঞ্জনা থাকবে … সাইকেল নিয়ে মাঝে মাঝে নীলাঞ্জনার পিছনে ঘুরব। কিন্তু ঐ পার্সোনালিটিটা তৈরীই করতে পারলাম না মাইরি … শুধু মনে হতো “শালা একটা মেয়ের পিছনে ঘুরব” ?? তাও সাইকেল নিয়ে ?? না ভাই … ঐ ছ্যাচড়ামিটা আমার দিয়ে হবে না। আর হলোও না। এসব ভাবতে ভাবতে ঐ কাপলকে দেখে আমি আবার হেসে ফেলি। ঐ পিচ্চি পাচ্চা গুলো কি ভাবে আমাকে আল্লাহই জানেন, তবে ঐ হাসিটা আমার দ্বারা ঠেকানো হয়না। না … ক্যাম্পাস লাইফে এগুলো খুব স্বাভাবিক। আমি ও কিছু নিরীহ জীব বাদের সবাই গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ায় … কেউ কেউ তো কুয়াকাটাতেও রাত্রি যাপন করে শুনেছি। কিন্তু স্কুল লাইফে দুজন পাশাপাশি হাটার ঐ ফ্লেভারটা আর কখনোই পাওয়া সম্ভব নয়। কারন ঐ বয়সটার ভিতরে একটা পবিত্রতা ছিল, ভয় ছিল, এক ধরনের একটা আড়ষ্টতা ছিল … পরিবার জেনে ফেললে কি হবে, পাড়ার সিনিয়ররা দেখে ফেললে কি হবে !!!! কিন্তু এই বয়েসে , ধরুন ২২ … ঐ সাইকেল নিয়ে হাটাটা আর চাইলেও হবেনা। যদি একান্ত কথা বলবার দরকার হয় তবে হয়ত একটা রেষ্টুরেন্ট কিংবা কোন কফিশপ বেছে নেওয়া হবে ।

প্রেম করতে হলে নাকি খানিকটা ছ্যাচড়া হতে হয়- কথাটা বেশ শুনেছি। না এটা এডমিট করছিনা, প্রেমিক সম্প্রদায় আমার উপরে ক্ষিপ্ত হতে পারে আবার :D । বাট এই বয়েসে এসে মনে হয় যদি স্কুল লাইফে ফিরে যেতে পারতাম, ঐ ছ্যাচড়াটা একটু হতামই। না, প্রেম করবার জন্য নয়, কোন মেয়ের পাশে হাটবার জন্য নয় … বরং ঐ বয়েসের ইচ্ছেটা পূরন করতে। একজন নীলাঞ্জনা থাকবে… আর আমি তার পিছনে সাইকেল নিয়ে প্রায় ফলো করব। তাকে আমার সাথে প্রেম করতে হবে এমন কখনোইনা। ব্যাপারটা অনেক ইনোসেন্ট, ইউ নো… যদি এই বয়েসের মানুষিকতা দিয়ে সেটা বিচার করি বেশ অড দেখাবে। বয়েসের প্রতিটা পর্যায়েই আমাদের কিছু সপ্ন থাকে, ইচ্ছে থাকে … দুর্ভাগ্য বশত একটা পর্যায়ের ইচ্ছে অন্য পর্যায়ে পূরন করা সত্যিই সম্ভব হয়না। যদি জিজ্ঞাসা করেন ২২ এ এসে কি শিখেছ … তবে আমি বলব এটাই যে বয়সর প্রতিটা পর্যায়ের ইচ্ছে ঐ সময়ের পূরন করে আসা উচিৎ। কারন বয়েসটা থেমে থাকবে না … ইচ্ছেগুলোও বদলে যাবে। কিন্তু পার্টিকুলার ঐ ইচ্ছেটা আর কখনোই পূরন করা হয়ে ওঠে না। কে জানে … হয়ত শেষ বয়েসে রকিং চেয়ারে বসে এই বিষয়গুলোই অনেক প্যারা দিবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×