somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রুতি-নাটকঃ c/o জয়িতা (কেয়ার অফ জয়িতা) --- পর্বঃ ০১

০৪ ঠা জুন, ২০১৬ রাত ২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[প্রারম্ভিকাঃ আমাদের চারপাশের যে ভালোবাসার ধ্যান-ধারনা তার থেকে একটু বেরিয়ে আসার জন্য এটা একটা সামান্য প্রচেষ্টা। রেকর্ডিং এর ব্যাপারটা বলতে পারব না। তবে হ্যা, শেষ পর্যন্ত লিখে যাবার ইচ্ছে আছে। পুরো নাটকটি জুড়ে দুটা চরিত্রঃ রনো যে কিনা থাকে কলকাতায় এবং তার একটা নিজের বাংলা রক ব্যান্ড আছে। আর একটি মেয়ে জয়িতা, থাকে বাংলাদেশে খুব ভালো রবীন্দ্রসংগীত গায়। এদের পরিচয় হয় কলকাতার একটা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠান করতে এসে। আর আমি যে সময়টা নিয়ে লিখছি তখন টেলিফোনের ঠিক তেমন চলতি ছিলনা, তার এরা নিজেদের মধ্যে চিঠি চালাচালি করেই কনভার্সেশান চালায়। আর সেই চিঠিগুলোকেই আমি পর্ব আকারে লিখব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হ্যা, এটাতে ভালোবাসা থাকবে। তবে সেটা কিছুটা আলাদা হবে। ]

ডিয়ার জয়িতা,

আসলে কি দিয়ে বা কিভাবে শুরু করব বুঝতে পারছিনা। চিঠির খামে যে নামটা দেখতে পেয়েছ বা যেটা তোমাকে বেশ কৌতুহলী করে তুলেছে সেটা আমার ভালো নাম… আমি রনো … গত সেপ্টেম্বার ০৫ … ইউরো কনভেন্ট হল অডিটোরিয়াম … বাংলা রক ব্যান্ড “ইননোমিনেট” … খেয়াল আছে তোমার ? আই ডু বিলিভ যে মাত্র দু-মাসে মানুষের পক্ষে এত বড় একটা ইভেন্ট ভুলে যাবার কথা না। হ্যা আমি সেই ছেলেটা বাবা … লম্বা চুল, হাতে সিগ্রেট … তোমাকে সান্তনা দিতে ব্যান্ডমেট দের ফেলে চলে এসেছিল। হা হা হা … । জয়িতা জানোতো, এর আগে আমি কখনো কোনদিন চিঠি লিখিনি… স্কুলে থাকাকালীন “টাকা চাহিয়া পিতার কাছে পত্র” এসব টাইপের কিছু চিঠি লিখেছি। তবে কখনো সেগুলা পোষ্ট অফিস অবধি যায়নি, টিচারের লাল কলমই তার গন্তব্য ছিল। তবে আজকে না , একটা অসাধারন থ্রিল অনুভব করছি জানো !! আসলে সত্যিই কি আমার চিঠিটা কলকাতা থেকে বাংলাদেশ যাবে ? তোমার হোষ্টেলে ? এই খাকি জামা কাপড় পরা ডাক-পিয়ন গুলোকে আমি প্রায় দেখি … আমাদের হোস্টেলের লেটারবক্সে এসে চিঠি ফেলে যায়। কিন্তু আমার নামে কোনদিন চিঠি আসেনি জানো… !!! বাবা-মায়ের সাথে যোগাযোগটা আমি টেলিফোনেই সেরে ফেলি। ওনারা থাকেন দার্জিলিং এ। বাবার চাকরি সুত্রেই ওখানে ওনাদের যাওয়া, তবে আমি ঠিক কলকাতাটা ছাড়তে চায়নি, ইচ্ছা আছে গ্রাজুয়েশান সেরেই তারপর ওসব চিন্তা করব। জয়ি … জানোতো, একটা সময়না আমার ইচ্ছে ছিল চিঠি লেখার !! আমি তখন দার্জিলিং এ … ক্লাস এইট … সেন্ট পল হাই স্কুল। তখন সবে আমি জাস্ট স্টার্ডেড টু লিসেলিং দ্যা বিটলস, বব্ ডেলানটাও শুনছি পুরোদমে। বব ডেলানটা শুনে আমি খাটি বাংলায় যাকে বলে উলটে গেছিলাম। তখন ইন্টারনেট টা তো এমন ছিলনা, খুব ইচ্ছে ছিল বব ডেলানকে চিঠি লিখব … how many roads must a man walk down, before we call him a man কিংবা how many seas must a white dove sail, before she sleeps in the sand … এই কিছু কিছু প্রশ্নের না আমি কিছু উত্তর বের করেছিলাম হাতড়ে হাতড়ে। নাহ … সপ্নটা সপ্নই থেকে গেল, বব ডেলানকে আমার ঠিক চিঠি লিখে ওঠা হলোনা।
জয়িতা ভাগ্য বলতে যেটা একচুয়ালি মিন করে তার উপরে আমার বিশ্বাসটা আসে একটু দেরিতে, ইউ নো। বাট আমি বিলিভ করি, আর আমি এও বিলিভ করি যে ৫ সেপ্টেম্বার ভাগ্যই আমাদের দুজনকে মিট করিয়েছে। সেদিন মাত্র কয়েকটা মিনিটই সময় পেয়েছি তোমার সাথে কথা বলার, ভাগ্য বশত সেজন্যই হয়ত আজ তোমাকে চিঠিটা লিখতে পারছি … না হলে তোমার হোস্টেলের ঠিকানাটাও পাওয়া হতোনা। একটু খেয়াল করো … পারফর্মেন্স নিয়ে আমাদের ব্যান্ডের সাথে এরেঞ্জারের ঝামেলাটা না বাধত তবে তোমার পারফর্মেন্সের পর আমাদেরটা করার সিকুয়েন্সটাও পেতাম না। আর সিকুয়েন্সটা না পেলে তোমাকে ব্যাকস্টেজে খুব টেন্সড হয়ে হাটাহাটি করতেও দেখতে পেতাম না … তার তা পেলে তোমাকে সান্তনা দিতে আসাও হতোনা। আর তা না হলে আমাদের পরিচয়টাও হতোনা। আচ্ছা তুমি কি সব পারফর্মেন্স এর আগেই এমন টেন্সড থাকো ? নাকি অন্য শহর বলে কিছুটা ভড়কে গেছিলে ? তুমি তো দিব্যি গাও রবীন্দ্রসংগীত, কিন্তু ওমন নার্ভাস ছিলে কেন ? জানিও কিন্তু আমাকে পরের চিঠিতে।

জয়িতা … আচ্ছা ধুরো। এই নামটা বড্ড বড় লাগছে। আমি তোমাকে জয়ী বলেই ডাকব। কেমন ?? আমার কি মনে হয় জানো জয়ী ? তোমার তো অনেক মিউজিশিয়ানদের সাথে পরিচয় হয়েছে… কিন্তু আমাকে বোধহয় তুমি সহযে ভুলতে পারবেনা !!! হা হা হা । আমিই সেই দুঃসাহসী যে বোধহয় তোমাকে প্রথম গিটার, ড্রামস এর সাথে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার জন্য স্টেজে নেমতন্ন করেছিল। হা হা হা … আমি ভেবেছিলাম হয়ত তুমি না করে দিবা, কিন্তু তুমি তো দিব্যি গাইলে। পুরো অডিটোরিয়াম মাতিয়ে দিলে। আচ্চাহ তুমিই বলে আমাদের আগে যখন তুমি শুধু হারমোনিয়াম নিয়ে গান করেছিলে এত হাততালি পেয়েছিলে ? হ্যা … হয়ত দিয়েছিল সামনের সিটের কিছু আতেল টাইপের লোকজন। হা হা হা … যাই হোক, জয়ি রাত অনেক হয়েছে। কাল সকালের আমার পোষ্ট করতে যেতে হবে চিঠিটা, আমি এখানেই ইতি টানলাম। আর হ্যা … অবশ্যই চিঠির উত্তর দিও।

ইতি রনো
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৬ রাত ২:৪২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×