somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমমহল খাসমহল ছিটমহল

০২ রা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের একমাত্র ছিটমহলটির নাম কি? এটি কোথায়?- এ ধরনের সাধারণ-জ্ঞান প্রশ্নের উত্তরে কোনে ভাবনাচিন্তার অবকাশ নেই এখন আর।
ক'দিন ধরে খবরের শিরোনামে স্ক্রল করেছে ছিটমহল, দুদেশের আমলারা খাসমহলে বৈঠক করেছেন দীর্ঘদিন। মিসির আলীর অমিমাংসীত রহস্যের মতো এটি ভেস্তে গেছে বারংবার।সবশেষ কনক্লুশন, ফারাক্কা ইস্যু পেনডিং, ছিটমহল এন্ডিং।

খবরে-পত্রিকায় যা প্রকাশিত, তার ধুন্দুমার ফিরিস্তি দেয়ার চেয়ে বরং অন্যপথে যাওয়াই শ্রেয়; যে পথে পথকাঁটা শুকনো ডালে ফুটিয়েছে অনাঘ্রাত হলুদ ফুল, যে পথে হাঁটেনি পথিক বহুকাল। আজ লোকালয়ে উম্মুক্ত সে পথ যেনো মৃদুঘায়ে চলা কোনো বয়সীবনিতার আক্ষেপ; কতদিন হাঁটা হয়নি ইস-স।

দুরন্ত কিশোর বন্দি ছিলো ছিটমহলে। ছিলো ছিটের ভিতরে ছিট(একটু বিশদভাবে বলি, বাংলাদেশের ভিতরে ইন্ডিয়ার ভূখন্ডকে 'ছিট' বলে।তদ্রুপ ইন্ডিয়ার ভিতরে বাংলাদেশের অংশকে 'ছিট' বলে।এই ছিটমহলের ভিতরেই আবার যখন বিপরীত ঘটে, মানে অভ্যন্তরে যখন সে দেশের অংশ পড়ে সেটাকে বলে ছিটের ভিতর ছিট।)। এ যেনো জলবেষ্টিত কোনো দ্বীপ, সেই দ্বীপের মধ্যে দীঘি। সেই জলদীঘির সীমানা ঘোঁচানো হয়নি বহুকাল। আজ এতদিনে আমমহলের চাওয়াপাওয়ার বাধ ভেঙেছে খাসমহলের সিদ্ধান্তে, ছিটমহল চুক্তির বাস্তবায়নের মাধ্যমে।

তিন বিঘা করিডোরটি রয়ে গেছে সেভাবেই।রয়েছে দহগ্রাম ছিটমহলটি। ঠিক যেমনটি রেখেছিলেন মুজিব-ইন্দিরা। চব্বিশ ঘন্টা করিডোর সুবিধা যুক্ত হয়েছে তাতে।সেই করিডোর ধরেই চলে নিয়মিত চলাচল।চলে এম্বুলেন্স, চলে ফায়ার ব্রিগেড।চলে সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে সুবিধাভোগীদের বিস্তর কৌশল!

একপাশে কাটাতারের বেড়া দিয়ে মোড়ানো নিছিদ্র ইন্ডিয়া,নিরাপত্তার নির্মল প্রলোভন। আরেক পাশে নগ্নবক্ষ উম্মুক্ত বাংলা।বুক উজার করে কাছে ডাকে আয়। বিভাজনের এই ক্ষনে, যে যেদিকে খুশি বেছে নিতে পারে মাতৃভূমি।চিনে নিতে পারে স্বীয় মায়ের আঁচল, গুছিয়ে নিতে পারে ঘর।

এতদিনের বন্দীত্বমোচনের প্রাক্কালে উচ্ছ্বসিত হল ছিটমহলবাসী; কেমন উচ্ছ্বাস?
আমি হয়তো এক ঝলক সেদিন দেখেছি সেটা।উপজাতিদের নিয়ে পার্বত্য চুক্তির শোভাযাত্রা সে যাত্রায় না দেখলেও এখানে দেখেছি; এ যেনো অনেকটা স্বস্তির দীর্ঘশ্বাস।শৈশবে নিপীড়ীত কোন বৃদ্ধার চোখের ছানিতে খচখচ করে ওঠে সেই দিনগুলো। বিডিআর বিএসএফ-এর সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমণের সব দায় যেন তাদের'ই।গুলিতে ছিন্ন লাশও পায়নি কোনোদিন নাগরিক সমমান(সম্মান তো অনেক দুর!) ।

যে 111টি ছিটমহল বাংলাদেশ পেল অথবা 51টি হাতছাড়া হল, তার বেশিরভাগই লালমনিরহাট জেলায়।বিস্তৃত সীমানার কাঁটাতার কেড়ে নিয়েছে ছিটমহলবাসীদের নাগরিক অধিকার কিংবা আনুগত্যের বিনিময়ে অনুমিত রাজনৈতিক সুযোগগুলো।ইলেকশনের মৌসুম এদের আসেনা তেমন,যেমন আসে সীমানালঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তের উপর লঘুপাপে গুরুদন্ড আরোপ; বন্যা খরায় আসেনা তেমন ত্রান, যেমন আসে হুহু করে উথালপাথাল বান।

যাক সেসব কথা। সুখের দিনে যেমন দূঃখের দিনগুলোকেই মনে পড়ে ঘুরে ফিরে, ছিটমহলবাসীও আজ সেই-সে-মতন। একটু সময় তারা নিক; আজ সকালে তারা রাতভোরে দেখা স্বপ্ন দেখুক বা না দেখুক, নষ্টালজিয়ায় ডুবে যাবে সাতসকালেই। সোনামাখা রোদ ছুঁয়ে তারা মিশে যাবে আমজনতায়। মিশে যাবে জীবন-জীবিকার অন্বেষনে দেশ-দেশান্তর।

চিরচেনা দেশের মাটিতে বৈধতার বিশ্বাস ভর করুক তাদের দেহমনে। উম্মুক্ত আলয়ের সাথে যুক্ত হোক মুক্ত ছিটমহলগুলো।মুক্ত হোক জনবল, যুক্ত হোক শক্তি। এই আমাদের চাওয়া।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:০১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×