অতীতে তাদের মাঝে প্রেম ছিলো । সেটা তাদের গ্রামের কথা । তখন সদ্য কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের পথে পা দিচ্ছে ওরা । সেসময় একবার প্রজাপতির মত উড়তে উড়তে এই জনপদে এসেছিলো ওরা ।
এই ধানগাছ,নদী,বড় টাওয়ার,আমের বাগান আর বিশাল বপু দালানটা দেখেছিলো।সেই একদিনই মাত্র আসা।
তাদের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে অনেকদিন ।
বিলাসের নতুন প্রেম হয়েছে নতুন শহরে ।
বিলাস জানে না,জানতে চেষ্টা করে নি সুমিরও নতুন কিছু হয়েছে কিনা।
এখন মাঝে মাঝে প্রেমিকার সাথে ঝগড়া,মন কষাকষি আর লেনদেনের হিসেব চলে।প্রেমিকা শাস্তিস্বরূপ কয়েকদিনের জন্য যোগাযোগ বন্ধ রাখে ।
এই সময়টা ফাঁকা ফাঁকা মনে হয় বিলাসের।
এই রকম দিনেই মাঝে মাঝে বিলাস নিজেকে নিয়ে হারিয়ে যায়।
সেদিনও এমনই একাকীত্বের দিন।
বিলাস আপনমনে ঘুরতে ঘুরতে চলে যায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে । তার সামনে পড়ে ধানগাছ,বিল,টাওয়ার,হাঁসেদের জলকেলি,লাল শাপলা আর মাটিগন্ধ বাতাস।
অন্য কোথাও যেন চলে যায় সে - নিজের ভেতর - অথবা নিজের স্বপ্নের ভেতর।
মনে পড়ে কৈশোরের দুরন্তপনা,অনর্থক হাসি,দুষ্টুমি এবং একেবারে দেনা-পাওনার হিসেব ছাড়া একটা জীবন।
নির্ভার এবং মধুর।
ভেতরটা কেমন হু হু করে ওঠে বিলাসের।
এই নগর - এই বিষ - এই প্রেম - এই বিষাদ - এই হিসাব সব ছেড়েছুড়ে মন যেতে চায় সেই গ্রামে - যেখানে গেলে সুমির গন্ধ পাওয়া যাবে - পাওয়া যাবে অনেক বন্ধু ও স্বজন - পেয়ারা গাছ - কচুরীপানা - নারিকেল - বাঁশের সাঁকো আর রাতের জোনাকী।
না এই শহরে আর না।
বিলাস একটা সি এন জি তে করে বাসস্ট্যান্ডের সামনে এসে দাঁড়ায় ।টিকিট কাটতে যাবে এমন সময় একটা ফোন আসে ।তার চাকরীটা হয়ে গেছে । আগামীকাল জয়েন করতে হবে।
বিলাসের চোখে গ্রাম । সামনে টিকিট কাউন্টার । সে দুই পা এগোয়। ওর সামনে ভাসে একজন বেকার তরুনের এলোমেলো ছবি।আর একটা গনগনে পিচঢালা রাস্তা । চোখদুটো ভিজে ওঠে বোধহয়। বিলাস মুছে ফেলে উলটো দিকে পা বাড়ায়।
ডিঙ্গি নৌকা,ধানক্ষেত,স্বপ্ন,সবুজ পিছিয়ে পড়তে থাকে ক্রমাগত ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





