এটি একটি বিলম্বিত পোস্ট। গতকালকের উপলক্ষে আজ লিখছি। আমার জানামতে, নিচের গল্পটি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম রূপকথা।
আজ থেকে বহু বছর আগে, কোন এক কলেজের এক তরুণ শিক্ষক এক্সাম হলে ডিউটি দিচ্ছিলেন। হঠা দেখলেন, এক পরীক্ষার্থীনী লেখা বন্ধ করে বসে আছে। কৌতুহলী শিক্ষক জানতে চাইলেন, "কী ব্যাপার, তুমি কিছু লিখছো না কেন?"
"দেখছেনই তো স্যার, কলমের কালি শেষ। কী করে লিখব?"
"তুমি চাইলে আমার কলমটা নিতে পার। তবে পরীক্ষা শেষে আবার ফেরত দিয়ে যেতে হবে।"
"আপনার কলম অযথা রেখে দেওয়ার কোন কারণ আছে? এখন আপাতত দেন। লিখে নিই। পরীক্ষা শেষে পেয়ে যাবেন।" সাহসিনী শিক্ষার্থীর নির্বিকার জবাব।
তরুণ শিক্ষকটি ছাত্রীর এহেন উত্তরের ধরণে খানিকটা আশ্চর্য হলেন। কলমটা দিয়ে দিলেন। পরীক্ষা শেষে ফেরতও পেলেন। দুজনই সময়োচিত গাম্ভীর্য বজায় রেখে কলম আদানপ্রদান সারলেন।
কিন্তু খাতা দেখার সময়ে সেই বিশেষ এবং আপাত-উদ্ধত ছাত্রীটির খাতা সনাক্ত করতে তার এক সেকেন্ডও সময় লাগল না। আর তাই দেখে বিধাতাপুরুষ মুচকি হাসলেন। কারণ এই আপাত গম্ভীর তরুণ এবং এই শিক্ষার্থিনীর জীবনের স্ক্রিপ্ট যে তারই লেখা!
পুরো কলেজে মুডি বলে পরিচিত মেয়েদের প্রতি উদাসীন সেই মাস্টারমশাই ওই অদ্ভুত মেয়েটিকে ভুলতে পারলেন না। মেয়েটি একটু বেশিই অন্যরকম। সাজগোছের বালাই নেই। মনোযোগ আকর্ষণের কোন চেষ্টা নেই। নিজের চেহারাকে সুন্দর করে তোলার কোন বাড়তি প্রয়াস নেই। বাইরে বের হওয়ার আগে মনোযোগ দিয়ে আয়নাটা দেখে কীনা সন্দেহ! এমনও অদ্ভূত মেয়ে হয় পৃথিবীতে!
আর ঠিক এই কারণেই এই অনন্য মেয়েটিকে ভোলা তার পক্ষে সম্ভব হল না।
বাকিটা ছিল শুধু সময়ের ব্যাপার। স্ক্রীপ্ট এগিয়ে চলল। আর দশটা রুপকথার শেষে যেমনটা হয়, তেমনটাই হল।
ধুমধাম করে দুজনের বিয়ে হল।
অর্থে নয়, বিত্তে নয়, কিন্তু ভালবাসার সাম্রাজ্যে তারা রাজা এবং রাণী। তাদের কোল্ আলো করে আসার কথা ছিল এক ফুটফুটে রাজকন্যার। তার বদলে এল একটি বিশুদ্ধ বাঁদর।
রাজা আর রাণী ভালবেসে সেই বাঁদরের নাম রাখলেন সুস্মিতা শ্যামা।
গতকাল রাজা-রাণীর বিবাহবার্ষিকী ছিল। রাণীমাকে মা দিবসের শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৪২