somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সীমান্ত প্রধান
যতবার মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেছি, ততবারই পুরুষ হয়ে উঠি। তুই শালা একটা ‌‘পুরুষ’ শব্দটি সম্ভবত পৃথিবীর নিকৃষ্ট একটা গালিতে রূপান্তরিত হবে। পুরুষ হিসেবে গর্ব করার কিছু নেই, আমি লজ্জিত, সত্যি লজ্জিত যে আজও মানুষ হতে পারিনি।

নারী দিবস ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

০৮ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ নারী দিবস। বিশ্বে বেশ ঘটা করেই এই ৮ মার্চ নারী দিবসটি পালন করা হয়। এ দিবসটিতে অনেক নারী নেত্রীই বেশ ঘটা করে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। দেশের অনেক বড় বড় নেতারাও কথা বলে থাকেন এ দিবসটি উপলক্ষে। বলা হয়ে থাকে এসব দিবস নাকি নারীকে সম্মানিত করেছে। এখান থেকেই নারীকে সচেতন হওয়া আহ্বান করা হয়! জাগতে আহ্বান করা হয়! ব্যাপারটা আমার কাছে অনেকটা এমন, বাতির নিচে অন্ধকার যেমন।

আচ্ছা আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দিন তো, সত্যিই কি নারীদের জন্যে এই দিবসটির কোন দরকার আছে? পুরো বিশ্ব এ দিবসটি প্রতি বছরই ঘটা করে উদযাপন করে। একবারও কি মনে হয় না, নারী দিবস দিয়ে নারীকে সম্মান নয়, অসম্মানই করা হচ্ছে?

কেন না নারীকে এই দিবসের মাধ্যমে দুর্বলই ভাবা হচ্ছে। যা সম্মানের নামে লিঙ্গ বৈষম্যের স্পষ্টত ইংগিত দিচ্ছে এই নারী দিবস। যদি মনে করেন অসম্মান নয়, সম্মানই জানানো হচ্ছে তাহলে আমাকে বলবেন, আলাদা করে একটি দিন নারীকে ঘটা করে কেন এই সম্মান দেয়া হচ্ছে? তাহলে কি পুরুষ অপেক্ষায় নারী দুর্বল? পুরুষের দয়াতেই কি নারীকে বেঁচে থাকতে হয়?

যদি এমন ভেবে থাকেন, তবে ভুল। নারী হচ্ছে এ পৃথিবীতে সব থেকে ধৈর্যশীল, ও শক্তিশালী। যার প্রমাণ ফরাসি নাট্যকার ও বিপ্লবী নারী ওলিম্পে দ্যা গগ্স। যিনি ১৭৯১ সালে ‘নারী অধিকার এবং মহিলা নাগরিকদের ঘোষণা’ প্রকাশ করেন।

তিনি ওই ঘোষণাতে বিশ্বব্যাপী নারীদের জেগে উঠার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘নারী জেগে উঠো; গোটা বিশ্বে যুক্তির সঙ্কেত ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে। তোমার অধিকারকে আবিষ্কার করো। প্রকৃতির শক্তিশালী সাম্রাজ্য এবং পক্ষপাত, গোঁড়ামি, কুসংস্কার ও মিথ্যা দিয়ে অবরুদ্ধ নয়। সত্যের শিখা পাপ ও অন্যায় দখলের মেঘকে দূর করে দিয়েছে।'

নারী আন্দোলন, পুরুষতান্ত্রিক তথা পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ভেঙে বৈষম্যহীন একটা সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন ওলিম্পে। তার আহ্বানে বিশ্বের নারী সমাজও জেগে উঠেছিলো। যা মেনে নিতে পারেনি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। যার ফলে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হয়েছিল তাকে।

১৭৯৩ সালে এই নারী আন্দোলনের সাহসী মানুষটিকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে ফ্রান্স। যা ছিল নিষ্ঠুর ও অত্যন্ত বর্বর একটি অধ্যায়। তবে অসীম সাহসী ওলিম্পে ফাঁসির কাষ্ঠে যাওয়ার আগে দুরন্ত সাহস নিয়ে বলেছিলেন, ‘নারীর যদি ফাঁসি কাষ্ঠে যাবার অধিকার থাকে, তবে পার্লামেন্টে যাবার অধিকার থাকবে না কেন’?

এখন আপনিই বলুন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যদি নারী ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে পারে, নারী যদি নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পুরো বিশ্বের সাথে লড়াই করতে পারে, তাহলে সে নারীর জন্য আলাদা করে নারী দিবসের সত্যিই কি কোন দরকার আছে? একবারও কি মনে হয় না, নারী দিবসের মাধ্যমে নারীকে মানুষ নয়, নারী হতেই শিক্ষা দিচ্ছে?

নারীদের জন্য আলাদা করে আবার একটি দিনের কি দরকার? আজকের নারীরা এখন আর চার-দেয়ালে বন্দী নয়। তারা কোথায় কোথায় পৌঁছে যাচ্ছেন প্রতিদিন। সে স্বতন্ত্র, স্বাধীন। আজকের নারী জানে সে কি চায়। কোথায় তাকে কি করতে হবে? কোথায় কি বলতে হবে? সে ঘর-বর-অফিস এক হাতেই সামলাচ্ছে। যা এক পুরুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৫৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×