somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সীমান্ত প্রধান
যতবার মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেছি, ততবারই পুরুষ হয়ে উঠি। তুই শালা একটা ‌‘পুরুষ’ শব্দটি সম্ভবত পৃথিবীর নিকৃষ্ট একটা গালিতে রূপান্তরিত হবে। পুরুষ হিসেবে গর্ব করার কিছু নেই, আমি লজ্জিত, সত্যি লজ্জিত যে আজও মানুষ হতে পারিনি।

প্রসঙ্গ : স্কুল পড়ুয়াদের প্রেম

১৩ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রেমে পড়ার নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। নেই কোন বয়স বা জাত-পাত। কখন কে, কার প্রেমে পড়বেন? তা নিজেও জানে না। প্রেমটা হুট-হাট করেই হয়ে যায়। তবে শত চেষ্টা করেও প্রেম করা যায় না। সুতরাং মনের উপরই শতভাগ নির্ভর প্রেম। আর তা টিকে থাকে বিশ্বাসের উপর।

প্রেমে আমার সমর্থন শতভাগ। প্রেম সার্বজনীন। প্রেমকে আমি সব সময় সমর্থন করি। আর আমিও প্রেমিক। এক হোক আর একাধিক, প্রেম আমি করেছি। তবে প্রসঙ্গটা হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও।

ওই ভিডিওটিতে স্কুলের একটি ছেলে একই স্কুলের একটি মেয়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ ঘটিয়ে প্রকাশ্যে তাকে জড়িয়ে ধরে। এ নিয়ে নাকি স্কুল কর্তৃপক্ষও খেপেছেন। আবার তাদের পক্ষে অনেকে লিখছেন। অনেক পোষ্ট আমার দৃষ্টিতেও পড়েছে। আমি কোন মন্তব্য করিনি। কি মন্তব্য করব? ভেবে পাচ্ছিলাম না।

তবে এটুকু বুঝতে পারলাম, ভাইরাল হওয়া ওই জুটির প্রেমে আমার সমর্থন নেই। তবে তাদের পক্ষে যারা দু'কলম লিখছেন, তারা কি জেনে বুঝে লিখছেন, নাকি অতি উৎসাহী হয়ে লিখছেন?

আমরা হুজুগে বাঙাল। কেউ একবার একটি টপিক পেলে সেটা নিয়ে প্রায় সবাই লিখতে শুরু করি। ভেবে দেখিনা তার গভীরতা। ভেবে দেখিনা এটি ইতিবাচক না নেতিবাচক?

আমরা যারা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করি তারা কি করে ওই ভিডিওটির পক্ষে মত প্রকাশ করি! এ নিয়ে আমাকে খুব ভাবাচ্ছে। আমরা সুন্দর, স্বচ্ছ, বৈষম্যহীন একটা সমাজ কামনা করি। আর তাই তো জীবনের ঝুঁকি নিয়েও সে যুদ্ধে সামিল হয়ে লিখে যাচ্ছি। একবারও কি ভেবে দেখেছেন এটা উচিৎ না অনুচিত?

এখন অনেকেই বলবেন, এ দেশে প্রকাশে অনেক অনৈতিক কাজ হচ্ছে, তা দোষ নয়, প্রকাশে প্রেম করলেই দোষ? না। দোষ নয়। তবে তাদের জন্য জন্য দোষ। কেন না, তারা এখনও স্কুলের গণ্ডি পেরোয়নি। এখনও তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি। তাই তাদের এ ঘটনাটিকে সমর্থন করা মানে অন্যান্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরকেও উৎসাহিত করা হবে। আমরা কি সেটা করতে পারি? অথবা স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদেরকে কি প্রেম উৎসাহী করা আমাদের উচিৎ?

এ বয়সে ছেলে-মেয়েদের জীবন গড়ার বয়স। অথচ তা না করে তারা যদি প্রেমে মনোনিবেশ করে, তাহলে তারা কি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবে? ছেলে-মেয়েদের নিয়ে প্রতিটি বাবা মায়েরই অনেক আশা থাকে। আকাঙ্ক্ষা থাকে। থাকে ছোট-বড় কিছু স্বপ্ন। কিন্তু এহেন কাণ্ডে যদি তা ভেস্তে যায়, তবে?

ভাবছেন, তাই বলে বাবা-মা যে কাউকে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিবে আমরা তাকে মেনে নেব? না। তা মেনে নিবেন কি নিবেন না সে আপনর একান্ত। জীবন আপনার, সিদ্ধান্তও আপনার। তবে সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দিষ্ট একটা সময় আছে। তা হলো প্রাপ্তবয়স্ক। আপনি যখন অপ্রাপ্তবয়স্ক, তখন যে কোন সিদ্ধান্ত আপনি নিতে পারেন না। তখন বাবা-মায়ের উপর তা ছেড়ে দিতে হয়। তখন বাবা-মা-ই ঠিক করবে তার ছেলে-মেয়ের ভালো কিসে আর মন্দ কিসে?

তা যা বলছিলাম, স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা এমনিতেই একটু বেশি আবেগী হয়। তারা আবেগটাকে কন্ট্রোল করতে পারে না। আর তখনই ঘটে নানা বিপত্তি।

এক্ষেত্রে আমার দেখা সত্যি একটি ঘটনা বলি, জুনায়েদ (ছদ্ম) ও তৃণ (ছদ্ম) সবেমাত্র নিউ টেনে উঠেছে। একই পাড়াতে থাকে। তাদের দু'জনের প্রেম অষ্টম শ্রেণী থেকে। ব্যাপারটা যখন বুঝতে পারে মেয়ের বাবা, তখন মেয়েকে চোখে চোখেই রাখা শুরু করেন।

একদিন জুনায়েদ তৃণর সাথে দেখা করতে তাদের বাড়ির কাছে আসে। আর তখন মেয়েটির আত্মীয় স্বজন তাদের দুজনকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ছেলেটিকে মারধর করে। এরপর ছেলেটি বাসায় ফিরে এলে ঘটনাটি জানার পর তার পরিবারও তাকে গালাগাল করে। এক পর্যায় রাতে ছেলেটি সবার অলক্ষ্যে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে।

ছেলেটি মারা গেছে শুনে মেয়েটিও নিজেকে শেষ করার জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু তাকে পাহারা দিয়ে রাখা হয়। কিন্তু এতে কোন ফল হয়নি। ছেলেটির কুলখানি (৪দিন)-এর মাথায় মেয়েটিও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। একবার ভেবে দেখুন তো, এরা যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হত, তাহলে কি এমন সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারত?

সে যা হোক। মত যেহেতু আছে দ্বিমত থাকবেই। তবে ভালো যা, তাতে দ্বিমত পোষণ না করাই ভালো। তবে তাদের প্রেমে আমি অসন্তুষ্ট নই। আমার আপত্তিটা শুধু ওই ঘটনাটির ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দেয়াতে। আর এতে করে কি অন্যান্য স্কুল পড়ুয়াদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে না?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×