somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমস্যার রূপরেখা

১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিভিন্ন দেশে, রাস্তার পাশে, গান গেয়ে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। ওরা গান গেয়ে, মানুষকে একটু বিনোদন দিয়ে টাকা নিতে চায়। এদের বেশিরভাগই প্রতিভাবান, কিন্তু রাস্তায় পড়ে রয়েছে। ইন্দোনেশিয়াতে এমন প্রতিভাবান শিল্পী অনেক বেশী। এসব শিল্পীদের সাথে বাদ্যযন্ত্র থাকে। রাস্তায় তো আছেই, সেই সাথে বাসে ও রেস্টুরেন্টে এদের দেখা যায়। আপনি রেস্টুরেন্টে খাবার খাচ্ছেন, হটাত দুজন লোক এসে আপনার পাশে গান গাওয়া শুরু করলো। গান পছন্দ হোক বা না হোক, ওদের চেষ্টা দেখে আপনি কিছু দান করলেন। এমন গায়কেরা মাঝপথে কোন বাসে উঠে, গান শুনিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে কিছু টাকা-পয়সা সংগ্রহ করে, পরের স্টপেজে নেমে যায়। এখানেই শেষ নয়, অনেক গায়ক তো মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে, গেটের সামনে দাড়িয়ে গান শুনিয়ে, টাকা-পয়সা সংগ্রহ করে।

আমার স্ত্রী ইন্দোনেশিয়ান, একটি মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানিতে মার্কেটিং ম্যানেজার। সেই কোম্পানির বানানো উচ্চমূল্যের সফটওয়্যার বিপণন ও প্রচার করাটা তার কাজ। সেই কাজের অংশ হিসাবে, তাকে মাঝে মাঝে, সদলবলে সম্ভাব্য ক্রেতাদের অফিসে গিয়ে, তাদেরকে সেই সফটওয়্যারের গুণাগুণ, কার্যকারীতা, ইত্যাদি বিষয় বুঝিয়ে আসতে হয়। একই গল্প বিভিন্ন অফিসে গিয়ে, বারবার বলতে হয়। আমার স্ত্রী, এই কাজটিকে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে গান গাওয়ার সাথে তুলনা করে।

ওদিকে আরেক মেরুতে, আমি। দেড় বছর আগে, আমার একটি বড় অপারেশন হযেছিল। বাচার আশা খুব কম ছিল। আল্লাহর বিশেষ রহমতে বেচে আছি। এখন থেকে ছয় মাস আগে, আমার স্ত্রীর খুব ছোট একটি অপারেশন হযেছিল। আমার স্ত্রীকে দুই দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। হাসপাতালে রোগীর পাশে, দিনে আমার শাশুড়ি ছিলেন, আর আমি রাত জেগে বসে থেকেছি। অবস্থাটা একবার চিন্তা করুন। আগের বছর আমি নিজে ছিলাম মরণাপন্ন রোগী। এ বছর আমার স্ত্রী রোগী। ছোট অপারেশন হলেও, হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। আমি রাত জেগে তার পাশে বসে রয়েছি - কে জানে কখন কোন জরুরী দরকার হয়।

এমন অবস্থায় , আমি হায়-হায় করতে পারতাম। নিজেকে অভাগা মনে করতে পারতাম। কিন্তু সেগুলো করিনি। আমি উতসব করেছি। পছন্দসই খাবার অর্ডার দিয়েছি, ল্যপটপ খুলে কাজ করছি, কানে হেডফোনে গান বাজছে। মাঝে মাঝে একটু দুরে গিয়ে অন্য দেশের ক্লায়েন্টদের (যে দেশে তখন দিন) সাথে ফোনে কথা বলছি। আমার রাতকে আমি কর্মব্যস্ত ও উত্সব মুখর করে তুলেছি। এটা আমার নিজের জন্য যেমন ভালো, রোগীর জন্য আরো বেশী ভালো। রোগী মানসিক জোর পায় ও আল্লাহর রহমতে দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।

বিষয়টা সবই আপনার ইচ্ছের উপর। আপনি ইচ্ছে করলে মিলিয়ন ডলার সফটওয়্যারের প্রচারকে, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভিক্ষার মতন মনে করতে পারেন। আপনি ইচ্ছে করলে, হাসপাতালে অসুস্থ রোগীর পাশে রাতভর বসে থাকাকে, উতসব বানাতে পারেন। আপনার মুল সমস্যাটার চেয়েও আরো বড় সমস্যা হল - আপনার অস্থিরতা ও কার্যকলাপ। আপনার সুখ যেমন চীরদিন থাকেনি, সমস্যাটাও চীরদিন থাকবে না। আল্লাহর উপর ভরশা রাখুন, ধৈর্য ধারণ করুন। শান্তভাবে সমাধানের চেষ্টা করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×