সাকিব বলেছিল যে সে আকরামের মৌখিক অনুমতি নিয়ে দেশের বাইরে ক্লাবে খেলতে গিয়েছে। যার ফলে তাকে এখন শাস্তির সম্মুক্ষিন হতে হচ্ছে।
ঠিক আছে সে ভুল করেছে। কিন্তু আমি মনে করি শাস্তিটা আগে আকরামকে দেয়া উচিৎ। সে কিভাবে বিশ্ব সেরা এই অলরাউন্ডার এবং বাংলাদেশের জাতীয় দলের একজন খেলোয়াড়কে নিজের মনমতো অনুমতি দিয়ে দিল? আকরাম কি মৌখিক ভাবে কাউকে এভাবে অনুমতি দিতে পারে?
সাকিব ভুল করতে পারে। কিন্তু আকরাম তো তাকে বলতে পারতো যে সাকিবের লিখিত অনুমতি নেয়া উচিৎ , লিখিত অনুমতি না নিয়ে দেশের বাইরের ক্লাবে খেলতে যাওয়া উচিৎ নয়। কিন্তু আকরাম কি সেই উপদেশ দিয়েছিল? আমার মনে হয় দেয়নি। আসলে শাস্তি যদি দিতে হয় তাহলে আগে আকরামকেই দেওয়া উচিৎ।
অনেকেই বলছেন যে, বর্তমান কমিটি ক্রিকেটের কোন উন্নতি করে নাই। তাদের সাকিবের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ তোলা উচিৎ নয়। ব্লা ব্লা। একটা বোর্ড চালাতে হলে এসব দিক মাথায় রাখা লাগে। কেউ নিয়মের উর্ধ্বে নয়। নিয়ম না মেনে কেউ কোন ধরনের কাজ করলে তার শাস্তি পাওয়া উচিৎ।
বোর্ডের কর্মকর্তাদেরও বলিহারি কি দায়িত্বজ্ঞান। জাতীয় দলের বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার কোথায় কি করছে তার খবরই তাদের কাছে নাই। আমার তো মনে হয় খেলোয়াড়দের সাথে সুসম্পর্কও নাই। দেশের বাইরে বড় একটা টুর্নামেন্ট হচ্ছে তাতে বাংলাদেশের কোন খেলোয়াড় খেলার সুযোগ পাচ্ছে কি পাচ্ছে না খেলছে কি খেলছে না তাও তারা জানে না। দেশ ছেড়ে বাইরে চলে গেল, বিমানবন্দর দিয়ে যেয়ে বিমানে উঠল, আর কোন কর্মকর্তা সেটা জানলো না? অদ্ভুৎ !! তারা কি সারাদিন নাকে তেল দিয়ে ঘুমায় নাকে রাত জেগে ফুটবল খেলা দেখতে দেখতে নিজের দায়িত্ব কর্তব্য ও ভুলে বসে আছে?
সাকিবের অতীত ইতিহাসও ভালো নয়। বেয়াদবী, গোঁয়ারতুমী আর অভদ্রতা ওর অস্থিমজ্জার মধ্যে মিশে আছে। ধরা কে কি সে সরা জ্ঞান করছে? অতীতে তার অভদ্র আচরণ আর গ্রুপিং এর জন্য তার ক্যাপ্টেনসী কেড়ে নেয়া হয়েছিল। কয়েকদিন আগে ক্যামেরার সামনে বাজে অঙ্গীভঙ্গী করেছে। মানুষদেরকে মারধর করেছে। সে কি গুন্ডা? বিশ্বসেরা হওয়ার পর ধরা কে সরা জ্ঞান করলে সমস্যা। বিশ্ব কাপানো অনেক খেলোয়াড় তাদের ব্যবহার আর অভ্যাসের কারণে ধংস্ব হয়ে গেছে। পাকিস্তানের শোয়েবের কথা তার স্মরণ রাখা উচিৎ। তোমার উপরের সিড়িতে উঠার পিছনে বোর্ডের ভুমিকা আছে। সাধারণ জনগনও তো তোমাকে পছন্দ করে, গর্ব
করে । এসব ভুলে গেলে চলবে না। সত্যি কথা হচ্ছে মেধাবী আর ভালো মানুষের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।
জাতীয় দলে আর না খেলার যে হুমকি সে দিয়েছে সে এখন যতই অস্বীকার করুক আমার ধারণা যেখানে ধোয়া উঠে সেখানে আগুনের সামান্য ফুলকি আছেই। যদি সে সত্যি এই ধরণের কথা বলে থাকে তাহলে বুঝতে হবে তার মধ্যে দেশপ্রেমের অভাব আছে।
সাকিব, তোমার যদি ঠেকা পড়ে তাহলে বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রমাণ করে দিও যে তোমার মধ্যে আসলেই দেশপ্রেম আছে।
ক্রিকেটের ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের মালিক হিসেবে দেশের নামই থাকা উচিৎ। কোন দেশের কোন ক্লাব অন্য দেশের খেলোয়াড়দেরকে খেলাতে চাইলে যেন সেই খেলোয়াড়ের দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি বা ছাড়পত্র নিয়ে তারপর খেলায়। তবে কেউ যদি কোন দেশের জাতীয় দল থেকে ইস্তেফা দেয় তাহলে ভিন্ন কথা। বিশ্বে কয়েকজন এমন ক্রিকেটার আছে যারা শুধু বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ক্লাব দলগুলোর হয়ে খেলে টাকা উপার্জনের জন্য। তারাতো স্বাধীন । কেউ চাইলে সেরকম ই হোক।
সর্বশেষে আরেকটা কথা আরেকবার না বলে পারছি না। যখন শুনলাম সাকিব হুমকি দিল যে সে দেশের হয়ে জাতীয় দলের হয়ে আর খেলবে না , তখন মনে হলো সাকিব যেন দেশাত্মবোধের গালে চপেটাঘাত করার চেষ্টা করছে। এই কথা সত্য প্রমাণ হলে সাকিব ক্ষমা চাইলেও তার ফ্যানরা তাকে ক্ষমা করবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:১২