somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুক্রবারে জু’মার নামাজে মসজিদে গিয়ে কী কী বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জুমার নামাজে অনেকেই মসজিদে যান শেষের দিকে। বসার জায়গা পান না। জামাত শুরুর আগে পর্যন্ত অনেকে পিছনে দাঁড়িয়ে থাকেন। অনেকে মুসল্লিদের গায়ে ঠেলা দিয়ে সামনে যান। কারো কারো গায়ে লাথি লাগে। হাতে জুতো। জুতোর পানি টপ টপ করে পড়ে মুসল্লিদের গায়ে, মসজিদের মেঝেতে। এ রকম নানা অসঙ্গতি। কী করা উচিত ?
১। মসজিদে আগে গেলে সামনে যে কাতার ফাঁকা থাকবে সেখানে বসা ভালো। সামনে বসতে ইচ্ছে না করলে পিছনেই বসুন, কিন্তু যখন আপনার আশে পাশে অন্য মুসল্লি বসবেন তখন তার গায়ে গা না ঠেকিয়ে যতটা সম্ভব চেপে বসুন।
২। যেখানে বসবেন তার সামনে খুব বেশি জায়গা ফাঁকা রাখবেন না। কারণ ফাঁকা জায়গা দেখলেই সেখানে বসার জন্য পিছন থেকে অনেক বেয়াদব লোক মুসল্লিদের গা ঠেলে ঠেলে সেখানে আপনার একেবারে চোখের সামনে বসে যাবে। তখন আপনার খুব বিরক্ত বোধ হবে।
৩। নিজে এমনভাবে বসতে হবে যেন তেমন কোন ফাঁকা জায়গা না থাকে এবং অন্যকে বসার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।
৪। শেষের দিকে মসজিদে গেলে পিছনের দিকেই সুবিধামত জায়গা খুঁজে নিয়ে বসতে হবে। কোনক্রমেই বসে থাকা মুসল্লিদের ঠেলে তাদের গায়ের উপর দিয়ে সামনে যাওয়া উচিত নয়। কেননা এভাবে গেলে তাদের গায়ে লাথি লাগে এবং যতই স্যরি বলেন ওনি চরম রাগ করেন এবং বিরক্ত বোধ করেন। আর সবচেয়ে যেটা বড় কথা সেটা হলো কাউকে লাথি লাগিয়ে বিরক্ত করে, কষ্ট দিয়ে যে পরিমাণ পাপ করলেন তা জু’আর নামাজ আদায় করে যে নেকি বা পুণ্য লাভ করবেন তা দিয়ে কি শোধ হবে। নেকি আপনার নেকিই থাকবে এবং ওই পাপ আপনার পাপই থাকবে। পুণ্য অর্জন করতে এসে আপনি পাপ নিয়ে ঘরে ফিরলেন। জায়গার অভাবে আপনি যদি নামাজ আদায় নাও করতে পারেন, আর বাসায় ফিরে যদি জহুর নামাজ আদায় করে নেন তবু বোধ করি পাপ হবে না। আর দুনিয়াতে কি জায়গার অভাব পড়েছে, যে আপনার একজন মানুষের নামাজ পড়ার জায়গা হবে না ! কিন্তু অন্যের গায়ের উপর দিয়ে লাথি দিয়ে সামনে গিয়ে আপনি যে পাপ করলেন, তার ক্ষমা পাওয়া অত সহজ কাজ নয়। ওই লোক ক্ষমা না করলে ক্ষমা পাওয়া অনেকটাই অসম্ভব। এবং এই পাপের ক্ষমা পাওয়ার জন্য ওই মানুষটিকে আপনাকে হয়ত একদিন হন্যে হয়ে খুঁজতে হবে, কিন্তু তাকে খুঁজে পাবেন না। এবং এই পাপের ফল আপনাকে ভোগ করতেই হবে। কাজেই সাবধান কাউকে ঠেলা দিয়ে, কষ্ট দিয়ে সামনে বসতে যাবেন না।
৫। কোন কোন মুরব্বি গোঁছের লোক দেখা যায় যত পরেই আসুন না কেউ শত শত মুসল্লিকে ঠেলে ওই সামনে কাতারে যান। এ ধরনের কর্ম চরম বেয়াদবী, মুর্খতা ও পাপ। মসজিদের কোন একবিন্দু জায়গাও কারো বাবার সম্পত্তি নয় বা কারো কেনা সম্পত্তি নয়।
৬। অনেক সময় দেখা যায় সমাজের এলিট শ্রেণির কোন লোক শেষে এসে সামনে যান এবং তাকে দেখে সবাই সরে গিয়ে তাকে জায়গা করে দেন। চরম গর্হিত কাজ। আল্লাহর কাছে ওই এলিটের কোন মর্যাদা নেই। হয়ত বসে থাকা মানুষগুলোর মধ্যে কোন এক মুর্খ মানুষের মূল্য ও সম্মান অনেক বেশি। কাজেই নিজেকে সমাজের অধিপতি ও মর্যাদাবান মনে করে মুসল্লিদের ঠেলে সামনে যাওয়া উচিত নয়।
৭। ফরজ নামাজ শেষ হলে সুন্নাত নামাজ ধরার আগে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনার ঠিক সামনের মুসল্লি পিছনে বা বাইরে যেতে চান কি’না। যদি বুঝতে পারেন যে, আপনি যে দু’রাকাত সুন্নাতের নিয়াত করবেন, তা শেষ হওয়া পর্যন্ত সময় দেরি হলে, ওই মানুষটির কোন সমস্যা হবে না। তবেই সুন্নাত নিয়াত করবেন। কারণ ওই সময় আপনার সুন্নাত পড়ার চেয়ে, ওই লোকটির বাইরে যাওয়া বেশি জরুরী হতে পারে। হয়ত ওনি ট্রেন ধরবেন; অথবা অন্য কোন জরুরত।

৮। বড় বড় মসজিদে নামাজ শেষ হওয়ার পরেই, সিড়িতে খুব ভীঁড় হয়। ভীড়ের মধ্যে না নেমে মিনিট দুই তিনেক অপেক্ষা করুন, দেখবেন ফাঁকা হয়ে গেছে। তারপর নামুন।
৯। নিজের জুতো সেন্ডেল অন্য কোন জুতো সেন্ডেলের উপর রাখবেন না। তাতে আপনার সেন্ডেলের ধুলো-ময়লা তার সেন্ডেলে পড়বে এবং আপনার সেন্ডেলে কোন রোগ জীবাণু বা ক্রিমির ডিম থাকলে তা দ্বারা ওই মুসল্লি সংক্রমিত হতে পারে। নিজের জুতোটিও এমন স্থানে রাখবেন যেখানে অন্য কেউ আপনার জুতোর উপরে জুতো রাখতে না পারে।
১০। জুতো হাত দিয়ে ধরার সময় খেয়াল রাখতে হবে হাতের আঙুল যেন জুতোর তলা স্পর্শ না করে। করলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। মনে রাখবেন জুতোর তলা বহু টয়লেটের নোংরা জায়গাটি স্পর্শ করে এবং সেই টয়লেট বহু মানুষ ব্যবহার করে। নানা ধরনের রোগ জীবাণু, বিশেষ করে ক্রিমির ডিম বিস্তার লাভ করার সুযোগ পায়।
১১। কেউ কোন অসঙ্গতি করলে মাফ করে দেয়া উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৫৮
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×