somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চন্দ্রাবতীর দ্বিতীয় প্রেম

১৩ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চন্দ্রাবতীর হিস্ট্রিক্যাল পেহচান বলতে ওই মৈয়মনসিংহ গীতিকার কিছু বয়েত আর তার নিজের লেখা গোটা দুয়েক পালাগান। এর বাইরে আর কোথাও তার হিস্ট্রি খুব একটা পাওয়া যায় না। তাও খোশ কিসমত যে গত শতকের শুরুর দিকে পশ্চিমবঙ্গের এক অজপাড়া গাঁয়ের কোনো এক গুদাম ঘরে মৈমনসিংহ গীতিকার একটা ধূসর পাণ্ডুলিপির তল্লাশ পাওয়া যায়। সেখানেই চন্দ্রাবতীর নামে একটা পরিচ্ছেদ সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। চন্দ্রাবতীর জীবনের নিদারুণ এক প্রেমকাহিনি বয়ান করা হয়েছে সেখানে। সে প্রেমকাহিনি এতোটাই অন্তরস্পর্শী, তামাম মাখলুকাতের হৃদমাঝার সিক্ত হতে বাধ্য। তবে সমঝদার লোকজন অবশ্য গীতিকার হেকায়েতটাকে বড় একটা পাত্তা দিতে নারাজ। কেন? সেটা অনেক সওয়াল-জওয়াবের হ্যাপা। থাক, ওই সাবজেক্ট আপাতত অফ থাক।

চন্দ্রাবতীর ব্যাপারে বছর কয়েক আগে যখন শুনি তখন কী এক আজনবি কারণে যেন এই পেয়ার কি কাহানি আমার বুকের মাজার শরিফে অল্প দীঘল রিক্তের বেদনা উত্তাল করেছিলো। আজিব বেদনা! তক্কে তক্কে থাকলাম, দেখি হুটহাট কোথাও অধ্যয়নের মতো কিছুর নিশানা পাওয়া যায় কি না। পেলাম না। কিছুদিন আগে চন্দ্রাবতীর প্রেমকাহিনি নিয়ে ব্লগ এবং ফেসবুকে একটা লেখাও লিখলাম। কিছুতেই কিছু হলো না বন্ধু, সব ঝুট সব ঝুট...। শেষে দিল মে একা একাই একটা ফায়সালা করে ফেললাম- কিশোরগঞ্জের নীলগঞ্জেই পদধূলি অর্পণ করবো। যেখানে আজও অক্ষত (?) আছে শ্রীমতি চন্দ্রাবতীর পৈতৃক ভিটা আর তার একান্ত শিবমন্দির। এর মাঝে এর ওর কাছে চন্দ্রাবতীর ব্যাপারে গোপন তল্লাশি চালু রাখলাম।

এই করতে করতে হঠাৎ আবিষ্কার করলাম, চন্দ্রাবতী এবং টুয়েলভ ভূঁইয়ার লিডার ঈসা খাঁ একই সময়কালের বাসিন্দা এবং তাদের বসবাসও ছিলো নিকটবর্তী! ১৫৫০ থেকে নিয়ে ১৬০০ সময়কালে বিস্তৃত হয়েছে দুজনের জীবনের গতিপথ। আমি নড়েচড়ে বসলাম। বিরক্ত হওয়া পাঠককুলের বিরক্তি দ্বিগুন করার মহান উদ্দেশ্য সামনে রেখে এখানে জানাতে চাই, বেশ কয়েক বছর আগে ঈসা খাঁকে নিয়ে আমি বেশ খানিকটা কুতুববিনি করেছিলাম। তাকে কেন্দ্র করে একটা উপন্যাস লেখার বিরাট বন্দোবস্ত আর কি! বলতে লজ্জা লাগলেও, সেই বিশ একুশ বছরের কাঁচা বয়সে ঈসা খাঁকে নিয়ে একটা দরিদ্র উপন্যাসের ৪০-৫০ পৃষ্ঠা কলমবন্দও করে ফেলেছিলাম। বুঝতেই পারছেন- দিল তো বাচ্চা হ্যায় জি, থোড়া কাচ্চা হ্যায় জি...!

সে যাই হোক, দুজন যখন সময়ের একই ফ্রেমে ঠিকানাবন্দি হলো তখন আমার ভেতরের ঔপন্যাসিক ‘প্রতিভা’ (?) আবার খামচে ধরলো সেই পুরনো শকুন। যেভাবেই পারা যায়- একটা কাহিনি ফেঁদে ফেলবো এবার!

মঙ্গলবারে অফিস ছুটি। বাসায় দুপুরের ভাতঘুম দিয়ে বিছানায় আরামদায়ক আড়মোড়া ভাঙছিলাম। এমন সময় হস্তফোনটি ডাক দিলো। অতি দুষ্টু প্রতিভার মিষ্টি বন্ধু তানভীর এনায়েত। কাল অফিস থেকে রাত এগারোটায় বাড়ি গেছে, কিশোরগঞ্জ। সম্ভবত আরেকদিন দেরি করে আসবে, এমন একটা অজুহাতের জন্যই ফোন।
-ভাই, কী অবস্থা?
-কোনো অবস্থা নাই। আমি বিকেলের ট্রেনে কিশোরগঞ্জ আসছি। রেডি থাকেন। লাস্ট ট্রেন কয়টায়?
-মানে? আপনে...? সে কিছুটা টাশকিত!

লাস্ট ট্রেন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায়, এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস। গুণবতী শিল্পক এবং কিশোরগঞ্জ জেলার কয়েকমাত্র কৃতি সন্তান বন্ধু শাকীর এহসানুল্লাহ রিফ্রেশ বাটনের গতিতে ম্যানেজ করলেন টিকেট। চার জিলদ টিকেট। বলাই হয়নি, বিশিষ্ট পর্যটক বন্ধু মহিম মাহফুজকে এরই মধ্যে বগলদাবা করে আমাদের হামসফর করেছি।

শুরু হলো- এ জার্নি টু চন্দ্রাবতী...।

(বাকি অংশ লেখার ইচ্ছে চাগিয়ে উঠছে, কিন্তু সময় যে কখন হবে)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×