কয়েকদিন আগে আব্বা ঢাকা এসেছিলেন তার পেনশনসংক্রান্ত কাজে। আমাকে আগেই বলে রেখেছিলেন, তার জুতো আর ওষুধ কিনতে হবে। ঢাকা আসার পর আমি বললাম, আপনার কাজ শেষ হলে আমাকে ফোন দিয়েন। আমি যাবোনে আপনাকে নিয়ে।
তিনটার পর আব্বাকে নিয়ে গেলাম বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাটা স্টোরে। না, বাটার জুতো আব্বার পছন্দ হলো না। পাশের আরেকটি দোকান থেকে একজোড়া জুতো পছন্দ হলো। আব্বা যেমনটি চাচ্ছেন। দাম ১৫০০ টাকা। দাম দেখে আব্বা একটু গাইগুই করলেন, এই বয়সে এতো দাম দিয়ে জুতো কিনলে তোর আম্মা তো বকবে। আমি বললাম, আমি ম্যানেজ করে নেবো। আমি জোর করেই নিয়ে নিলাম জুতোজোড়া।
জুতো কেনার পর বললাম, চলেন কিছু খেয়ে নেন। কাছেই পিঠাঘরে ভালো বিরিয়ানি-খিচুড়ি পাওয়া যায়। না, উনি বায়না ধরলেন ফাস্টফুড খাবেন। আমি বলি, এখন দুপুরবেলা। আপনার ক্ষুধা লাগছে। ফাস্টফুডে তো পেট ভরবে না। তিনি ফাস্টফুডই খাবেন। নিয়ে গেলাম ফাস্টফুডের দোকানে। কী খাবেন? জিজ্ঞেস করলাম আমি। উনি কাঁচঘেরা শেলফ দেখিয়ে বললেন, বার্গার!
উনি দোকানে বসে আয়েশ করে বার্গার খাচ্ছেন। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাঁর খাওয়া দেখছি। আমার বিয়ের বয়স অল্প, এখনও সন্তান হয়নি। নিজের পিতার খাওয়া দেখে অনুভব করলাম- একজন বাবার সামনে তার সন্তানের তৃপ্তি নিয়ে খাওয়ার দৃশ্য কতোটা হৃদয় শীতল করা অনুভূতির। যেনো প্রথম অনুভব করলাম, কেনো মা-বাবা সন্তানের খাওয়ার সময় আগ্রহ নিয়ে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। হয়তো সন্তানের তৃপ্ত মুখটা দেখার জন্যই।
আই লাভ ইউ বাবা!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:২৮