somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমাজ!!!

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন মানুষ, ধনী কিংবা গরীব, ছোট অথবা বড় হতে পারে কিন্তু অনুভূতি প্রত্যেকের সমান।
আজ যারা অট্টালিকায় বাস করছে কিংবা বিএমডব্লিউতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অপমানবোধ কিংবা খারাপ লাগার অনুভূতি কেবল তাদের জন্যেই নির্দিষ্ট নয়। যারা দু'বেলা ঠিকভাবে খেতে পায় না, যাদের মাথা গোঁজার মত একটা ছাউনি নেই, এই খারাপ লাগার অনুভূতিটা তাদের মাঝেও সমানভাবেই কাজ করে। কারন সৃষ্টির এই শুরু থেকেই প্রত্যেক মানুষের মাঝেই অনুভব করার ক্ষমতা আল্লাহ দিয়ে দিয়েছেন, যার কাছে কেউ ছোট অথবা বড় নয় বরং সবাই সমান। কিন্তু নিজেকে অতিরিক্ত সামাজিকভাবে উপস্থাপন করতে গিয়ে এই সত্যতা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই।
এটা খুবই সহজ, ভিক্ষা চাইতে আসা বৃদ্ধ লোকটাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া অথবা রাস্তার পাশে দেখা কোন টোকাইকে নোংরা বলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়া। হয়ত আপনি এটা করতে পেরে নিজেকে খুব বড় মনে করেছেন কারন নিচু জাতকে আপনি ঘৃণা করেন। আপনি ঘৃনা করেন সেই ছেলেটাকেও যে দু'পয়সা পাবে বলে আপনার দামী গাড়ীটা পরিষ্কার করে দিয়েছিল, অথচ আপনি ভেবেছিলেন ছেলেটার নোংরা হাত আপনার গাড়িটাকে নোংরা করে দিয়েছে! তাই আপনি ছেলেটাকে বকেছেন কারন আপনি ছেলেটাকে নিচু জাতের ভেবেছেন, আপনি ভেবেছেন নিচু জাতের লোকগুলো মানুষ নয়, তারা সমাজের উচ্ছিষ্ট ছাড়া আর কিছু নয় আর তাই তাদের অপমানিত হওয়ার মত মনও নেই। কি অদ্ভুত! এই একই ব্যাপারটা যখন আপনার সাথে ঘটে, যখন একটা সামান্য ভুলে আপনার বস আপনাকে কথা শোনায় তখন আপনার মন খারাপ হয়ে যায়। আপনার খারাপ লাগে কারন আপনি ভিতরে ভিতরে অপমানিতবোধ করেন। তখন 'খারাপ লাগা' কি জিনিস আপনি সেটা বোঝেন কিন্তু তখন বোঝেন না যখন আপনি নিজে অন্যকে ছোট করছেন। আপনি ভুলে যান স্ট্যাটাস দিয়ে কখনই মানুষ যাচাই হয়না, হোক সে উঁচুস্তরের অথবা নিচু কারন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার কাছেও সবাই কিন্তু সমান।
আর কে বলে অসহায়দের সাহায্য করার জন্য অনেক থাকতে হবে আপনার, পাশে দাঁড়ানোর জন্য, একটু ভরসা দেয়ার জন্য কি মানিব্যাগ ভর্তি টাকা থাকতেই হবে? আমি মনে করছি না। রাস্তার পাশের এই অসহায় মানুষগুলোকে একটু হাসি উপহার দিতে পারারটাও সাহায্য কেননা এই হাসিটাও ওরা পায়না। পোলাও মাংস নয়, দুপুরে একবার ডাল-ভাতও চাইলে তাদের খাওয়ানো যেতে পারে কিন্তু আমরা পারিনা। কারন বহু যুগ ধরে চলে আসা যে সমাজের নিয়মে আমরা আবদ্ধ হয়ে আছি, সেই নিয়ম আমাদের বলে রাস্তার পাশে বেড়ে উঠা ছেলেটাকে পাশে বসিয়ে রাস্তার পাশের হোটেলটাতে খাওয়াটা লজ্জাজনক। এই চক্ষুলজ্জার জন্যে আমরা মানুষ হতে চেয়েও পারিনা। আমরা নিজেদেরকে বোঝাই আমরা সমাজের অংশ, আমরা সামাজিক অথচ নিজেকে সামাজিক বলতে বলতে কখন যে মনুষ্যত্ব থেকেই ছিটকে আসি, নিজেরাই বলতে পারিনা। অথচ আমরা চাইলেই পারি, এর জন্য প্রয়োজন তো বেশি কিছু নয়, কেবল একটু সাহস আর শুরু করার মানসিকতা। যেই সমাজে আমরা এখন বসবাস করছি, সেই সমাজের নিয়মগুলো আমাদেরই সৃষ্টি আর এর প্রয়োজনীয় সংশোধন আমরাই করতে পারি। চাইলেই পারি :)

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৭
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×