কারণ আমরা জতিগতভাবে ঝড়-ঝঞ্জা, বন্যা মোকাবেলায় যতটা দক্ষ, ততটাই অদক্ষ আরেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প মোকাবেলায়। কারণ আমরা বাঙ্গালীরা জীবদ্দশায় কদাচিৎ এধরনের প্রাকৃতিক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হই।
কর্মস্থলের সুবাদে আমি দেখেছি শ্রমিকদের প্রানান্ত ছোটাছুটি, পড়ে যাওয়া, আহত হওয়া শত শত আতঙ্কিত মুখ। চোখে-মুখে সংশয় আবার কারখানায় প্রবেশ নিয়ে; না জানি কি হয়!কর্তৃপক্ষকে তারা অনুরোধ করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ছুটি দিতে। ক্ষেত্র বিশেষ বিবেচনা করে কখনো কখনো কর্তৃপক্ষও তাদেরকে ছুটি দিয়ে দেন।
আতঙ্কিত মূখগুলো ফিরে যায় নিজের বাসা/বাড়িতে। আবার পরেরদিন কাজে ফেরে কিছুটা উদ্বেগ, শঙ্কা, চাঁপা আতঙ্ক নিয়ে। সারাক্ষন মনের মাঝে একটা চাঁপা ভয়, আবার কখন জানি কি হয়!
এই আতঙ্ক আমরা আমাদের আগ্রজদের কাছ থেকে পেয়েছি। কারণ ভূমিকম্পের বিষয়ে আমাদেরকে কেউ প্রস্তুত করেনি আগে থেকে। কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা/প্রশিক্ষণও আমাদের নেই যেরূপ আমরা ভূমিকম্প প্রবন দেশগুলোতে দেখি (জাপান)। তাই লড়াকু জাতি বাঙ্গালী আজ মৃদু/মাঝারী ভু-কম্পনে আতঙ্কিত, দিশেহারা। ভুমিকম্পে এদেশে একজন মানুষ মারা না গেলেও আমরা দেখি আতঙ্কে অজ্ঞান হয়ে, হার্ট-স্ট্রোক করে মৃত্যু বরণ করেছেন আমাদেরই কেউ কেউ।
তাহলে প্রিয় পাঠক আমাদের কার কি দায়িত্ব এ বিষয়ে সকলকে সজাগ করার? কিভাবে ভূমিকম্পের মত একটি দুর্যোগ আমরা মানসিক ও শারিরীকভাবে মোকাবেলা করব? আমার মতে নিম্নের কতিপয় পদক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের গোটা জাতিকে এ বিষয়ে সচেতন করতে পারি। যা আমাদের মূল্যবান জীবন রক্ষা করতে পারে।
১। শিক্ষাক্রমে প্রাকৃতিক/মানুষ সৃষ্ট দুর্যোগে কি কি করনীয় তা অন্তর্ভুক্ত করা।(বন্যা, ঝড়-ঝঞ্জা, দুর্ঘটনা, মহামারী ও ভূমিকম্প)
২। গন-মাধ্যমের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা।(প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম)
৩। সামাজিকভাবে সচেতনতা মূলক আন্দোলন।
৪। স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থা করা। (রোভার স্কাউট, বি এন সি সি, বাংলাদেশ ক্যাডেট কোর, স্বেচ্ছাসেবী সঙ্ঘঠন)
৫। বাণিজ্যিক বা বে-সরকারী ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। (সি এস আর কার্যক্রম)
৬। শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ। (কারখানায় অগ্নি, প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্য-সুরক্ষার ন্যায় ভূমিকম্প)
প্রিয় পাঠক, আমার ক্ষুদ্র চিন্তায় মনে হয় আমাদের এই লড়াকু জাতি উপরোক্ত পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে ভূমিকম্প মোকাবালা করার যথাযথ জ্ঞান অর্জন করে তা থেকে উপকার পেতে পারেন। আমাদের দেশে অনেক জ্ঞানীগুণী আছেন যারা এব্যপারে আরও ভাল ভাল দিক নির্দেশনা দিতে পারেন।
আমি মনে করি আমাদের গণসচেতনতার জন্য অবিলম্বে এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া জরুরী।
==০==
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:২৮