এমনিতেই আমাদের দেশে আইনের অপব্যবহার করা হয়। সেখানে এই আইন বাস্তবায়ন হলে এর অপব্যবহার আরও বেশি হবে। মেয়ে শিশুগুলো বিয়ের মাধ্যমে ধর্ষনের শিকার হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লবের কনফারেন্স লাউঞ্জে গার্লস নট ব্রাইড বাংলাদেশ এলায়েন্স, চাইল্ড রাইটস এডভোকেসি কোয়ালিশন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ গার্ল পাওয়ার এলায়েন্স আয়োজিত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৪ তে মেয়েদের বিয়ের নূন্যতম বয়স ১৮ বছরের কম করার কোন শর্তযুক্ত ধারা সংযোজন না করার আহবান শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন এ কথা বলেন।
অল্প বয়সে বিয়ে হলে মেয়েদের সুপ্ত প্রতিভা নষ্ট হবে জানিয়ে বক্তারা বলেন, এই আইন মেয়ে শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবে, বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিবে। কারণ বাংলাদেশের শিশুদের অর্ধেক হচ্ছে মেয়ে শিশু। আর তারা যদি পিছিয়ে যায় তাহলে দেশ পিছিয়ে যাবে।
তিনি আরোও বলেন যে, সকল মেয়ে শিশুকে তাদের মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া হচ্ছে, তারা পরবর্তীতে অনেকে পতিতালয়ে চলে যাচ্ছে। কম বয়সে বিয়ের কারণে তারা এ্যডজাস্ট করতে না পারাতেই এমনটা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত খসড়া বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অস্পষ্ট বিবরণ যুক্ত। যা নিয়ে কাজ করতে পারবো না। অস্পষ্ট ধোঁয়াশা ও আইওয়াশের আইন চাই না বলে জানান নারী সংস্থার বক্তারা।
এ আইন পাশ হলে মেয়ে শিশুদের অধিকার হরণ হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাবা-মা চাইলেই তাদের মেয়েকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিবে।তাই আমরা চাই না এই আইন সংসদে পাশ হোক।
বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে ২য় অবস্থানে আছে জানিয়ে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সদস্য জোবায়ের হোসেন বলেন, বাল্যবিয়ের কারনে অনেক মেয়ে শিশু আত্মহত্যা করছে। কম বয়সে প্রেগনেন্সির কারনে অনেকে আবার মারাও যাচ্ছে বলে জানান বক্তারা।
বাল্যবিবাহ নিরোধে মেয়েদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম ১৮ পুন-নির্ধারন এবং মেয়ে শিশুদের আয় ও দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষমাত্রা এমডিজি অর্জনে মাতৃ-মৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হ্রাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। মেয়ে শিশুর শিক্ষা ও নারী কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং ক্ষমায়নেও অগ্রসর হয়েছে। অথচ এখন এই আইন করে হঠাৎ করে মেয়েদের বিয়ের বয়স কমিয়ে সব অর্জনকে ভু-লুণ্ঠিত করা হচ্ছে।
বাল্যবিবাহ নিরোধের জন্য সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, লজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদয় বিবেচনা করে কোন ধরনের শর্ত আরোপ ব্যতিরেকে খসড়া আইনটি অনুমোদন এবং কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করারও দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের উপদেষ্টা জান্নাতুল ফেরদৌস রুমা, ন্যাশনাল গার্ল চাইল্ড এ্যাডভোকেসি ফোরামের সচিব নাসিমা আক্তার জলি প্রমুখ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




