আমাদের সমাজের মানুষের মন থেকে পরকালের ভয় বা টেনশন যেন উঠে গেছে। সবার মধ্যে এক অদ্ভুত মরিয়া ভাব। 'নগদ যা পাও হাত পেতে নাও বাকি খাতায় শুন্য থাক”। একদিন যে আমাদের দুনিয়ার প্রতিটি কাজের হিস্যা দিতে হবে সেই ভয়ই নেই।
আগের থেকে মানুষ এখন যেন নির্বিবেকভাবে অন্যায় করে যায়। আগে অন্যায় করত ঠেকায় পরে, যেমন তীব্র অভাব, টাকার সমস্যা, ঋন, রাগ এসবের বশে। এখন খারাপ হওয়াটাই যেন রীতি-স্মার্টনেস!
এক ভয়ংকর অবনমনের দিকে চলেছে আমাদের জন্মভূমি, আমাদের স্বদেশীরা। আমাদের সমাজের শ্রদ্ধার পাত্র যারা, তাদের প্রত্যেকের উপর আস্থা হারিয়ে গেছে। দুর্নীতি করেনা কে তাই এখন প্রশ্ন। আমার তো মনে হয় দুর্নীতি করেনা কে এই প্রশ্নের জবাব দেয়া বহুত বহুত কঠিন। কেউ বলেন না দূর্নীতি করেনা কে?
আর্মি অফিসার, বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, ইন্জিনিয়ারিং-মেডিকেল ছাত্র, বিচারপতি, ডাক্তার, ব্যাংকার--আগে যেসব সেক্টরের লোকজন ‘সাফ’ ছিল, তারাও এখন দুষিত। এক ভয়াল কালো অমোচনীয় মেঘ আমাদের আকাশে। দেশের শিক্ষক, প্রকৌশলীরা দূর্নীতি করলে তেমন কিছু হয় না, কিন্তু গনতান্ত্রিক দেশে রাজনীতিকরা দৈনিক ঘুষ খেলে তার পরিনাম হয় ভয়াল। খারাপ যা কিছু তাই এখন সমাজের চালক।
আমার বাসার কাছে এক স্কুল আছে, সেই স্কুলের এক টিচারের কাছ থেকে শুনলাম আরেক টিচারের কাহিনী। সেই টিচার ক্লাস সিক্স-সেভেনএর পোলাপানদের ক্লাসে হেভি মারপিট করেন। গরু-ছাগলের মত। শুধু তার কাছে যারা পড়ে তাদের কিছ্ছু হয় না। পোলাপান কয়েকদিন পর ডরে মার থেকে বাচার জন্য তার কাছে বাসায় পড়তে যায় (টাকা দিয়ে) । আমি অন্য যে টিচারের কাছে এ ঘটনা শুনলাম, তিনি বললেন, ভাই দেখেন এমনে করে ঐ টিচার ছাত্র ভাগিয়ে নিয়েছেন। তিনি আয় বাড়াতে এখন বাসায় গিয়ে ছাত্র পড়াচ্ছেন।
ভেবে দেখুন কি ভয়াবহ অবস্থা। এটা গভ: ল্যাব, ধানমন্ডি বয়েজ এসব স্কুল নয়, এলাকার এক লোকাল স্কুল, যাদের নাম পত্রিকায় ছাপা হয় না। এদের কাছে মানুষ কচি কচি পোলাপান পড়তে পাঠায়।
আল্লাহ আমাদের কেন এ অবস্থা করছেন তা তিনিই জানেন।