ক্ষমতার চাইতে রাজপথের আওয়ামীলীগ বেশি শক্তিশালী
গত আগস্ট মাসের এক ৩০ তারিখে ঢাকার বুকে ধানমন্ডিতে হাজার হাজার মানুষের সমাগমে আওয়ামী লীগ বিশাল বড় একটা মিছিল করেন, তার আগে গুলিস্থানেও মিছিল করতে দেখেছেন। সেই মিছিলের খন্ডচিত্র আপনারা সোসাল মিডিয়ায় দেখেছেন। তার আগে ছোট্ট করে যে কথাটা বলতেই হবে সেটা হলো যে, যদি না বলি তাহলে যে ভিডিওটা দেখেছেন সেটা হয়তো বা বোঝা সহজ নাও হতে পারে। আমার বন্ধুদের সাথে আমি সহজে তর্ক জড়াই না। যাদের সাথে আমার বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক তাদের সবার সাথে আমি সবসময় একমত হতে নাও পারি। মানুষের চিন্তা পরিবর্তশশীল। কিন্তু ১৫ আগস্টের পরে আমি একটা কথা বলি যে, সরকারী দল থেকেও রাজপথের আওয়ামীলীগ হচ্ছে বেশি শক্তিশালী। কোনোভাবেই কথাটা মানতে রাজি না তারা বলেন যে, না এটা ভুল কথা। এটা ভ্রান্ত ধারণা। ক্ষমতায় থাকলে সবাই সবাইকে শক্তিশালী দেখা যায়। কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে সে শক্তিশালী থাকে না। অবশ্য তাদের কথার প্রতিফলন পড়ে দেখছি। কিন্তু আপনি যদি নিরপেক্ষভাবে একটু ভাবার চেষ্টা করেন। বর্তমান সময়টার দিকে তাকান, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন একটা পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন, ভাতৃপ্রতিম সংগঠন, সকল ডালপালা, কাণ্ড, শাখা প্রশাখা সবাইকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার চেষ্টা এবং নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার যে সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ সেটা নেওয়া হয়েছে। এর পরেও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষণে ক্ষণে আওয়ামী লীগের মিছিল দেখতে পেয়েছি। ঝটিকা মিছিল ঝটিকা মিছিল থেকে একটু বড়, তারপরে মাঝারি, এখন বৃহৎ আকার ধারণ করতেছে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল কোনটা জানেন যে এই যে রিক্স নিয়ে মিছিল করছে তারা জানে তারা বোঝেন যে, এখন যদি তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে অথবা মব বাহিনীদের কাছে ধরা পড়েন, তাদের কী অবস্থা হবে সেটা তারা জানেন। সেই ভয় আছে মানুষ। এই ভয় নিয়ে দৌড়ের উপর। এইভাবে প্রকাশ্যে নিজের হাতে মোবাইলের ক্যামেরাটা ওপেন করে মিছিলের সবাই। কিন্তু মনে হইতেছে দৌড়ের উপর আছে। একজন মাঝ বয়সী, মুখে দাড়ি আছে, মাথায় টুপি আছে, পরনে পাঞ্জাবি। তিনি শুধু দৌড়ের উপর আছেন, চারি দিকে তাকাইয়া আছেন এবং মিছিলে যারা আরও আছেন, যারা তাদেরকে দেখাশোনা করতেছেন, তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেছেন এবং সবাইকে বোঝায় যে, এত বড় একটা মিছিল রাজপথে, ঢাকার বুকে, ধানমন্ডিতে। একটু ভাবার চেষ্টা করুন যে ধানমন্ডিতে মিছিলটা হইতেছে এবং তারা প্রকাশ্যে অনেকেই মুখোশ মাস্ক পরে আছে। অনেকে টুপি পরে আছে ক্যাপ। কিন্তু আমি যে দুজনের কথা এখন বলব তারা দুইজন কিভাবে স্লোগান দিতেছেন, কিভাবে আশে পাশে তাকায় দেখছেন আশেপাশের তার সহযোদ্ধাদের তিনি খেয়াল রাখছেন, তাদের দিক নির্দেশনা দিতেছেন এবং সেই ভিডিও করে ভিডিও ছেড়ে দিতেছেন। যায়যায় দিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন মিডিয়াতে সেটা প্রচার হইতেছে সারা বাংলাদেশ ব্যাপী। তাদের অঙ্গভঙ্গি, তাদের দৌড় বা তাদের চলাচলের সব কিছু দেখে এটা কিন্তু স্পষ্ট যে তারা ভয় পাচ্ছে যে, যদি কোন দিক থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চলে আসে। যদি মব বাহিনী চলে আসে এই ভয়টা তাদের মধ্যে আছে। এটা স্পষ্ট অস্বীকার করার কিছু নাই। কিন্তু তাদের কন্ঠে কি আপনি ভয় দেখতে পেলেন?
যে কন্ঠ। সেই কণ্ঠটা আমার কাছে মনে হচ্ছে নির্ভীক। নির্ভয়ে তারা শ্লোগান দিচ্ছে এবং তালে তালে স্লোগান দিচ্ছে এবং এই ভয়কে জয় করে তারা রাজপথে যে মিছিলটা করতেছে এটা প্রকৃতপক্ষে ঐ কথাগুলোর সাথে মিলে যায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা, রাজনীতিবিদ তারা যে বলেন সোশ্যাল একটিভিস্ট যে বিরোধী দল রাজপথের আওয়ামী লীগ হচ্ছে শক্তিশালী আওয়ামী লীগ এটাই তার প্রমাণ। আপনি বলতে পারেন যে, এটা কিভাবে প্রমাণ হতে পারে? একটা মিছিল তো যে কেউ করতে পারে না। এই সময় আপনি আওয়ামী লীগের দিকে তাকান। আওয়ামী লীগ কোথাও বের হতে পারে না। ঢাকার বুকে এইভাবে রিক্স নিয়ে আপনি বের হতে পারবেন। দেখেন তো মিছিলটা কত বড়? হাজার হাজার মানুষের মিছিল না তো শত শত শত শত ছেড়ে গেছে, হাজারে উত্তীর্ণ হয়েছে। এটা এক বছরের মাথায় আওয়ামী লীগের বিশাল বড় একটা শক্তির প্রদর্শন হিসাবেই আমার কাছে মনে হইতেছে। হয়তোবা যারা রাজনীতিবিদ আছেন, আওয়ামী লীগকে যারা মানে যারা আছেন তারা ঠিকই বুঝতে পারতেছেন যে আওয়ামী লীগের রাজপথের শক্তি কতটুকু। তারা কিভাবে রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করতে পারে। দেখেন ওই মিছিল টাতে বেশির ভাগ যুবক কিশোর আছে। আমি আজ থেকে ২০ এর মাঝামাঝি সময়ে একটা লেখাতে বলেছিলাম যে, যারা আওয়ামী লীগের আন্দোলন দেখেন নাই তারা একটু শান্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। আমার এই লেখাটি এফবিতে পোস্ট করেছিলাম, শিরোনাম ছিল, "আওয়ামী লীগের আন্দোলন যারা দেখেন নাই অথবা রাজপথের আওয়ামী লীগকে যারা দেখেন নাই তারা একটু বোঝার চেষ্টা করেন,।একটা টাইটেল দিয়ে আমি কিছু কথা বলছিলাম এবং সেই লেখাটা অনেকে নেগেটিভ রেয়্যাক্ট দিয়েছেন। তারা এখন মিলিয়ে দেখতে পারেন। গতবছরের শেষের দিকে বলেছিলাম সেই কথাগুলো আজকে দেখেন কী ভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে।
এস এম আজাদ রহমান
১ সেপ্টেম্বর' ২০২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



