উপদেশমূলক গল্প: বাঘ আর শিয়ালের রাজনীতি
একটি শক্তিশালী রাজ্যে ছিলো একদল ভয়ঙ্কর বাঘ।
এই বাঘদের বীরত্ব এবং শক্তির কারণেই রাজা একের পর এক যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল। বাঘদের নেতৃত্বে রাজ্য সমৃদ্ধি লাভ করেছিল এবং রাজার সুখ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল।
কিন্তু রাজদরবারে থাকা শিয়ালরা, যারা তোষামোদে ও চাতুর্যে পটু, রাজার কানে কানে বলতে শুরু করল:
"মহারাজ, এই বাঘগুলো অহংকারী এবং বেপরোয়া। তারা এখন আর কোনো কাজে আসে না। বরং এদের পেছনে অযথা খরচ হচ্ছে। আমাদের মতো বুদ্ধিমান শিয়ালদের যত্ন নিন এবং নতুন করে আরও শিয়াল নিয়োগ করুন।"
রাজা লক্ষ্য করলেন, বাঘরা কখনো অকারণে তোষামোদ করেনি।
তারা শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের সাহসিকতার মাধ্যমে রাজাকে সম্মান দেখিয়েছে।
অন্যদিকে, শিয়ালরা সবসময় রাজাকে ঘিরে মধুর কথা বলে তাকে খুশি রাখছে।
অবশেষে, শিয়ালদের পরামর্শে রাজা বাঘদের তাড়িয়ে দিলেন এবং রাজদরবারে আরও অনেক শিয়াল নিয়োগ করলেন।
কিছুদিন পরেই প্রতিদ্বন্দ্বী এক রাজা, যে কিনা সেই বাঘগুলোকে আশ্রয় দিয়েছিল, আক্রমণ করল এবং সহজেই রাজ্য দখল করল।
নতুন রাজা হাসতে হাসতে বন্দী রাজাকে বললেন:
"তুমি জানো কেন হেরেছ?"
"না, বলো তো," বিস্মিত কণ্ঠে জবাব দিল রাজা।
নতুন রাজা বলল:
"কারণ তিনটি—
১) তোমার শক্তির মূল ভিত্তি যারা ছিলো (বাঘেরা), তাদের তুমি অবহেলা করেছ।
২) তুমি শিয়ালদের মিষ্টি কথায় মুগ্ধ হয়ে তাদেরকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছ।
৩) সর্বোপরি, শিয়াল কখনো বাঘের জায়গা নিতে পারে না — এটা তুমি বুঝতে পারোনি।"*
শিক্ষা
রাজ্য বা প্রতিষ্ঠানের শক্তি নির্ভর করে দক্ষ ও বীরদের উপর।
তোষামোদকারীরা সবসময় নিজের স্বার্থ দেখে, তারা কখনো প্রকৃত লড়াইয়ে কাজে আসে না।
নেতাকে সর্বদা যোগ্যদের মর্যাদা দিতে হবে এবং চাটুকারদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
"যে নেতা শিয়ালদের হাতে বাঘদের তাড়িয়ে দেয়, তার পতন অবশ্যম্ভাবী।"


অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



