somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিন বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় ভারতীয় কোর্ট মার্শালে বিএসএফ সদস্যের বিচার শুরু

১২ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


Monday, 12 October 2009 17:32
Print
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সীমান্তে শিশুসহ তিন নিরীহ বাংলাদেশী নাগরিককে এলোপাথাড়ি গুলি করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ভারতের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য আরপি সিংয়ের বিচার প্রক্রিয়া বিএসএফের অধীনে কোর্ট মার্শালে শুরু হয়েছে। সোমবার সকালে ভারতের ফুলবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্পে এই বিচার শুরু হয়। বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশীদের হত্যাকান্ডের ঘটনায় কোন বিএসএফ সদস্যের কোর্ট মার্শাল এবং এতে সংশ্লি¬ষ্ট বাংলাদেশী নাগরিকদের সাক্ষ্যগ্রহণের ঘটনা এবারই প্রথম বলে বিডিআর কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। ২০০৮ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে ভারতের ১০ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নয়াবাড়ি ক্যাম্পের সদস্য আরপি সিং মাদকাসক্ত অবস্থায় আকস্মিকভাবে তেঁতুলিয়া সীমান্তের শালবাহান ইউনিয়নের ময়নাকুড়ি গ্রামে অনুপ্রবেশ করে অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে এ ঘটনা ঘটায়।

বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিএসএফ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে সোমবার দুপুরে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টের বিপরীতে ভারতের ফুলবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্পে নিহত বাংলাদেশী নাগরিকদের ময়না তদন্তকারি চিকিৎসক, আরপি সিংকে চিকিৎসা প্রদানকারি চিকিৎসক সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁরা হলেন পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. বাহারাম আলী, রংপুর মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. আবদুল কাইয়ূম ও পঞ্চগড়ের ২৫ রাইফেলস ব্যাটেলিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর এ টি এম মোজাফফর রহমান। এ সময় ভারতের ২৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অফিসেয়িটিং কমান্ডেন্ট আর কে শাহী তাদের স্বাগত জানিয়ে বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে যান। ডা. বাহরাম আলী ও আবদুল কাইয়ুম ওই বিএসএফ সদস্যকে আহত অবস্থায় চিকিৎসা করেছিলেন। এর আগে তেঁতুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল লতিফ ফুলবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে শনিবার সাক্ষ্য দেন। আবদুল লতিফ ঘটনার দিন আরপি সিংকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

এর আগে গত তিনদিনে বাংলাদেশী বিডিআর, পুলিশ, আহত শহীদুলসহ বেশ কয়েকজন কোর্ট মার্শালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা সবাই সীমান্তে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে হত্যাকান্ডের নায়ক আরপি সিংয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য ও জবানবন্দী দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। সোমবার ময়নাগুড়ি গ্রামে গেলে নিহত মোসত্মফার পরিবার ও গুলিতে আহত শহিদুল অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যের ফাঁসি ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১৬ নভেম্বর রাত ১০ টার কিছু পরে মাতাল অবস্থায় বিএসএফ সদস্য আরপি সিং ময়নাকুড়ি গ্রামে প্রবেশ করে। এসময় সে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে লোকজনের ওপর এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। ঘুমিয়ে থাকা লোকজনও গুলির শব্দে এদিক ওদিক পালাতে থাকে। এসময় রাস্তায় আশ্রয় নেয়া মোস্তফা তার গুলিতে গুরুতর আহত হয়। পরে তিনি তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। একই সময় ঘুমন্ত শহিদুল ও তার পরিবার ঘর বের হওয়ার প্রস্ত্ততি নিলে বাইরে থাকা অস্ত্রধারি আরপি সিং তাদের ওপরও বেপরোয়া গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদুলের স্ত্রী মাজেদা বেগম ও আট মাস বয়সি শিশু সন্তান মামুন নিহত হয়। শহীদুল পেটে ও বাম হাতে গুলিবিদ্ধ হন।

পরে গ্রামবাসী মাদ্যপ বিএসএফ সদস্য আরপি সিংকে আহত অবস্থায় অস্ত্রসহ আটক করে বিডিআরের কাছে সোপর্দ করে। এরপর সেক্টর পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই বৈঠকে বিডিআর, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামবাসী হত্যাকান্ডের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি আরপি সিংয়ের ভারতীয় কোর্ট মার্শালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে পঞ্চগড় ২৫ রাইফেল ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আলামত, নথিপত্র পাঠানো হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর বিএসএফ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে বিডিআর সংশি¬ষ্ট সাক্ষীদের নিয়ে গিয়ে ভারতীয় কোর্ট মার্শালে উপস্থাপন করে।

পঞ্চগড়, ১২ অক্টোবর, সফিকুল আলম সফিক, ফোকাস বাংলা নিউজঃ সফিক/জাহিদ/১৬২০ঘ./ফোকাস বাংলা/শাহরিয়ার
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×