আরওয়ার জ্বর। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, বাচ্চার জ্বর বাড়তে থাকলে কোলে রাখা অবস্থায় আপনি টের পাবেন জ্বরের উর্দ্ধগতি। এই অবস্থায় ডাক্তারখানায় যাওয়ার পর প্রেস্ক্রিপশনে তিনটি ওষুধ লিখে দেয়া ছাড়া ডাক্তারের বোধ করি আর কিছুই করার ছিল না, কারন ভাইরাল জ্বর। যদিও আই.সি.ডি.ডি.আর.বি থেকে স্ট্রিকটলি বলে দিয়েছিল বাচ্চাকে ডাইরিয়ার জন্য কোনও ওষুধ না দিতে কিন্তু বাচ্চার ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে তো মনোয়ারা হাসপাতালের এই ডাক্তারের কথাই শিরধার্য্য। চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসতেই বাচ্চার চিৎকার কিন্তু টাকা না দেয়া পর্যন্ত তো আর বের হতে পারব না। পকেটে হাজার টাকার নোট, ভাংতি না দিলে তো হবে না, ডাক্তারের আ্যসিসটেন্টের কাছেও ভাংতি নাই। লাবন্য, আমার সহধর্মিনী ব্যাগ ঘাটাঘাটি শুরু করল ভাংতি ৪০০ টাকার খোঁজে। বিশাল ব্যাগ, শ'খানেক জিনিস, খুঁজতে তো সময় একটু লাগবেই তাই আরওয়াকে নিয়ে আমি বাইরে চলে এলাম। বেশ কিছুক্ষন বাইরে হাটারাটির পরও কেউ দেখলাম বের হচ্ছে না। অগত্যা বাইরে আরও কিছুক্ষন হাটাহাটি কিন্তু বাচ্চা তো আর কান্না থামাচ্ছে না। মা'র কাছে খাবে, সেই অবস্থাও তো ছিল না ঐ মোমন্টে। আবার ভেতরে ঢুকতেই দেখলাম আ্যসিসট্যান্ট নেক্সট পেশেন্টের কাছ থেকে এ্যাডভান্স টাকা নিয়ে ভাংতির ব্যবস্থা করল। টাকা, একটা জার্ম, এর আঘাতে আমার বাচ্চার অনেকক্ষন কান্না।
আগের ঘটনাটি ছিল গতকালের। আজ আবার অফিস গেলাম না। বিছানায় বসে ল্যাপটপে একটা ওয়ার্কপ্ল্যান প্রিপেয়ার করছিলাম। কোনও এক ফাঁকে পকেটের টাকাগুলো বিছানায় পরে থাকল। আরওয়াকে গোসল করানো পর বিছানার কাছে আনতেই লাবন্য বলে উঠল, ওইটা সরাও, ওইটা জার্ম। টাকায় অনেক জার্ম।
টাকায় জার্ম, নাকি টাকা-ই আমাদের দেশ, সমাজ ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় জার্ম?
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮