পরিচিতি :
লিচুর ইংরেজি নাম Litchi বা Lychee এবং বৈজ্ঞানিক নাম Litchi chinensis যা Sapindaceae পরিবারভুক্ত একটি ফল। লিচুর বহিরাবরণ অমসৃণ ও লালচে গোলাপি বর্ণের হয়। আবরণের ভিতরে সুমিষ্ট রসালো শাঁস থাকে। এই রসালো শাঁস সাধারণত খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।একটি লিচু গাছ ১৫ মিটার থেকে ২৮ মিটার অর্থাৎ ৪৯ ফুট থেকে ৯২ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। লিচু দক্ষিণ-পূর্ব চীনের কুয়াংতুং এবং ফুচিয়েন প্রদেশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের স্থানীয় উদ্ভিদ এছাড়াও লিচু ভারতীয় উপমহাদেশ, মাদাগাস্কার এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য ক্রান্তীয় অঞ্চলে ভালো জন্মে।
লিচুর পুষ্টি উপদানসমূহ :
লিচু পুষ্টি উপদানে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে শক্তি ৬৬ কিলোক্যালরী, শর্করা ১৬.৫৩ গ্রাম, চিনি ১৫.২৩ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ১.৩ গ্রাম, ফ্যাট ০.৪৪ গ্রাম, প্রোটিন ০.৮৩ গ্রাম, থায়ামিন (বি১) ০.০১১ মিগ্রা, রিবোফ্লাভিন (বি২) ০.০৬৫ মিগ্রা, নায়াসিন (বি৩) ০.৬০৩ মিগ্রা, ভিটামিন বি৬ ০.১ মিগ্রা, ফোলেট (বি৯) ১৪ μg, ভিটামিন সি ৭১.৫ মিগ্রা, ক্যালসিয়াম ৫ মিগ্রা, লৌহ ০.১৩ মিগ্রা, ম্যাগনেসিয়াম ১০ মিগ্রা, ম্যাঙ্গানিজ ০.০৫৫ মিগ্রা, ফসফরাস ৩১ মিগ্রা, পটাসিয়াম ১৭১ মিগ্রা, সোডিয়াম ১ মিগ্রা, জিংক ০.০৭ মিগ্রা এবং পানি ৮১.৮ গ্রাম।
সুস্বাস্থ্য গঠনে পুষ্টি উপাদানসমূহের অবদান :
১) লিচুতে আছে ক্যানসার প্রতিরোধক্ষমতা। লিচু ক্যানসার কোষ বিভাজনকে বাধা দেয়। ২) উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে লিচুতে থাকা উপাদানগুলো। লিচু খেলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে। ৩) লিচু ত্বক ভালো রাখে। ব্রণ হতে বাধা দেয়। সেই সঙ্গে ত্বকের কালো দাগ দূর করারÿক্ষমতা আছে লিচুর। ৪) শরীরের তারুণ্য ধরে রাখাতে সক্ষম। ৫) লিচু হজমশক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে ক্ষুধাবর্ধক হিসেবেও কাজ করে। ৬) লিচুতে থাকা ভিটামিন সি, নিয়াসিন, থায়ামিন চুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে চুলকে দিঘল কালো করে তোলে। ৭) লিচুতে থাকা ভিটামিন সি, নিয়াসিন, থায়ামিন চুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে চুলকে দিঘল কালো করে তোলে। ৮) লিচুতে ক্যালরি বেশি থাকায় শরীরের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। ৯) মুখের স্বাস্থ্য এবং দাঁত ভালো রাখতে লিচুর আছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। ১০) লিচুর ভিটামিন ‘এ’ রাতকানাসহ চোখের নানা রোগের প্রতিষেধকও হিসেবে কাজ করে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো :
১) মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে। ২) লিচু ওজন বৃদ্ধি করে। ৩) লিচুতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, জরুরি ফ্যাটি এসিড নেই। ফলে বেশি পরিমাণে লিচু খেলে তা শরীরের স্বাভাবিক ব্যালেন্স নষ্ট করে। ৪) খালি পেটে লিচু খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
তথ্যসূত্র : অর্ন্তজাল/উইকিপিডিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০২২ সকাল ১১:৫৯