আজ অফিস থেকে একটু আগে আগেই বের
হলাম। প্রাইভেট ব্যাংক হলেও ব্যাক্তিগত
কোনো স্বাধীনতা নেই। মাঝে মাঝে
মনে হয় অফিসেই রাত পার করে সকাল
হয়ে যাবে। তখন "early for tomorrow"
ফ্রেজটাকে "late for yesterday" বানিয়ে
ফেলতে ইচ্ছা হয়। ওয়েস্টার্ন
অফিসগুলোতে কী কাজের চাপ কম!
..
যাই হোক, প্রতিদিনের মতো বউকে ফোন
দিয়ে অভিমানী কন্ঠে "হ্যালো" শুনতে
পেলাম, আজও ভালো লাগে। কথা সহজে
শেষ করে বাসার দিকে ছুটলাম। আজ ওকে
নিয়ে বের হবো ঘুরতে নয়, কিনতে। কাল
শুক্রবার। তা তো মাসে চার পাঁচবার
আসে। কিন্তু কাল আসবে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি,
বউয়ের বাবা-মা বলে কথা। আমি যাইনা
তাদের বাসায়। আমাকে সহ্য হয় না বোধয়।
ফ্যামিলি স্ট্যাটাসের একটা ব্যাপার
আছে। অতি সত্য, গোপন থাকুক।
..
বছরের প্রথম মাসে অনেক কিছু কিনে
ফেললাম। মল থেকে বের হচ্ছি। কোঁকড়া
চুলের কোন ছেলেকে দেখলে আমি
দ্বিতীয়বার দেখতে ভুল করি না। আজ
ব্যাতিক্রম হলো। কারণ, যাকে খুঁজি তাকে
পাই না ..
আমি তখন সম্মান শ্রেণীর ২য় বর্ষের ছাত্র।
মেসে থাকতাম। কাউকে তেমন ভালো
লাগতো না। সব আযাইরা পাবলিক। সব
থেকে আযাইরা পাবলিকটা কালক্রমে
আমার রুমমেট হলো। আযাইরা গেটাপ
নেওয়া ছেলেটা এডমিশন দিতে প্রথম
ঢাকায়। দুই দিনের মাঝে তাকে আবিষ্কার
করে ফেললাম। বন্ধুদের সাথে আড্ডায়
পর্যন্ত তাকে নিয়ে যেতাম। বেশিক্ষন
চোখের আড়াল হলেই মোন খারাপের
রাজ্যে যেতাম, আবার সেই মনকেই
ভালো করে দিত সে। এতো বিরক্তিকর
মানুষটার সাথে শেষে এতো মাখামাখি।
পুরাই লুল অবস্থা। শুধু পোশাকেই মানুষ
চেনা যায় না, মন দেখে চিনতে হয় এটা
তখন ভালো করেই বুঝেছিলাম।
ছয় বছর পর আজ তবুও কী ভেবে তাকালাম।
ফ্লাশব্যাক হতে সময় লাগলেও, বুকে
টেনে জড়িয়ে ধরতে সময় লাগলো না।
চোখ দিয়ে শুধু আবেগ ঝড়ছে। বউয়ের
এদিকে হিংসা হচ্ছে কিনা সেটা আর
দেখা হলো না।
...
আজ প্রমাণ হচ্ছে সেদিনের সে সম্পর্ক
মিথ্যা ছিলো না। সম্পর্কের সাথে সম্পর্ক
তৈরীতে অতিবাহিত কালের
ব্যস্তানুপাতে কিংবা সমানুপাতে
কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই। সম্পর্কের
সৃষ্টি আছে, বিনাশ নেই। সে হোক
ছেলে অথবা মেয়ের ক্ষেত্রে। হ্যা! এই
ছেলেটার মাথার চূলগুলোও তাই কোঁকড়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৪