
যাত্রার শুরুটা সেপ্টেম্বর ১০ তারিখ ২০১৬, ঢাকা থেকে, রাত ১০ টায় মতিঝিল আরামবাগ থেকে রয়েল কোচের ঢাকা কলকাতার (“কাটা বাস”)কাটা এবং আকাটা বাসের গল্প ও বলব সবাইকে।
যেহেতু ১২ তারিখে ঈদ সেহেতু রাস্তায় অনেক ভীড় হবে, আমরা মাঝ রাতের দিকে পাটুরিয়া ফেরী ঘাট থেকে আনুমানিক ৫-৬ কিঃ মিঃ দূরে পৌঁছলাম, তারপর শুরু হল অপেক্ষা ফেরী পারাপার হবার। পরদিন ১১ তারিখ দুপুর ১২ টায় ফেরীতে ওঠার সৌভাগ্য হল আমাদের। যাক সন্ধ্যার আগের বেনাপোল পৌঁছে গেলাম, খুব সহজ এবং কোন ঝামেলা ছাড়াই ওপারে চলে গেলাম এবং নির্ধারিত বাসে ওঠলাম তার আগে ওপারে রয়েল পরিবহনের একটি কাউন্টার রয়েছে সেখান থেকে আমরা আমাদের সিট দুটো কনফার্ম করে নিলাম। সাথে সাথে ওখান থেকে বাংলা টাকা রুপি করে নিলাম এবং ২ জনে ২ টা সিম কার্ড কিনলাম সাথে সাথে ১ জিবি ইন্টারনেট প্যকেজ সহ।
সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে কলকাতার উদ্দেশ্যে আমাদের বাস ছাড়লো এবং রাত ১০ টা নাগাদ আমরা কলকাতার মারকুইস স্ট্রিটে পৌঁছে গেলাম এবং অনেক ঘোরাঘোরির পর একটা হোটেলে উঠলাম ১৩০০ রুপি ভাড়া দিয়ে।
[কলকাতা টু দিল্লী টু মানালী] রাতে ঘুমাইনি
খুব ভোরে আমি ঘুম থেকে উঠলাম এবং কলকাতার মারকুইস স্ট্রিটে একা হাটতে লাগলাম উদ্দেশ্য দিল্লী যাবার টিকেট কাটা, সময় সকাল ৭ টা সকল ট্রাভেল এজেন্সির দোকান বন্ধ, অনেক হাটার পর দেখলাম একজন একটা দোকানের সাটার হাফ খুলে পানি দিয়ে ধোয়া মোছা করছে খুব ভয়ে তাকে বললাম দাদা আমার দিল্লী যাবার টিকেট লাগবে, সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল ১০ মিনিট পরে আসুন, যাক আমি আর কোথায় না গিয়ে তার দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে রইলাম টিকেটের আশায়, সে আমাকে দেখে দ্রুত কাজ শেষ করে আমাকে ডাকল বলল কবে কখন? আমি বললাম আজ এখনি যত দ্রুত দেয়া যায়, বাই এয়ার টিকেট সে অনলাইনে চেক করলো এবং বললো আছে সকাল ১১ টায় জেট এয়ার, বললাম ভাড়া? সে বললো ৩৭০০ রুপি, আমি বললাম কিছু কম রাখেন তারপর সে ৩৬০০ তে রাজি হল এবং পাসপোর্ট চাইলো টিকেট কাটার জন্য, আমি বললাম আনি নাই সে বলল ওকে একটা কাগজ দিয়ে বলল নাম লিখো, আমি আমার নাম ও আমার বন্ধুর নাম লিখে তাকে দিতেই সে আমার বন্ধুর নাম দেখে খুব আগ্রহ নিয়ে বলল তোমার বন্ধু কই? ওর বাড়ী কি বাংলাদেশের নোয়াখালী – লক্ষীপুর এ ? আমি তো অবাক সে জানলো কিভাবে? সে আমাকে বলল রাখো তোমার টিকেট তোমার বন্ধুকে নিয়ে আসো আগে, আমি বললাম ভাই কোন সমস্যা? সে আমাকে বলল আপনি আমার হারানো ভাইকে খুজে দিয়েছেন... আমি বললাম হারানো ভাই মানে? মানে ও যদি লক্ষীপুরের হয় তাহলে সে আমার ভাই? আমি বললাম ওকে কোন সমস্যা নেই আপনি টিকেট বুক করেন আমি ওকে নিয়ে আসছি, বলে তাকে ফোন দিলাম বললাম শালা তারাতারি সব ব্যগ নিয়ে হোটেল ছেড়ে দিয়ে আয় তোর হারানো ভাইকে খুঁজে পাইছি, সে তো বলে শালা ফাইজলামি কর আগে বল টিকেট এর কি অবস্থা? আমি বললাম তুই আয় টিকেট ওকে ১১ টায়। তারপর সে আসলো এবং একটি আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হল, যাক সর্বশেষে টিকেট পাইলাম আরো ১০০ রুপি কমে মানে ৩৫০০ টাকাতে।

এটি কলকাতার স্ট্রিট ফুড, সকালের নাস্তা কি নেই এই লোকের কাছে ! অনেক কিছু খাইছি এর কাছ থকে দেখতে ভাল না বাট খাইতে মজা
তারপর আমরা নাস্তা না করে সোজা একটা ক্যব নিয়ে চলে গেলাম কলকাতা এয়ারপোর্ট, কারন টিকেট কাটার সময় বলেছিল ভেতরে নাস্তা দিবে চেক ইন করে আমরা চেপে বসলাম দিল্লীগামী জেট এয়ারে, সিট একদম পেছনের বেঞ্চে আমাদের পেছনেই টয়লেট!মাত্র ২ ঘন্টা লাগে যেতে কিন্তু ভদ্র লোকের মতন বসে থাকতে অনেক কষ্ট হয়েছে, ছুটোছুটির অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে তো তাই।
দিল্লী পৌছেই আমাদের দেশীত দাদাকে ফোন দিলাম উনি বাংলাদেশী কিন্তু দিল্লীতে ট্রাভেল এজেন্সীর ব্যবসা, আমাদের ফোন পেয়ে খুবই খুশী হয়ে গেল এবং দিল্লী এয়ারপোর্ট থেকে সহজে কম খরচে ওনার ওখানে যাবার পথ বলে দিল।

টিপসঃ দিল্লী যদি যান তবে আপনার প্রথম ঠিকানা হবে, পাহারগঞ্জ, সেখানে অনেক অনেক হোটেল এবং ভারতে যেখানেই যান না কেন ওখান থেকে সব কিছু ঠিকঠাক করে যেতে পারবেন। কলকাতা থেকে দিল্লী ট্রেনে গেলে আপনার হাঁটার পথ অথবা রিক্সায় গেলে ২০-৩০ টাকা ভাড়া নিবে। দিল্লী অনেক জনবহুল জায়গা সেখানে অনেক দালালের দেখা ও পাবেন কিন্তু কথা না বলাই শ্রেয় কিছু জানার প্রয়োজন হলে আশে পাশের দোকানদার ,পুলিশের সহায়তা নেয়াই ভাল।
চলবে-- কাল দিব বাকিটা।
২য় অংশের লিঙ্কঃ ৭ দিনে ভারতের ৩ প্রদেশ ভ্রমণ ( দৌড়ের উপরে ট্যুর ) ২য় অংশ
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




