আহার পর্ব - ১ম অংশ
একটা চাকুরি করি। কেবলই ঠাসাঠাসি বেঁচে থাকার জন্য। সামান্য একটু উদ্বৃত্ত থাকলে সিগারেট কিনি। ফুল কেনা হয় না, রঙিন পাথরও না। একবার একটা সুগন্ধি কিনেছিলাম। ক’দিন পর গন্ধ পরিবর্তন হলে ফেলে দিই। আর ভুল করার সম্ভাবনা নেই।
বাড়িওয়ালা খুব ভালো। একা থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করেনি। একবছর হওয়ার আর ২ মাস বাকি আছে। তার বউ ভালো না। গতকালও আমাকে বিরক্ত করেছে। অফিস থেকে আনা মাগনা কী এক বস্তু শ্যাম্পু না টমেটো সস, তা জানার জন্য আমার কাছে নিয়ে এসেছে। সবে দরজা বন্ধ করে জামা কাপড় খুলে স্বাধীন হচ্ছিলাম। তাকে দয়া করলাম। কিচ্ছু বলিনি। বোতলটা সসের না শ্যাম্পুর, তাও বলিনি। সে বোধহয় মনে মনে কি একটা বলেছে। পাগলই হবে। এর বাইরে শাস্ত্রীয় জ্ঞান তার নেই। মহিলা বইয়ের ভাষায় কথা বলে। সেদিন ঝগড়া করে স্বামীকে বলতে শুনেছি এক বিদঘুটে কথা। যেদিকে দু'চোখ যায় চলে যাবো- এমন আনস্মার্ট কথা শুনে বমি এসেছিলো।
অফিসে আনন্দে থাকি। অফিস থেকে ফিরে সুখে থাকি। বাসে চড়তে আর ভালো লাগে না। বেশি বেশি দার্শনিক উঠে। ভীষণ জ্ঞান দেয়। বাসায় ফিরে মাথা থেকে সেসব দর্শন খুলতেই যা একটু সময় লাগে। কাপড় খুলতে অতো সময় লাগে না। হকারদের রেকর্ড করা বুলি মাথা থেকে খুলে রাখি। অন্ধ, আধা অন্ধ আর অন্যান্য অমানুষদের অসহায়ের ভাষা খুলতে খুলতে হাফিয়ে উঠি। কোনো এক বিখ্যাত ব্যক্তির সাাতকারে পড়েছি, দেহকে বস্ত্রমুক্ত করে নাকি অন্যের চাইতে আলাদা সুখি হওয়া যায়। তার বলার ঢঙেই বুঝেছি ভাল কথা। মিষ্টি কথা। আসলেই সুখ। একেবারেই হার্ডকোর সুখ। বেলাজ মাখামাখি এপার ওপারের।
আমার বন্ধু। তার নাম দিয়েছি ছত্রাক। কোন কারণ নেই। বারো বছর বয়সের পর তার আর বয়স বাড়ে না। বাড়বে না। বাড়াবাড়ি তার পছন্দ না। আমাকে সে বিধাতা মানে। আমিও সেরকমই মনে করি। তার সবকিছু আমি বানিয়েছি। লিঙ্গ বানাতে গিয়ে কোনো ভাবনা ছাড়াই পুরুষ লিঙ্গ বানিয়েছি। সে আসার কথা আরো আগে। দু’ বেডরুমের বাসা নিয়েছি এজন্যই। তার দেরির কারণ জানি না। বিধাতা হিসেবে এখানে আমি খুব উদার। তার সব খবর রাখি না। ব্যক্তিগত কিছু অবশ্যই থাকতে পারে। তবে তাকে যৌন মৈথুনের মতা আমি দিই নি। সেদিক দিয়ে নির্ভাবনা।
ওই মেয়েটা আর আসেনি। শরীর বেচতে এসে ঠিকানা ভুল করে বাড়ির মালিকের দরজায় হামলে পড়েছিলো। নিজেকে খুব ভালোবাসে। অন্য মেয়েরা যেন তাকে দেখে হিংসা করে, এজন্য কতো ছলনার পা ধরেছে সে! আহারে, সে কতো সুখি। নিজেকে কতো ভালোবাসে। শরীরটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য শরীরেরই দ্বারস্থ হয়। চেহারা দেখে নিশ্চিত, সে কাউকে ঠকায় না। চূড়ান্ত মৈথুনের পরই টাকা নেয়। বকশিশ নিশ্চিত পায়। মেয়েটার রাজনৈতিক জ্ঞান ভালো। ভাব না দেখিয়ে বরং নিজেও একটু সুখ নেয়ার চেষ্টা করে। তাতেই আমদানি অনেকটা বাড়ে। এসব মেয়েদের দেখার পর রাষ্ট্র মতায় থাকা বুড়ো মেয়েদের আর কিছু বলি না। ঠিকই একদিন দেশটাকে সোনার দেশ বানিয়ে দেবে।
ছত্রাকের সাথে ওই ব্যবসায়ীর কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক আমার সাথে। মেয়েটাকে রাজনৈতিক গুরু বানানো যেতো। জীবনে রাজনৈতিক মার খেয়ে হাঁড় ভেঙেছে। সর্বশেষ ছোটভাইয়ের বাসার রুমমেটদের রাজনীতির কাছে হারলাম। আরেকবার মুমূর্ষ মৌলানার রাজনীতির কাছে মোবাইল খুইয়েছি। ছত্রাক এসব জানে না। না, আর কিছু ভালো লাগছে না। বন্ধু আসে না কেন? কতো কাজ তার সাথে। সময়তো তেমন একটা নেই।
ইচ্ছে করলে ছত্রাককে দাঁতছাড়া বয়সে আটকে দিতে পারতাম। কিন্তু এসব শিশু ভয় লাগে। একবার চামড়া ছাড়ানো সজারু দেখেছি। আমার দেখা প্রথম নবজাতক মারজাহানের মতো। মারজাহানের যোনি দিয়ে বের হওয়া পাপিয়াকেও দেখেছি। একই রকম। এসব শিশুর গায়ের বড়ো বড়ো কাঁটাগুলো গোপন থাকে। যৌবনে বের করে আনে। ভীষণ ব্যথাগো, অনেক ব্যথা। শিশুর চাইতে বড়ো প্রতারক আর হিংস্র কিছু নেই। শিশুদের কেবল চোখ আর যৌনাঙ্গ সুন্দর। চোখের মাঝখানের কালোটি মারবেলের মতো। আর যৌনাঙ্গে কোনো পুণ্য থাকে না। পাপও না। না, তবুও শিশুর সাথে বসবাস করা যাবে না। ঠিকই একেকটা চামড়া ছাড়ানো সজারু।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১০ সকাল ৯:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




