somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প : দ্বিতীয় শ্রেণীর পরকাল

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(১)
-একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করেছো? কেমন স্রোত ধরে রোদ পড়ছে! ওই যে গাছের ফাঁক ফোঁকর, এমনকি ঝরা পাতাগুলোর তলে পর্যন্ত রোদ দেখা যাচ্ছে। নীল বর্ণের... অদ্ভুত স্পষ্ট রোদ! আচ্ছা, আমরা কি সত্যি সত্যি মরে গেছি? মানে আমাদের কি সত্য মৃত্যু হয়েছে?

-তুমি আরেকটু সরে বসো। এ জায়গাটায় অনেকক্ষণ রোদ পড়েনি। শীতে জমে যাচ্ছে। আমার পায়ের নখগুলো দেখো। তুষার জমে নীল হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর আমরা নীল হয়ে যাবো। যাদের সত্য মৃত্যু হয়, তারা মরে গেলে নীল হয়ে যায়। তোমার কানের ডগা ধীরে ধীরে নীল হয়ে উঠছে। আহারে, টিপটা মনে হয় রাস্তায় পড়ে রইলো। সাথে করে আনতে পারোনি। কপালের কাটা দাগ মিলে গেছে। আমরা প্রায় সুস্থ হয়ে উঠলাম।

-জায়গাটা বেশ। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এটা আমাদের সত্য মৃত্যু না। আনুষ্ঠানিক মৃত্যু। আমরা বোধহয় আরো আগে একবার মরেছি। তারপর এমনি এমনি পৃথিবীতে ছিলাম।

-যতদূর জানি রাস্তা ঘাটে আনুষ্ঠানিক মৃত্যু হয় না। আনুষ্ঠানিক মৃত্যু হয় হাসপাতালে। কোন এক উপন্যাসে পড়েছিলাম। যাই বলো, বেশ প্রশান্তি পাচ্ছি। তুমি পাশে থাকাতে আরো ভালো লাগছে।

ওরা দু’জন। একজন প্রেমিক, আরেকজন প্রেমিকা। একজন মা, আরেকজন বাবা। আজ দুপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় মরে গেছে। সাথে ছিলো এক বছরবয়সী একমাত্র কন্যা সন্তান। সে মরেনি। এখন কোথাও না কোথাও আছে। তার মায়ের নাম কাকলি আর বাবার নাম সাজিদ। ব্যস্ত রাস্তায় হুট করে পার হতে গিয়ে সিদ্ধান্তহীনতার কারণে মরে গেলো। মরার পর কাকলির কিছুটা আফসোস হচ্ছে। অহেতুক মরতে হলো। চাইলে আরো ক’টা দিন বাঁচতে পারতো। দু’তিন হাত জায়গার এদিক সেদিকের জন্য আর বেঁচে থাকা গেলো না। সাজিদই কাকলির কোমর ধরে ডান পাশে সরে আসছিলো। অমনিই চাপা পড়লো। কোলে থাকা মেয়েটা ছিটকে পড়লো রাস্তার ধারে।

-তুমি ডান দিকে না সরে বাম দিকে সরলে এক্সিডেন্টটা হতো না।

-কিন্তু ওদিকেওতো গাড়ি ছিলো। অবশ্য পরে দেখলাম সেটি প্যাসেঞ্জার নামানোর জন্য দাঁড়িয়ে গেলো! কী মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় পড়লাম আমরা। দুয়েকটা মানুষকে দেখলাম কান্না করতে। বাকি যারা কান্না করেনি, তারা নিজেদেরকে জীবিত দেখে সুখ অনুভব করছিলো। সেটার উদযাপনে ব্যস্ত বলেই কান্না করতে পারেনি।

-আচ্ছা আমাদের মেয়েতো ঠিকমতো কথা বলতে শিখেনি। তার নানু বা দাদুর বাড়ির ঠিকানাতো বলতে পারবে না। মানুষজন কি তাকে কোনভাবে পৌঁছে দেবে?

-মনে হয় না। মেয়েটি খুব কিউট। তাকে কেউ চুরি করে নিয়ে যাবে। লালন পালন করবে। বড় হওয়ার পর একদিন বলে দেবে "তুই আমার নিজের মেয়ে না। তোকে কুড়িয়ে পেয়েছি।" এরপর থেকে সে আর ভালো থাকবে না। রাতের বেলা আমাদের জন্য কান্নাকাটি করবে। প্রায় রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। দিনে দিনে শুকিয়ে যেতে থাকবে। চোখের নিচে কালি পড়ে যাবে। মহল্লার একটি ছেলে বিয়ে করতে চাইবে। ওর পালনকারী মা সে ছেলের কাছে বিয়ে দেবে না। মায়ের বোনের ছেলের সাথে বিয়ে দেবে। বিয়ের পর আত্মীয় স্বজনকে বলবে "আমার মেয়ে এখন সুখে শান্তিতে বসবাস করছে।"

-সে কি কাউকে ভালোবাসবে না? মহল্লার ওই ছেলের সাথে কি ভাব থাকবে?

-মেয়েটি যখন দিনে দিনে প্রেমের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠবে, ঠিক ওই সময়ে তার জীবনটাকে অসহনীয় করার মতো ঘটনা ফাঁস করে দেবে তার পালনকারী বাবা। এরপর থেকে দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া বাবা মা,র কথা মনে করে কষ্ট হবে। তার এখনকার আত্মীয়স্বজনের যে সেটিংস দেখবে, জেনে যাবে এটা ভুয়া। তার সত্যিকারের স্বজনদের কাউকে সে চেনে না। এটা তার কাছে অস্বাভাবিক রকমের দুর্যোগ মনে হবে। এ দুর্যোগে সে ভেসে যাবে।

-আমার না দম আটকে আসছে!

সাজিদ হাসতে হাসতে বললো – ভয় পেয়ো না। আর মরতে পারবে না। দম কিছুক্ষণ আটকে থাকবে, আবার খুলে যাবে। তুমি এখনো পুরোপুরি সুস্থ হওনি। তাই এরকম হচ্ছে। আমার মতো ধীর স্থির হয়ে বসো। সুস্থ হয়ে নাও।

কাকলি আবারো ভুলের কথা বললো। সাজিদের ভুলে মৃত্যু হয়েছে। এক রকম অভিযোগই করছে মনে হয়। অবশ্য কাকলিরও ভুল আছে। সাজিদ হয়তো একটু পর সে ভুলের কথা মনে করিয়ে দেবে। ছেলেটি কাকলিকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু ভবিষ্যত অন্ধকার বলে তাকে ছেড়ে সাজিদকে ধরেছে। দ্রুত বিয়েটাও করে ফেললো। তারচে' দ্রুত সন্তান নিলো।

-ওই ছেলেটি এখন সিনেমা বানায়। শুনেছো নিশ্চয়। কিছুদিন আগে নতুন কার কিনেছে। ওটা প্রাইভেট কার। ভেতরে তার আর প্রেমিকার প্রাইভেসিতে ভরা। ওরা দূর্ঘটনায় মরলেও ব্যক্তিগতভাবে মরবে। আমরাতো অশ্লীলভাবে রাস্তায় পড়ে মরে গেলাম। কোন প্রাইভেসি ছিলো না। ধৈর্য্য ধরে ওর সাথে বছর দুয়েক থাকলেই পারতে। এখন এভাবে মরতে হতো না। ওকে ছেড়ে আসাটা সবদিক দিয়ে ভুল ছিলো।

-না, ওটা ভুল ছিলো না। আমি সাথে থাকলে ও এতোদূর আসতে পারতো না। যদিও তখন স্বার্থপরের মতো ছেড়ে চলে আসি, কিন্তু সত্যিই আমি তার জন্য ফিট ছিলাম না। একজন রেডিমেড স্টারের স্ত্রী হবার স্বপ্নে বিভোর ছিলাম। আর তুমিতো আলসেমি করে গাড়ি কেনোনি। আগে বাড়ি কিনেছ।

(২)
অনেক রাত হলো। কিন্তু কেউ ঘুমাচ্ছে না। এখানে রাতভর জোছনা দেখা বাধ্যতামূলক। জনপ্রতি দু'টো করে ব্যক্তিগত চাঁদ। কোন যন্ত্র নেই। সবাই পায়ে হেঁটে নদী পার হয়। নদীর ওপারে পাতাবাহার গাছের বাগান। অনেকে সেখানে গিয়ে গাছের পাতায় ইহজীবনের ভুল লিখে আসে। পরদিন সেসব পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সবাই পাস করে। তাই কাউকে পৃথিবীতে ফিরে যেতে হয় না। এটা হচ্ছে দ্বিতীয় শ্রেণীর পরকাল। সামান্য ভুলে যাদের মৃত্যু ঘটে, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য কিছুদিন আগে এটি নির্মাণ করা হয়। এর আগে সবাইকে সরাসরি প্রথম শ্রেণীর পরকালে পাঠিয়ে দেয়া হতো। ওদের দু:খ দেখে সাধারণ মৃতরা কান্নাকাটি করতো। দু'বার অপবৃষ্টিতে জলোচ্ছ্বাস হয়েছিলো। প্রচুর মানুষ ভাসতে ভাসতে স্বর্গে পৌঁছে গেলে বিশ্রী কেলেংকারি হয়েছিলো। পরে পরকালকে দু'ধাপে উন্নীত করা হয়। এখন আর কোন বিদ্রোহ হয় না।

কাকলি এখনো পাতাবাহার বাগানটি দেখেনি। জীবিত থাকতে ঝরনা কলম দিয়ে বাহারি পাতার উপর কবিতা লিখতো। এখন নদীর ওপারে চোখ গেলেই হাঁটা দেবে। কিন্তু সাজিদ নদী বিভ্রান্তিতে ভুগছে। নদীটি খুব পরিচিত। সাজিদের একটি মৌসুমী নদী ছিলো। বসন্তের শান্ত নদী। তার সাথে চেহারার হুবহু মিল। শুধু স্রোতে পার্থক্য। সাজিদের নদীর স্রোত যেতো বাম পাশে। প্রতি ঢেউয়ের মাঝখানে বিশ্রামের জন্য একটু যায়গা থাকতো। মাঝে মাঝে সেখানে ঘুমিয়ে পড়তো। এ নদীর স্রোত যায় ডান পাশে। ঢেউগুলো বেশ ঘন। খুব ব্যস্ত নদী।

অনেকক্ষণ ধরে জোছনা দেখে যাচ্ছে কাকলি আর সাজিদ। কাকলি পুরোপুরি সেরে উঠেছে। তার মুখ এখন উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। সাজিদের দিকে না তাকিয়ে বললো, "দেখেছো এখানকার জোছনা কী ফর্সা আর মাখা মাখা! কেমন লেপ্টে আছে চারপাশে। নখ দিয়ে তোলা যাবে মনে হয়!"

-পাখিগুলোও বেশ মানিয়ে গেছে জোছনার সাথে। দেখো না, ওরা পৃথিবীর পাখিদের মতো চঞ্চল নয়। কেমন যেন নির্লিপ্ততা আছে। আমাদের উপস্থিতিতে ব্যস্ত হয়নি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর এরা থাকবে না। এরপর আসবে প্রজাপতি। আবার একটা সময় পাখি প্রজাপতি একসাথে আসবে। এখানে সবকিছু রুটিন মাফিক হয়। সূর্য্য ওঠার পর দেখবে এ পথ দিয়ে প্রচুর শকুনকে নিয়ে যাওয়া হবে। এরা সবাই স্বর্গে যাবে। পৃথিবীর বেশিরভাগ হিংস্র প্রাণী স্বর্গে যায়। ওরা পৃথিবীতে মানবতার ভারসাম্য রাখার জন্য কাজ করে। বলতে পারো বিশেষ এসাইনমেন্ট।

-আমাদের বারান্দায় প্রচুর জোছনা পড়তো। আয়না ধরে বেডরুমে জোছনা পাঠানোর কথা মনে আছে? সে আলো গিয়ে পড়তো আমাদের ঘুমিয়ে থাকা মেয়ের গালে। পরে দৌড়ে গিয়ে তার কপালে আদর করে আসতে।

-চাইলে এখানেও জোছনা নিয়ে খেলতে পারো। একটা শুকনো পাতা নিয়ে তুষারগুলো ঝেড়ে ফেলে দাও। পাতাটিকে মিহিগুঁড়ো করো। একেবারে মিহি। এবার জোছনার সাথে ব্লেন্ডিং করো।

-হুমম, ঘ্রাণ বেরুচ্ছে। ওমা! চাঁদ দু’টো দেখি কাছাকাছি চলে আসলো। অদ্ভুততো! আচ্ছা, তুমিতো এখানে আর কখনো আসোনি। কিন্তু এখানকার সংস্কৃতি সম্পর্কে দেখি বেশ ধারনা আছে। এটা কীভাবে?

-তুমিও পারবে। পা দু'টো ঝুলিয়ে না রেখে মাটির সাথে লাগিয়ে রাখো। তারপর সব জেনে যাবে।

পা দু'টো মাটির সাথে লাগিয়ে নদী আর পাতাবাহার বাগানের কথা জেনে গেলো কাকলি। বললো 'বাহ! চলো নদীর ওপারটায় যাই। পাতাবাহারে ভুলগুলো লিখে আসি।'

বলেই হাঁটা দিলো কাকলি। পেছনে পেছনে সাজিদও যাচ্ছে। গাছের পাতায় ভুল লেখার পর পাস করে কাল চলে যাবে প্রথম শ্রেণীর পরকালে। সেখানে আবার নতুন সংস্কৃতি, নতুন নিয়ম। অবশ্য কাকলিদের জন্য কোন নিয়ম নেই। যাদের অনিয়মের মৃত্যু হয়, তাদের জন্য এখানে বিশেষ সুযোগ সুবিধা আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৪৪
২৪টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×