somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ খাদক

০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি লোকটির বয়স আন্দাজ করার চেষ্টা করছি। তার তেমন প্রয়োজন ছিল না। লোকটির বয়সে আমার কিছু যায় আসে না। তবু প্রথম দর্শনেই কেন যেন বয়স জানতে ইচ্ছে করে। তবে লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, লোকটিকে বেশ ঘটা করে আনা হয়েছে। দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে আমার সামনে। আমাদের ঘিরে মোটামুটি একটা ভিড়। লোকটি জ্বলজ্বলে চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মুখ হাসি হাসি। সেই হাসির আড়ালে গোপন একটা অহংকারও আছে। কিসের অহংকার, কে জানে।
খোন্দকার সাহেব আমার দিকে তাকিয়ে ভারী গলায় বললেন, এই সেই লোক।
আমি বললাম, কোন লোক ?
খাদক।
আমি বিস্মিত হয়ে বললাম খাদক মানে ?
খোন্দকার সাহেব অবাক হয়ে বললেন, এর মধ্যেই ভুলে গেছেন ?
রাতে আপনাকে বললাম না,
আমাদের গ্রামে বিখ্যাত এক ব্যক্তি আছে। নামকরা খাদক।
আমার কিছুই মনে পড়ল না। খোন্দকার সাহেব লোকটি ক্রমাগত কথা বলেন। তাঁর সব কথা মন দিয়ে শোনা অনেক আগেই বন্ধ করেছি। কাল রাতে খাদক খাদক বলে কী সব যেন বলেছিলেন। এ-ই তাহলে সেই বিখ্যাত খাদক।
ও আচ্ছা।
আমি ভালো খাদকের দিকে তাকালাম।
রোগা বেঁটে খাটো একজন মানুষ। মাথায় চুল নেই। সামান্য গোঁফ আছে। গোঁফ এবং ভুরুর চুল সবই পাকা; পরিষ্কার একটা পাঞ্জাবি গায়ে। শুধু যে পরিষ্কার তাই না,
ইস্ত্রি করা। পরনের লুঙ্গি গাঢ় নীল রঙের। পায়ে রাবারের জুতা।
জুতা জোড়াও নতুন। সম্ভবত বাক্সে তুলে রাখা হয়। বিশেষ বিশেষ উপলক্ষে পায়ে দেওয়া হয়। যেমন আজ দেওয়া হয়েছে। আমি বললাম,
আপনার নাম কি ?
আমার নাম মতি। খাদক মতি।
এই বলেই সে এগিয়ে এসে পা ছুঁয়ে সালাম করল। বুড়ো একজন মানুষ আমার পা ছুঁয়ে সালাম করবে, আমি এমন কোনো সম্মানিত ব্যক্তি না। খুবই হকচকিয়ে গেলাম। অপ্রস্তুত গলায় বললাম এসব কী করছেন ?
লোকটি বিনয়ে নিচু হয়ে বলল,
আপনি জ্ঞানী লোক, আমি আপনার পায়ের ধুলা। বলেই সে হাত কচলাতে লাগল। তার বলার ধরন থেকেই বুঝা যাচ্ছে এ-জাতীয় কথা সে প্রায়ই বলে। অতীতে নিশ্চয়ই অনেককে বলেছে। ভবিষ্যতেও বলার ইচ্ছা রাখে।
হুজুর, আপনি অনুমতি দিলে পায়ের কাছে একটু বসি।
আরে আসুন, বসুন। অনুমতি আবার কিসের।
লোকটি বসে মাটির দিকে তাকিয়ে রইল। একবারও চোখ তুলল না। তার বিনয় একটা দেখার মতো ব্যাপার।
আমার বিরক্তির সীমা রইল না। গত দুদিন ধরে আমি এই অজপাড়াগাঁয়ে আটকা পড়ে আছি। লঞ্চে এখান থেকে আটপাড়া যাওয়ার কথা। লঞ্চের দেখা নেই। আছি খোন্দকার সাহেবের পাকা দালানে। ইনি এই অঞ্চলের একজন পয়সাওয়ালা মানুষ। নিজের মায়ের নামে স্কুল দিয়েছেন। খোন্দকার সাহেব আমার অতি দূর সম্পর্কের আত্মীয় কিন্তু তাতে কোনো অসুবিধা নেই। আদর-যত্নে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্রামের দর্শনীয় বস্তুর সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পালা। অনেক দর্শনীয় জিনিস এর মধ্যে দেখে ফেলেছি। ভাঙা কালীমন্দির, যেখানে কিছুদিন আগেও নাকি নরবলি হয়েছে। একটা অচিন বৃক্ষ। সে অচিন বৃক্ষটি নাকি এক জাদুকর কামরূপ থেকে এনে পুঁতেছেন। যার ফল খেয়ে যৌবন স্থির থাকে। তবে এই ফল এখানে কেউ খায়নি, কারণ গাছটার ফল হচ্ছে না। তেঁতুল গাছের মতো গাছ দর্শনীয় কিছু নয়, তবু ভাব দেখালাম যে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য দেখছি।
একজন দর্শনীয় বস্তু এই মুহূর্তে আমার পায়ের কাছে মাথা নিচু করে বসে আছে। লোকটি নাকি বিখ্যাত খাদক। এক বৈঠকে আধ মণ গোশত খেতে পারে।
আমি বিন্দুমাত্র উৎসাহ বোধ করছি না। কিন্তু খোন্দকার সাহেবের উৎসাহ সীমাহীন। তিনি অহংকার মেশানো গলায় বললেন, মতি মেডেল পেয়েছে তিনটা। এই প্রফেসর সাহেবকে মেডেল দেখা।
মতি মিয়া পাঞ্জাবির পকেট থেকে মেডেল বের করল। মনে হচ্ছে মেডেল তার পকেটেই থাকে কিংবা আমাকে দেখানোর জন্য সঙ্গে করে নিয়ে আসা হয়েছে। একটা মেডেল দিয়েছেন নেত্রকোনার সিও, রেভেন্যু, একটা আজিজিয়া স্কুলের হেডমাস্টার। অন্যটিতে নামধাম কিছু নেই। আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, একজন লোক পরিমাণে বেশি খায় বলেই তাকে মেডেল দিতে হবে ? দেশটা যাচ্ছে কোন দিকে ?
খোন্দকার সাহেব বললেন, অনেক দূর দূর থেকে লোক এসে মতিকে হায়ার করে নিয়ে যায়।
কেন ?
বাজির খাওয়া হয়। মতি যায়, বাজি জিতে আসে। বরযাত্রীরা সঙ্গে করে নিয়ে যায়। মতির সঙ্গে থাকলে মেয়ের বাড়িতে খাওয়া শর্ট পড়ে। মেয়ের বাপের একটা অপমান হয়। মেয়ের বাপের অপমান সবাই দেখতে চায়।
কিছু না বললে ভালো দেখায় না বলেই বললাম, ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে।
খোন্দকার সাহেব বললেন, মতির রোজগারও খারাপ না। হায়ার করতে হলে তার রেট হচ্ছে কুড়ি টাকা! দূরে কোথাও নিতে হলে নৌকায় আনা-নেওয়ার খরচ দিতে হয়।
আমি বললাম, এইটাই কি প্রফেশন নাকি ? আর কিছু করে না ?
জবাব দিল মতি মিয়া। বিনয় বিগলিত গলায় বলল, খাওয়ার কাম ছাড়া কিছু করি না।
কর না কেন ?
একসঙ্গে দুই-তিনটা কাম করলে কোনোটাই ভালো হয় না। আল্লাহ তায়ালা একটা বিদ্যা দিছে। খাওনের বিদ্যা, অন্য কোনো বিদ্যা দেয় নাই।
আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত বিদ্যার অহংকারে মতি মিয়ার চোখ চিক চিক করতে লাগল। আমি হাসব না কাঁদব বুঝতে পারলাম না। পাগলের প্রলাপ না-কি ? খোন্দকার সাহেব দরাজ গলায় বললেন, সন্ধ্যাবেলায় মতি মিয়ার খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। নিজের চোখে দেখেন। শহরের ১০ জনের কাছে গল্প করতে পারবেন। গ্রাম দেশেও দেখার জিনিস আছে প্রফেসার সাব।
তাতো নিশ্চয়ই আছে। তবে ভাই,
আমাকে দেখানোর জন্যে কিছু করতে হবে না। শুনেই আমার আক্কেল গুড়ুম।
না দেখলে কিছু বুঝবেন না। আধমণ রান্না করা গোশত যে কতখানি সেটা দেখার পর বুঝবেন মতি মিয়া কোন পদের জিনিস। কি রে মতি,
পারবি তো ?
মতি হাসিমুখে বলল, আপনাদের ১০ জনের দোয়া।
খাওয়ার পরে দুই সের চমচমও খাবি। বিদেশি মেহমান আছে, দেখিস,
বেইজ্জত যেন না হই। গ্রামের ইজ্জতের ব্যাপার।
আলহামদুলিল্লাহ। দরকার হইলে জেবন দিয়া দিমু।
একটা লোক জীবন বাজি রেখে খাবে আর আমি বসে বসে দেখব, এর মধ্যে আনন্দের কিছু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ব্যাপারটা কুৎসিত। যদিও অনেক কুৎসিত দৃশ্য আমরা আগ্রহ করে দেখি। মেলায় বা সার্কাসে বিকলাঙ্গ বিকট দর্শন শিশুদের অনেকে আগ্রহ করে দেখতে আসে। এখানেও তাই হবে। মতি মিয়াকে ঘিরে ধরবে একদল মানুষ। তার সঙ্গে আমাকেও বসে থাকতে হবে। উৎসাহ দিতে হবে। ভাগ্যিস সঙ্গে ক্যামেরা নেই। ক্যামেরা থাকলে ছবি তুলতে হতো।
গ্রামে বেশ সাড়া পড়ল বলে মনে হলো। খোন্দকার সাহেব একটা গরু জবাইয়ের ব্যবস্থা করলেন। চমচম আনতে লোক চলে গেল। খোন্দকার সাহেব বললেন, মতি আস্ত গরু খেতে পারবি ? বিশিষ্ট মেহমান আছে। তাঁর সামনে একটা রেকর্ড হয়। ঢাকায় ফিরে উনি কাগজে লিখে দেবেন।
আমি ভয় পেয়ে বললাম, আস্ত গরু খাবার দরকার নেই। একটা কেলেংকারি হবে।
আরে না, মতিকে আপনি চেনেন না। ও ইচ্ছা করলে হাতি খেয়ে ফেলতে পারে। বিরাট খাদক। অতি ওস্তাদ লোক।
এ রকম ওস্তাদ বেশি না থাকাই ভালো। খেয়েই সব শেষ করে দেবে।
আরে না খাওয়াবে কে বলেন ভাই ?
খাওয়ানোর লোক আছে ? লোক নেই। খাওয়া-খাদ্যও নেই। এই গরু জবাই দিলাম, তার দাম তিন হাজার টাকা। দেশের অবস্থা খুব খারাপ রে ভাই।
রান্নার আয়োজন চলছে। মতি মিয়া বসে আছে আমার সামনে। হাসি হাসি মুখে। মাঝে মাঝে বিড়ি খাওয়ার জন্যে বারান্দায় উঠে যাচ্ছে, আবার এসে বসছে। আমি বললাম, এত যে খান, খাওয়ার টেকনিকটা কি ?
মতি মিয়া নড়েচড়ে বসল, উৎসাহের সঙ্গে বলল গোশত চিপা দিয়া রস ফেলাইয়া দিতে হয়। কিছুক্ষণ পর পর একটু কাঁচা লবণ মুখে দিতে হয়। পানি খাওয়া নিষেধ।
তাই নাকি ?
জি্ব। আর চাবাইতে হয় খুব ভালো কইরা। গোশত যখন মুখের মধ্যে তুলার মতো হয় তখন গিলতে হয়।
কায়দা-কানুন তো অনেক আছে দেখি।
বসারও কায়দা আছে। বসতে হয় সিধা হইয়া যেন পেটের উপর চাপ না পড়ে।
এই সব শিখেছেন কোত্থেকে ?
নিজে নিজে বাইর করছি জনাব। ওস্তাদ কেউ ছিল না। আমারে তুমি কইরা বলবেন। আমি আপনার গোলাম।
মতি মিয়া খুব আগ্রহ নিয়ে নানান ধরনের গল্প শুরু করল। সবই খাদ্যবিষয়ক। দুই বছর আগে কোনো এক প্রতিমন্ত্রী নাকি নেত্রকোনা এসেছিলেন। মতি মিয়া তাঁর সামনে আধমণ জিলেপি খেয়ে তাঁকে বিস্মিত করেছে।
খাইতে খুব কষ্ট হইছে জনাব।
কষ্ট কেন ?
জিলাপির ভিতরে থাকে রস। রসটা গণ্ডগোল করে।
মন্ত্রী সাহেব খুশি হয়েছিলেন ?
জি্ব খুব খুশি। ছবি তুলেছিলেন। ২০০ টেকাও দিছেন। বিশিষ্ট ভদ্রলোক। বলছিলেন ঢাকায় নিয়া যাবেন,
পেসিডেন সাহেবের সামনে খাওনের ব্যবস্থা করবেন। পেসিডেন সাবরে খুশি করতে পারলে কপাল ফিরত। কথা ঠিক না
?
খুব ঠিক। আমাদের প্রেসিডেন্ট সাহেব কবি মানুষ। খুশি হলে হয়তো আপনাকে নিয়ে কবিতাও লিখে ফেলতেন।
মতি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল।
আমি বললাম, আপনার ছেলেমেয়ে কি ? তারাও কী খাদক নাকি ?
জি্ব না। তারা না-খাওন্তির দল। খাইতে পায় না। কাজ কামতো কিছুই করি না, খাওয়ামু কি ? তারা হইল গিয়ে আফনের দেখক।
সেটা আবার কি ?
তারা দেখে। আমি যখন খাই, তখন দেখে। দেখনের মধ্যে আরাম আছে।
মতি মিয়া বিমর্ষ হয়ে পড়ল। এই প্রথম বারান্দায় না গিয়ে আমার সামনেই বিড়ি ধরিয়ে খক খক করে কাশতে লাগল।
খাওয়া শুরু হলো রাত ১০টার দিকে। একটা হ্যাজাক জ্বালিয়ে উঠোনে খাবার আয়োজন হয়েছে। এই প্রচণ্ড শীতে কাঁথা গায়ে গ্রাম ভেঙে লোকজন এসেছে। মতি মিয়া খালি গায়ে আসনপিঁড়ি হয়ে বসেছে। ধ্যানস্থ মূর্তির মতি মিয়ার ছেলেমেয়েগুলোকেও দেখলাম। পেট বের হওয়া হাড় জিরজিরে কয়েকটি শিশু। চোখ বড় বড় করে বাবার খাবার দেখছে। শিশুগুলো ক্ষুধার্ত। হয়তো রাতেও কোনো কিছু খায়নি। মতি একবারও তার বাচ্চাগুলোর দিকে তাকাচ্ছে না।
খোন্দকার সাহেব গ্রামের বিশিষ্ট কিছু লোকজনকে এই উপলক্ষে দাওয়াত করেছেন। স্কুলের হেডমাস্টার, গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজার, থানার ওসি সাহেব,
পোস্টমাস্টার সাহেব। সামাজিক মেলামেশার একটি উপলক্ষ। বিশিষ্ট মেহমানদের জন্যে খাসি জবেহ হয়েছে। দস্তরখানা বিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আলোচনায় প্রধান বিষয় ইলেকশন। ভাব-ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে খোন্দকার সাহেব ইলেকশনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন। এর আগেরবার হেরেছেন। এবার হারতে চান না। জিততে চান এবং দেশের কাজ করতে চান।
অতিথিরা রাত ১২টার দিকে বিদেয় হলেন। জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। মতি মিয়াকে ঘিরে যারা বসে আছে তাদেরকে শীতে কাবু করতে পারছে না। খড়ের আগুন করা হয়েছে। সেই আগুনের চারপাশে সবাই বসে। শুধু মতি মিয়ার ছেলেমেয়েরা তার বাবার চারপাশে বসে আছে। তীক্ষ্ন দৃষ্টিতে তার বাবার খাওয়া দেখছে। মতি মিয়া ফিরেও তাকাচ্ছে না। তার গা দিয়ে টপ টপ করে ঘাম পড়ছে। চোখ দুটি মনে হচ্ছে একটু ঠেলে বেরিয়ে এসেছে। আমার মনে হয় পিতলের এই বিশাল হাঁড়ির মাংস শেষ করবার আগেই লোকটা মারা যাবে। আমি হবো মৃত্যুর উপলক্ষ। মনটাই খারাপ হয়ে গেল। পুরো ব্যাপারটাই কুৎসিত। একদল ক্ষুধার্ত মানুষ একজনকে ঘিরে বসে আছে। সে খেয়েই যাচ্ছে।
খোন্দকার সাহেব এসে আমার পাশে দাঁড়ালেন। হাসি মুখে বললেন কেমন দেখছেন ?
ভালোই।
বলছিলাম না বিরাট খাদক।
তাইতো দেখছি।
শুয়ে পড়েন। শেষ হতে দেরি হবে। সকাল ১০টার আগে শেষ হবে না। এখন খাওয়া স্লো হয়ে যাবে।
তাই নাকি ?
জি্ব। শেষের দিকে এক টুকরো গোশত গিলতে ১০ মিনিট সময় নেয়। আমি মতির দিকে তাকিয়ে বললাম,
কী মতি খারাপ লাগছে ?
জ্বে না।
খারাপ লাগলে বাদ দাও। বাকিটা তোমার বাচ্চারা খেয়ে নেবে।
খোন্দকার সাহেব বললেন, অসম্ভব একটা রেকর্ড করছে দেখছেন না ?
তুমি চালিয়ে যাও মতি। ভাই,
আপনি গিয়ে শুয়ে পড়ুন।
আমি শুয়ে পড়লাম। শুয়ে শুয়ে অনেক চেষ্টা করলাম মতি মিয়ার চরিত্রে কিছু মানবিক গুণ ঢুকিয়ে দিতে। নানাভাবেই তা সম্ভব! রাত ১টার দিকে যদি মতি মিয়া ঘোষণা করে বাকি গোশত আমি খাব না। হার মানলাম। এখানে যারা আছে তারা খাক। তাহলেই হয়।
কিংবা দৃশ্যটা আরো হৃদয়স্পর্শী হয় যদি শেষ দৃশ্যটি এরকম হয় মতি মিয়ার বাচ্চারা সব ঘুমিয়ে পড়েছে, একজন শুধু জেগে আছে। মতি মিয়া গোশতের শেষ টুকরাটি মুখে তুলে দিয়ে থমকে যাবে। মুখে না দিয়ে এগিয়ে দেবে শিশুটির দিকে। সবাই তখন চেঁচিয়ে উঠবে,
কর কি কর কি? বাজিতে হেরে যাচ্ছ তো। এটাও খাও।
মতি মিয়া দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলবে, হারলে হারব।
কিন্তু বাস্তবে তা হবে না। সকাল ১০টা হোক, ১১টা হোক মতি মিয়া খাওয়া শেষ করবে।
বাচ্চাগুলো তাদের বাবার দিকে তাকিয়ে থাকবে এক টুকরা গোশতের আশায়।সে কোনো দিকে ফিরেও তাকাবে না।
এত মায়া মমতা দেখালে খাদক হওয়া যায় না।

ছবি গুগল
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৪২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×