somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানখুলনা
জীবন পথে চলার এক অচেনা পথিক আমি। হাটি হাটি পা পা করে অনেক দূর পৌছে গেছি। মাঝে মাঝে পিছনে ফিরে তাকাই কিছু সুখ কিছু দু:খ আর স্মরনীয় কিছু ছোট ছোট মুহুর্ত মনের জানালায় উকি দেয়। আমরা বেচেথাকি শুধুমাত্র বিভিন্ন লক্ষ পুরোণের জন্য।

"তবুও ভালোবাসি"

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেক অনেক রাতে যখন আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল
অপূর্ণ কোন স্বপ্নদৃশ্যে তোমাকে দেখে যেন কয়েক
মুহূর্তের জন্যে মনে হলো বাস্তব হয়ে তুমি বসে
আছো আমার পাশে।বালিশের অসমান্তরাল উঁচু নিচু
ধাপগুলো পেরিয়ে দৃষ্টির সীমানায় তোমাকে হাতড়ে
বেড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা।কল্পনার জগত থেকে যখন
বাস্তবে ফিরে এলাম নিজেকে কেমন যেন অসহায়
লাগছিল আমি বুঝতে পারলাম আজও বুকের বাঁপাশে
হৃদয়ের স্পন্দনে তোমাকে অনুভব করি আমি।ঘুমহীন
চোখে যখন হলের বিশাল বারান্দায় এসে বৃষ্টির
টাপুর টুপুর শব্দ শুনলাম হাতদুটো বাড়িয়ে বৃষ্টির
জলের ঝাপটায় চেতনায় ফিরে এসে আমার মনটা যেন
অবশ হয়ে গেলো মুহূর্তের মধ্যে।অতীতের স্মৃতি
হাতড়ে আমি ভাবতে লাগলাম তোমার সাথে পরিচয়ের
প্রথম বেলার স্মৃতি। সেদিনও বৃষ্টি ছিলো।
বর্ষাস্নাত কোন এক রাতে এই হলের বারান্দায়
দাঁড়িয়েই তোমাকে প্রথম ফোন করা।তোমার কণ্ঠ
শুনেই বুকের মধ্যে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছিলাম
আমি।অনেক অনুরোধের পর অপরিচিত মানুষটির
সাথে মুঠোফোনের কয়েক মুহূর্তের আলাপন পাল্টে
দিয়েছিলো আমার জীবনধারা।পরেরদিন ক্লাস
লেকচারগুলো কেমন যেন শব্দহীন হয়ে
গিয়েছিলো,৪৫ মিনিটের লেকচারকে মনে হয়েছিল
কয়েক ঘণ্টাব্যাপী যেন এক সেমিনার।এরপর
আমাদের যোগাযোগ বাড়তে থাকলো মিষ্টি
কথামালায়।প্রতিদিন অজস্র কথা হতো আমাদের।
আমার কথাগুলো ধীরে ধীরে স্বাপ্নিক আর
রোম্যান্টিক হয়ে উঠেছিলো তোমার কাছে। তুমি
মেডিকেল কলেজ এ পড়তে তাই রাত জেগে পড়তে
হতো তোমাকে।প্রায় রাতেই আমি অপেক্ষার প্রহর
গুনতে গুনতে ঘুমিয়ে পড়তাম।ফোন ধরতে পারতাম
না বলে তোমার সে কি অভিমানই না হতো।
পরেরদিন ঠিক ঠিক ফোন ধরবো বলেই রেহাই পেতাম
আমি।সকাল আটটার তোমার ক্লাসটা কেমন যেত
জানি না তবে আমার ক্লাসটা ভালো যেত না
সেদিন,স্যারকে যে কি যা তা বলতাম সকালবেলা
ক্লাস দেওয়ার জন্য।পড়াশুনার চাপের মাঝেও
তোমার সাথে যে কয়েক মুহূর্ত কথা হতো সব
ক্লান্তি যেন ঝরে যেত এক নিমিষেই।কখন যে তুমি
আমার জীবনের খুব কাছের একজন হয়ে গিয়েছিলে
বুঝতেই পারিনি।আমিও হয়ত খুব কাছের একজন হয়ে
গিয়েছিলাম তোমার।মনে আছে তোমার কত পাগলামি
না করতাম আমি।কথা বলতে বলতে যখন ফোনের
টাকা শেষ হয়ে যেত,সেই গভীর রাতে হলের বন্ধুদের
রুমে রুমে তল্লাশি করে কার্ড খুঁজতাম।যদি খুঁজে না
পেতাম রাতের নির্জন যান্ত্রিক শহরে ভয়হীন
চোখে চলে যেতাম কার্ড এর দোকানের খোঁজে।তুমি
কত করে বলতে যেতে হবে না তবু যেতাম।আমি
বুঝতে পারতাম ভালবাসার কথামালা শেষ হয়নি
তখনও।কত রাত যে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়তে
তুমি,তোমার ঘুম জড়ানো কণ্ঠটা কতটা প্রিয় যে
হয়ে উঠেছিলো আমার কাছে। এক শহরে থাকতাম না
বলে খুব একটা দেখা হতো না আমাদের তবু কখনও
মনেই হতো না আমাদের দূরত্ব আমাদের
ভালোবাসাকে আলাদা করতে পেরেছিল।তবুও প্রতিটি
সন্ধায় যখন কোলাহল মুখর এ ক্যাম্পাসে এক
কোনায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতাম মাঝে মাঝে
সীমাহীন নির্জনতায় হারিয়ে যেতাম।মেয়েদের হলের
বাহিরে যখন অপেক্ষারত কোন যুবকের চোখে চোখ
পড়তো এক পলকের জন্য হলেও ভাবতাম তুমি যদি
এই হলেই থাকতে। টিএসসির ফুচকা আর চটপটিতে
তোমাকে মিস করতাম,বইমেলায় স্টলে স্টলে ঘুরতে
থাকায় তোমাকে মিস করতাম,পহেলা বৈশাখের
উৎসবমুখর পরিবেশের হাজার মানুষের ভীরেও
তোমাকে মিস করতাম,রাতে হলে ফেরার পথে ফুলার
রোডের প্রেমিক প্রেমিকাদের ভালোবাসার চাহনিতে
তোমাকে মিস করতাম।হয়তো বর্ষার প্রথম দিনে
কদমফুল হাতে ভালোবাসার কথা জানাতে পারতাম না
আমি,কিংবা কোন কবিতা পাঠের আসরে তোমার
চোখে চোখ রেখে বলা হত না ভালবাসি,কোন
বৃষ্টিভেজা দুপুরে এক ছাতার নীচে পথচলা হত না
আমাদের তবু বিশ্বাস কর একবারও মনে হত না
তুমি পাশে নেই আমার। কোন এক পূর্ণিমার রাতে
যখন আকাশের এক কোনায় চাঁদটা উঠত আমরা
দুজন একসাথেই তো চাঁদটা দেখতাম পাশাপাশি হয়তো
দেখা হতো না তবু একি আকাশের নিচেই তো ছিলাম
আমরা।কোন এক সন্ধায় তোমাকে যখন খুব দেখতে
ইচ্ছে করতো আমি ফোন করে বলতাম তোমার কি
কোন নীল রঙের শাড়ি আছে যদি থাকে তুমি কি
এখনি নীল রঙের একটা শাড়ি পরে তোমাদের ছাদে
উঠে কার্নিশ ধরে নীচের দিকে তাকাবে?আমি
তোমাদের বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলে
যাব।এমনটা কোনদিন হতো না তবু তুমি যত্ন করে
শাড়ি পরে চুল বেঁধে চোখে কাজলের ছোঁয়া লাগিয়ে
ছাদের কার্নিশ ধরে দাঁড়াতে,কত ছেলেমানুষী না ছিল
আমাদের। মনেপড়ে প্রথম দেখা হওয়ার স্মৃতি।
মেডিকেল কলেজের রাস্তার এক পাশে আমি আর
অন্যপাশে তুমি কত উৎকণ্ঠা, কত উৎচ্ছাস।প্রথম
দেখা আমার ভালোবাসার মানুষটিকে।সেদিন আমরা
একসাথে পাশাপাশি হেঁটেছিলাম অনেকক্ষণ।কত
কথা,না বলা অভিব্যক্তি,কত হাসাহাসি।বটগাছের
এক পাড় বাঁধানো বৃত্তে বসে সামনা সামনি প্রথম
বলা আমি তোমাকে ভালবাসি,তুমি আমাকে বিয়ে
করবে?তুমি অনেক হেসেছিলে।আবার হাঁটতে হাঁটতে
তোমার হাত ধরতে চাওয়া,অনেক সংকোচের পর
কয়েক মুহূর্তের জন্য তোমার হাতের স্পর্শ
পাওয়া।একসাথে প্রথম তোমার সাথে রিকশায় চড়ার
অনুভূতি,এক ইঞ্চি দূরত্বে থাকা তুমি কি বুঝতে
পেরেছিলে আমার ভিতরে তখন কি ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
ভালোবাসা নাকি টের পাওয়া যায়,তুমি কি সেদিন টের
পেয়েছিলে? মেঘের বিকট শব্দে বাস্তবতায় ফিরে
আসি আর মনে মনে ভাবতে থাকি কি এমন ক্ষতি
হত বিধাতার যদি তুমি আমার হতে একটা জীবনে
এতটা ভালোবেসে আমার যে আর কিছুই চাইবার ছিল
না।আমার ভিতরটা শূন্যতায় ভরে উঠে যতবার
ভাবি এই তোমাকে হারিয়ে ফেলবো আমি।আস্তে
আস্তে তুমি হারিয়ে যাবে কোন এক অজানা
ঠিকানায়।আমার ভালোবাসার আকাশটা আরও নীল
হয়ে যাবে বেদনায়,আমার ভালোবাসার রংধনু গুলো
আস্তে আস্তে মুছে যাবে।আমার কান্নাগুলো আজ
বড় অর্থহীন লাগে তোমার কাছে,তোমার অপারগতা
গুলো নীরবে কাঁদায় তোমাকে।আমি ঘুমহীন চোখে
তোমার বলতে না পারা অপারগতার উত্তর খুঁজি
আর প্রতিদিন বলি তবুও ভালোবাসি তোমাকে।
আমার ভালোবাসার সবকটি নীলপদ্মই যে তোমার
কাছে,,,,,,,
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×