somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামী রাজনীতি/ইসলামী রাষ্ট্র বিহীন ইসলাম কোন ইসলামই নয় : পর্ব-২১ - দোয়ার ব্যর্থতা

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জেহাদ- অর্থাৎ সশস্ত্র সংগ্রাম সহ সব রকম সংগ্রাম- যেটা করার জন্যই এই উম্মতে মোহাম্মদীকে সৃষ্টি করা হোয়েছিলো এবং যা হোচ্ছে রসুলুল্লাহর (দঃ) প্রকৃত সুন্নাহ এবং যা ত্যাগ কোরলে কেউ প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী থাকেন না সেই জেহাদ ত্যাগ করার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হলো আকীদার বিকৃতি। আর আকীদার বিকৃতি হোলে ঈমানেরও কোন দাম থাকে না। অবশ্য জেহাদ ত্যাগ করার ফলই আকীদার বিকৃতি, নাকি আকীদার বিকৃতির ফলেই জেহাদ ত্যাগ এটা নিশ্চিত কোরে বলা মুশকিল। কিন্তু ঐতিহাসিক সত্য হলো এই যে মহানবীর (দঃ) পর ৬০/৭০ বছর পর্য্যন্ত ঐ সংগ্রাম ‘জেহাদ' চলেছিলো এবং তারপর তা বন্ধ করা হয় এবং উমাইয়া খলিফারা নামে খলিফা থেকেও আসলে পৃথিবীর আর দশটা রাজা-বাদশাহর মত শান-শওকতের সঙ্গে রাজত্ব করা আরম্ভ করেন। যে আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ(Allah) তার সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ রসুলকে (দঃ) পৃথিবীতে প্রেরণ করেন, যে আদর্শকে প্রতিষ্ঠার জন্য সেই রসুল (দঃ) এবং আসহাব (রাঃ) অমানুষিক নির্য্যাতন সহ্য করেন, জীবনের সমস্ত কিছু কোরবান করে তাদের নেতার পাশে এসে দাঁড়িয়ে জেহাদ করেন, আহত হন, প্রাণ দেন- সেই আদর্শকে ত্যাগ করার অনিবার্য পরিণতি কি হলো তা ইতিহাস এবং সে সম্বন্ধে কিছু পেছনে বোলে এসেছি। পুনরাবৃত্তি হোলেও এখানে আবার তা উল্লেখ কোরতে চাই। কারণ এই ব্যাপারটির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব এত বেশী যে তা যথেষ্ট কোরে বলা সম্ভব নয়। এই শেষ দ্বীনকে সমস্ত পৃথিবীতে প্রয়োগ ও কার্যকরী কোরে, মানুষে মানুষে সমস্ত বিভেদ মিটিয়ে দিয়ে, মানব জাতিকে একটি মাত্র মহাজাতিতে পরিণত কোরে, সমস্ত যুদ্ধ-রক্তপাত বন্ধ কোরে, সমস্ত অন্যায় অবিচার নির্মূল কোরে শান্তি (ইসলাম) প্রতিষ্ঠা করার আপোষহীন সংগ্রাম ত্যাগ করার অর্থাৎ লক্ষ্যবিচ্যুত হওয়ার যে সব ফল হলো তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো ক) ঈমানের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ আকীদা বিকৃত হয়ে গেলো। (খ) আল্লাহ(Allah) ও রসুল (দঃ) যে কাজ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ কোরে দিয়েছিলেন সেই কাজ, দ্বীনের সংবিধান কোরান হাদীসের অতি বিশ্লেষণ অর্থাৎ দ্বীন নিয়ে বাড়াবাড়ি জোরে-শোরে ধুমধামের সাথে আরম্ভ করা হলো। ফলে লক্ষ্যচ্যুত জাতি বহু মাযহাবে ও ফেরকায় বিভক্ত হোয়ে শুধু শক্তিহীন হোয়েই পড়লো না, বিভিন্ন মযহাব ও ফেরকার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নির্জীব হোয়ে গেলো। (গ) এরপর ভারসাম্যহীন সুফীবাদ এই খণ্ড-বিখণ্ড ও নির্জীব জাতির মধ্যে প্রবেশ কোরে এর বহির্মুখী দৃষ্টি ও চরিত্রকে উল্টো কোরে অন্তর্মুখী কোরে দিলো। এরপর এ জাতি, যে জাতি পৃথিবীর সমস্ত অন্যায়কারী- সমস্ত নির্যাতক- সমস্ত অবিচারক ও অত্যাচারী ব্যবস্থার ত্রাসে পরিণত হোয়েছিলো- জ্ঞান-বিজ্ঞানে পৃথিবীর শিক্ষক হোয়ে নতুন নতুন জ্ঞানের দুয়ার পৃথিবীর মানুষের জন্য খুলে দিয়েছিলো- নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে মানব সভ্যতাকে সমৃদ্ধ কোরেছিলো, তা একটি অশিক্ষিত অজ্ঞ, প্রায় পশু পর্য্যায়ের জনসংখ্যায় পর্যবর্সিত হোয়ে গেলো এবং পরিণামে ইউরোপের বিভিন্ন খ্রীস্টান জাতিগুলির গোলামে পরিণত হলো।

কয়েকশ' বছর ঘৃণ্য দাসত্বের পর কিছুদিন থেকে প্রকাশ্যভাবে স্বাধীনতা পেলেও এই জনসংখ্যা প্রকৃতপক্ষে আজও আদর্শগত ও মানসিকভাবে সেই গোলামই আছে, বোধহয় গোলামী যুগের চেয়েও বেশীভাবে আছে। এই শক্তিহীন অক্ষম ব্যর্থ জাতির এখন একমাত্র কাজ হোচ্ছে আল্লাহ(Allah)র কাছে দোয়া চাওয়া। এর ধর্মীয় নেতারা, আলেম, মাশায়েখরা এই দোয়া চাওয়াকে বর্তমানে একটি আর্টে শিল্পে পরিণত কোরে ফেলেছেন। লম্বা সময় ধোরে এরা লম্বা ফর্দ ধোরে আল্লাহ(Allah)র কাছে দোওয়া কোরতে থাকেন যেন এদের দোয়া মোতাবেক কাজ করার জন্য আল্লাহ(Allah) অপেক্ষা কোরে বোসে আছেন। মাঝে মাঝে বিশেষ (Special) দোয়া ও মোনাজাতেরও ডাক দেওয়া হয় এবং তাতে এত লম্বা সময় ধোরে মোনাজাত করা হয় যে হাত তুলে রাখতে রাখতে মানুষের হাত ব্যথা হোয়ে যায়। কিছুদিন আগে লাউড স্পিকারে এক ‘ধর্মীয় নেতার' বাদ ওয়াজ দোয়া শুনছিলাম। তিনি আল্লাহ(Allah)র কাছে লিষ্ট মোতাবেক দফাওয়ারী (Item by Item) বিষয় চাইতে লাগলেন। বেশীর ভাগ বিষয়ই তাসাওয়াফের ব্যাপারে, তবে ইসরাইল রাষ্ট্রকে ধ্বংস কোরে বাইতুল মোকাদ্দাসকে মুসলিম(Muslim)দের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার একটা দফা ছিলো, এবং দুনিয়ার মুসলিমের ঐক্যও একটা দফা ছিলো। ছত্রিশটা দফা গোনার পর আর গোনার ধৈর্য ছিলোনা। তবে ওর পরও যতক্ষণ দোয়া চলেছিলো, তাতে মনে হয় মোট কমপক্ষে শ'খানেক বিষয়ে আল্লাহ(Allah)র কাছে দোয়া চাওয়া হোয়েছিলো। অর্থাৎ আল্লাহ(Allah)- ঐ শ'খানেক বিষয় তুমি আমাদের জন্য করে দাও। অজ্ঞানতা ও বিকৃত আকীদার কারণে এরা ভুলে গেছেন যে কোন জিনিসের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা না কোরে শুধু তার কাছে চাইলেই তিনি তা দেন না, ওরকম দোয়া তার কাছে পৌঁছে না। আল্লাহ(Allah) তার শ্রেষ্ঠ নবী (দঃ) তার হাবিব কে যে কাজের ভার দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন সে কাজ সম্পন্ন কোরতে তাকে কি অপরিসীম পরিশ্রম কোরতে হোয়েছে, কত অপমান-বিদ্রুপ-নির্য্যাতন-পীড়ন সহ্য কোরতে হোয়েছে- যুদ্ধ কোরতে হোয়েছে- আহত হোতে হোয়েছে। তিনি ওসব না কোরে বোসে বোসে আল্লাহ(Allah)র কাছে দোয়া কোরলেই তো পারতেন আমাদের ধর্মীয় নেতাদের মত। আল্লাহ(Allah)র কাছে বিশ্বনবীর (দঃ) দোয়াই বড়, না আমাদের আলেম মাশায়েখদের দোয়াই বড়? দোয়াতেই যদি কাজ হতো তবে আল্লাহ(Allah)র কাছে যার দোয়ার চেয়ে গ্রহণযোগ্য আর কারো দোয়া নেই- সেই রসুল (দঃ) ঐ অক্লান্ত প্রচেষ্টা (জেহাদ) না কোরে শুধু দোয়াই কোরে গেলেন না কেন সারাজীবন ধরে? তিনি তা করেননি, কারণ তিনি জানতেন যে প্রচেষ্টা (আমল জেহাদ) ছাড়া দোয়ার কোন দাম আল্লাহ(Allah)র কাছে নেই। সেই সর্বশ্রেষ্ঠ নবী (দঃ) দোয়া যে করেননি তা নয়; তিনি কোরেছেন, কিন্তু যথা সময়ে কোরেছেন অর্থাৎ চূড়ান্ত প্রচেষ্টার পর, সর্বরকম কোরবানীর পর, জান বাজী রাখার পর যখন আমলের আর কিছু বাকি নেই তখন। বদরের যুদ্ধ শুরু হবার ঠিক আগের মুহুর্তে যখন মুজাহিদ আসহাব তাদের প্রাণ আল্লাহ(Allah)র ও রসুলের জন্য কোরবানী করার জন্য তৈরী হোয়ে সারিবদ্ধ হোয়ে দাঁড়িয়েছেন, এখনই যুদ্ধ আরম্ভ হবে, শুধু সেই সময় আল্লাহ(Allah)র হাবিব আল্লাহ(Allah)র কাছে দোয়া কোরলেন তার প্রভুর সাহায্য চেয়ে। ঐ দোয়ার পেছনে কি ছিলো? ঐ দোয়ার পেছনে ছিলো আল্লাহ(Allah)র নবীর (দঃ) চৌদ্দ বছরের অক্লান্ত সাধনা, সীমাহীন কোরবানী, মাতৃভূমি ত্যাগ কোরে দেশত্যাগী হোয়ে যাওয়া, পবিত্র দেহের রক্তপাত ও আরও বহু কিছু। এবং শুধু তার একার নয়। ঐ যে তিনশ' তেরজন ওখানে তাদের প্রাণ উৎসর্গ করার জন্য নামাযের মত সারিবদ্ধ হোয়ে দাঁড়ানো ছিলেন তাদেরও প্রত্যেকের পেছনে ছিলো তাদের আদর্শকে, দ্বীনকে প্রতিষ্ঠার জন্য অক্লান্ত প্রচেষ্টা, দ্বিধাহীন কোরবানী, নির্মম নির্য্যাতন সহ্য করা। প্রচেষ্টার শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে শেষ সম্বল প্রাণটুকু দেবার জন্য তৈরী হোয়ে দাঁড়িয়ে ঐ দোয়া কোরেছিলেন মহানবী (দঃ)। ঐ রকম দোয়া আল্লাহ(Allah) শোনেন, কবুল করেন, যেমন কোরেছিলেন বদরে। কিন্তু প্রচেষ্টা নেই, বিন্দুমাত্র সংগ্রাম নেই, ঘন্টার পর ঘন্টা হাত তুলে দোয়া আছে অমন দোয়া আল্লাহ(Allah) কবুল করেন না। বদরের ঐ দোয়ার পর সকলে জেহাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, অনেকে জান দিয়েছিলেন, আমাদের ধর্মীয় নেতারা দোয়ার পর পোলাও কোর্মা খেতে যান। ঐ দোয়া ও এই দোয়া আসমান যমীনের তফাৎ।

আল্লাহ(Allah) বোলেছেন, "যে যতখানি চেষ্টা কোরবে তার বেশী তাকে দেয়া হবে না (কোরান- সূরা আন-নজম ৩৮)।" মসজিদে, বিরাট বিরাট মাহফিলে, লক্ষ লক্ষ লোকের এজতেমায় যে দফাওয়ারী দোয়া করা হয়, যার মধ্যে মসজিদে আকসা উদ্ধার অবশ্যই থাকে- তাতে যারা দোয়া করেন তারা দোয়া শেষে দাওয়াত খেতে যান, আর যারা আমীন আমীন বলেন তারা যার যার ব্যবসা, কাজ, চাকরী ইত্যাদিতে ফিরে যান, কারুরই আর মসজিদে আকসার কথা মনে থাকে না। ওমন দোয়ায় বিপদ আছে, হাত ব্যাথা করা ছাড়াও বড় বিপদ আছে, কারণ ওমন দোয়ায় আল্লাহ(Allah)র সাথে বিদ্রুপ করা হয়। তার চেয়ে দোয়া না করা নিরাপদ। যে পড়াশোনাও করে না পরীক্ষাও দেয় না- সে যদি কলেজের প্রিন্সিপালের কাছে যেয়ে ধর্ণা দেয় যে, আমি পরীক্ষা দেব না কিন্তু আমার ডিগ্রী চাই, ডিগ্রী দিতে হবে। তবে সেটা প্রিন্সিপালের সঙ্গে বিদ্রুপের মতই হবে। আমাদের দোয়া শিল্পীরা, আর্টিষ্টরা লক্ষ লক্ষ লোকের এজতেমা, মাহফিলে দোয়া করেন- হে আল্লাহ(Allah)! তুমি বায়তুল মোকাদ্দাস ইহুদীদের হাত থেকে উদ্ধার কোরে দাও এবং এ দোয়া কোরে যাচেছন ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্ম থেকে, চল্লিশ বছরের বেশী সময় ধোরে। ঐ সময়ে যখন দোয়া করা শুরু কোরেছিলেন তখন দোয়াকারীরা আজকের চেয়ে সংখ্যায় অনেক কম ছিলেন, কারণ তখনকার কথা আমার মনে আছে এবং ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তনও এখনকার চেয়ে অনেক ছোট ছিলো। যেরুসালেম ও মসজিদে আকসা তখন ইসরাইল রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলো না। এই মহা মুসলিম(Muslim)দের প্রচেষ্টাহীন, আমলহীন দোয়া যতই বেশী লোকের সমাবেশে এবং যতই বেশী লম্বা সময় ধোরে হোতে লাগলো ইহুদীদের হাতে আরবরা ততই বেশী মার খেতে লাগলো আর ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তনও ততই বড়তে লাগলো। আজ শুনি কোন জায়গায় নাকি আট/দশ লক্ষ 'মুসলিম(Muslim)' একত্র হোয়ে আসমানের দিকে দু'হাত তুলে দুনিয়ার মুসলিমের ঐক্য, উন্নতি ইত্যাদির সাথে তাদের প্রথম কেবলা বায়তুল মোকাদ্দাসের মুক্তির জন্য দোয়া করে। আর আজ ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তন প্রথম অবস্থার চেয়ে তিন গুণ বড় এবং পূর্ণ যেরুসালেম শহর বায়তুল মোকাদ্দাসসহ মসজিদে আকসা তাদের দখলে চলে গেছে। এবং মুসলিম(Muslim) জাতির ঐক্যের আরও অবনতি হোয়েছে এবং বর্তমান খ্রীস্টান, ইহুদী, বৌদ্ধ এবং হিন্দুদের হাতে আরও অপমানজনক মার খাচ্ছে। অর্থাৎ এক কথায় এরা এই বিরাট বিরাট মাহফিলে, এজতেমায়, মসজিদে, সম্মেলনে যা যা দোয়া কোরছেন, আল্লাহ(Allah) তার ঠিক উল্টোটা কোরছেন। যত বেশী দোয়া হোচ্ছে, বেশী লোকের হোচ্ছে, বেশী লম্বা হোচ্ছে, তত উল্টো ফল হোচ্ছে। সবচেয়ে হাস্যকর হয় যখন এই অতি মুসলিম(Muslim)রা গৎ বাঁধা দোয়া কোরতে কোরতে 'ফানসুরনা আলা কওমেল কাফেরিন' এ আসেন। অর্থ হোচ্ছে " হে আল্লাহ(Allah)! অবিশ্বাসীদের (কাফেরদের) বিরুদ্ধে (সংগ্রামে) আমাদের সাহায্য কর।" আল্লাহ(Allah)র সাথে কি বিদ্রুপ। অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের লেশমাত্র নেই, দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম নেই, পৃথিবীর দু'চার যায়গায় কাফের মোশরেকদের সঙ্গে যা কিছু সংগ্রাম চলছে তাতে যোগ দেয়া দূরের কথা, তাতে কোন সাহায্য পর্য্যন্ত দেয়ার চেষ্টা নেই, শুধু তাই নয় গায়রুল্লাহর, খ্রীস্টানদের তৈরী জীবন-ব্যবস্থা জাতীয় জীবনে গ্রহণ কোরে নিজেরা যে শেরক ও কুফরীর মধ্যে আকণ্ঠ ডুবে আছেন এমন কি তার বিরুদ্ধে যেখানে সংগ্রাম নেই সেখানে কুফরের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আল্লাহ(Allah)র সাহায্য চাওয়ার চেয়ে হাস্যকর আর কী হোতে পারে? এ শুধু হাস্যকর নয়, আল্লাহ(Allah)র সাথে বিদ্রুপও। তা না হোলে দোয়ার উল্টো ফল হোচ্ছে কেন? যারা দোয়া করাকে আর্টে পরিণত কোরে, কর্মহীন, প্রচেষ্টাহীন, আমলহীন, কোরবানীহীন, সংগ্রামহীন দোয়া কোরছেন তারা তাদের অজ্ঞতায় বুঝছেন না যে তারা তাদের ঐ দোয়ায় আল্লাহ(Allah)র ক্রোধ উদ্দীপ্ত কোরছেন, আর তাই দোয়ার ফল হোচ্ছে উল্টো। তাই বলছি ঐ দোয়ার চেয়ে দোয়া না করা নিরাপদ।

আসল কথা হোচ্ছে এই যে, আল্লাহ(Allah) সর্ব শক্তিমান এমন কিছু নেই যা তিনি কোরতে পারেন না। কিন্তু তিনি দেখতে চান আমরা কি করি। তার সর্বশ্রেষ্ঠ নবীকে (দঃ) তিনি যে কাজে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন সেই কাজ কোরতে সেই নবীকে (দঃ) তার সারা জীবন ধোরে কি অপরিসীম কষ্ট, কি অক্লান্ত পরিশ্রম, কি নিষ্ঠুর নির্যাতন সহ্য কোরতে হোয়েছিলো, তা তার পবিত্র জীবনী যিনি একবারও পড়েছেন তিনি জানেন। আল্লাহ(Allah)র রসুল (দঃ) তার জীবনে কতখানি কষ্ট সহ্য কোরেছেন, তা তার একটি কথায় কিছুটা আঁচ করা যায়। তার উম্মাহর মধ্যে যারা জীবনে অত্যন্ত কষ্টে পড়বেন, অসহনীয় দুঃখে যাদের জীবন ভারাক্রান্ত হবে তাদের উদ্দেশ্য কোরে তিনি বোলেছেন তারা যেন তার (দঃ) জীবনের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট-বিপদ মনে কোরে নিজেরা মনে সাহস-সান্ত্বনা আনেন। মানব জাতির শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ(Allah)র প্রিয় বন্ধুকে যেখানে জীবনভর এত কষ্ট-সংগ্রাম কোরতে হলো, সেখানে আমরা বসে বসে দোয়া করেই পার পেয়ে যাবো? আল্লাহ(Allah) আমাদের লিষ্ট মোতাবেক দোয়ার ফল দিয়ে দেবেন? আল্লাহ(Allah) বোলছেন, "আল্লাহ(Allah) ইচ্ছা করলে সমস্ত অবিশ্বাসীদের সত্য পথে আনতে পারেন (কোরান- সূরা আল আনাম ৩৫)।" একথা তিনি একবারই বলেননি। বিশ্বনবীকে (দঃ) সম্বোধন কোরে বলেছেন- "তোমার প্রভু যদি ইচ্ছা করেন, তবে সমস্ত পৃথিবীর মানুষ একত্রে বিশ্বাসী হোয়ে যাবে (কোরান- সূরা ইউনুস ৯৯)।" তিনি তা ইচ্ছা করেননি, অথচ ঐ কাজটা করার ভারই তিনি তার নবীকে (দঃ) ও তার উম্মাহকে দিয়েছেন। কারণ, তিনি দেখতে চান কারা তার সেই কাজ কোরতে চেষ্টা করে, সংগ্রাম করে, কোরবানী করে। শাস্তি ও পুরস্কার ওর ওপরই হবে কেয়ামতে। অবিশ্বাসীদের সঙ্গে যখন বিশ্বাসীদের সংঘর্ষ হয়, সে সময়ের জন্য আল্লাহ(Allah) বোলছেন, "আল্লাহ(Allah) ইচ্ছা কোরলেই (তোমাদের কোন সাহায্য ছাড়াই) তাদের (অবিশ্বাসীদের) শাস্তি দিতে পারেন। কিন্তু তিনি তোমাদের পরীক্ষা কোরে দেখতে চান (কোরান- সূরা আল মোহাম্মদ ৪)।" এই কথা বলার দুই আয়াত পরই তিনি বোলছেন, "হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যদি আল্লাহ(Allah)কে সাহায্য কর তবে তিনিও তোমাদের সাহায্য করবেন (কোরান- সূরা আল মোহাম্মদ ৭)।" সেই সর্বশক্তিমানকে আমরা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মানুষ কি সাহায্য করবো? আমাদের সাহায্যের কোন প্রয়োজন আছে তার? তবে তিনি সাহায্য চাচ্ছেন কেন? এর অর্থ হলো এই যে, ইবলিস যে তাকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছে যে 'সে তার (আল্লাহ(Allah)র) সৃষ্টি আদম অর্থাৎ মানুষকে আল্লাহ(Allah)র দেয়া জীবন-বিধান অস্বীকার কোরিয়ে মানুষকে দিয়েই জীবন-বিধান তৈরী কোরিয়ে মানুষকে ফাসাদ অর্থাৎ অন্যায়-অবিচার-অশান্তি আর সাফাকুদ্দিমা অর্থাৎ যুদ্ধ ও রক্তপাতে ডুবিয়ে দেবে, সেই চ্যালেঞ্জে কারা আল্লাহ(Allah)র পক্ষে থেকে তাকে সাহায্য করে। অর্থাৎ আল্লাহ(Allah)র পক্ষ হোয়ে তার রসুলের পক্ষ হোয়ে সংগ্রাম করে, আর কারা করেনা বা বিপক্ষে থাকে তা পরীক্ষা কোরে দেখা। আল্লাহ(Allah) যদি হুকুম কোরেই সমস্ত মানুষকে সত্য পথে এনে ইবলিসকে হারিয়ে দেন তবে আর চ্যালেঞ্জের কোন অর্থই থাকে না। তাই আল্লাহ(Allah) শক্তি থাকলেও তা করবেন না। তিনি দেখবেন আমরা ইসলিসের বিরুদ্ধে সেই সংগ্রাম করি কি না। জানমাল দিয়ে সেই সংগ্রাম করলে আমরা আল্লাহ(Allah)কে সাহায্য কোরছি। আর তা না কোরে বসে বসে দফাওয়ারী দোয়া কোরে আমরা ইবলিসের দলভুক্ত হোয়ে গেছি। তাই তিনি বোলছেন তাকে সাহায্য কোরতে, ইবলিসের বিরুদ্ধে সাহায্য কোরতে, যদিও তিনি সমস্ত সাহায্যের বহু উর্দ্ধে-বেনেয়ায।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×