somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামী রাজনীতি/ইসলামী রাষ্ট্র বিহীন ইসলাম কোন ইসলামই নয় : পর্ব-৪২ - যুগসন্ধিক্ষণে আমরা

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের, অর্থাৎ আমরা যারা নিজেদের মো'মেন, মোসলেম(Muslim) ও উম্মতে মোহাম্মদী বোলে মোনে কোরি, আমাদের ইতিহাস কি? আমরা কোথা থেকে এসেছি, কেমন কোরে আমাদের জন্ম হোয়েছে, কেন আমাদের সৃষ্টি করা হোয়েছে, কি উদ্দেশ্যে আমাদের একটি জাতি হিসেবে গঠন করা হোয়েছে? আজকের এই একশ' বিশ কোটির জাতির মনে এই প্রশ্নগুলি জাগে না৷ কেউ এই প্রশ্নগুলি কোরলে একশ' বিশ কোটির কাছ থেকে অন্তত দশকোটি রকমের বিভিন্ন উত্তর পাওয়া যায়৷ চৌদ্দশ' বছর আগে যখন এই জাতিটির জন্ম হোয়েছিল আল্লাহ(Allah)র রসুল তাঁর অক্লান্ত চেষ্টা, অতুলনীয় ত্যাগ, অবিচল নিষ্ঠা, অটল অধ্যবসায় এবং সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে এই জাতিটিকে গঠন কোরেছিলেন তখন কিন্তু ঐ জাতির প্রত্যেকটি মানুষকে উপরোক্ত ঐ প্রশ্নগুলি কোরলে সবাই একই উত্তর দিতেন, কোন মতভেদ ছিলো না৷ ঐ জাতির ইতিহাস হোচ্ছে এই যে, জাতিটি গঠিত হবার পঁচিশ বছরের মধ্যে তদানিন্তন পৃথিবীর দুইটি মহাশক্তিকে সশস্ত্র সংগ্রামে, যুদ্ধে পরাজিত কোরে সমগ্র মধ্য এশিয়ায় আল্লাহ(Allah)র আইনের শাসন কার্য্যকরী কোরেছিলো৷ ঐ মহাশক্তিশালী সাম্রাজ্য দুইটি ছিলো রোমান ও পারসিক, একটি খ্রীস্টান অপরটি অগ্নি উপাসক৷ সংখ্যায়, সম্পদে, সামরিক বাহিনীর সংখ্যায়, অস্ত্রশস্ত্রে, এক কথায় সবদিক দিয়ে ঐ দুইটি বিশ্বশক্তি ছিলো ঐ শিশু জাতির চেয়ে বহুগুণে বড় কিন্তু তবুও তারা ঐ সদ্যপ্রসূত ছোট্ট জাতির সঙ্গে সামরিক সংঘর্ষে বিধ্বস্ত হোয়ে গিয়েছিলো৷ খ্রীস্টান শক্তিটি পরাজিত হোয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকেই পালিয়ে গেলো; আর অগ্নি উপাসক শক্তিটি আল্লাহ(Allah)র দীনকে স্বীকার কোরে নিয়ে ঐ নতুন জাতির অন্তর্ভুক্ত হোয়ে গেলো; আজ যেটাকে আমরা ইরান বলি৷ তারপর ৬০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ঐ জাতিটি তখনকার দিনের অর্দ্ধেক পৃথিবী জয় কোরে আল্লাহ(Allah)র আইনের শাসনের অধীনে নিয়ে এলো৷ এই পর্য্যন্ত ঐ জাতির ইতিহাস শুধু জয়ের ইতিহাস, বিজয়ের ইতিহাস, তাদের চেয়ে বহুগুণে শক্তিশালী শক্তির বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন সামরিক বিজয়ের ইতিহাস৷

ঐ সামরিক বিজয়ের উদ্দেশ্য কি ছিলো? সাম্রাজ্য? নাকি অন্য ধর্মের লোকজনকে এসলাম(islam) গ্রহণে বাধ্য করা? না, এর কোনটাই নয়৷ এর উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ছিলো ঠিক তাই যে উদ্দেশ্য, যে লক্ষ্য অর্জনের জন্য আল্লাহ(Allah)র নির্দেশে তাঁর শেষ রসুল এই জাতিটিকে, এই উম্মাহটি গঠন কোরেছিলেন, আর সেটি হোল সশস্ত্র সংগ্রাম কোরে সমস্ত পৃথিবীতে আল্লাহ(Allah)র আইন-কানুন অর্থাৎ দীন প্রতিষ্ঠা ও কার্য্যকরী কোরে মানব জাতির ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত জীবনের সমস্ত অন্যায়, অবিচার, শোষণ, অত্যাচার নিঃশেষ কোরে দিয়ে ন্যায়, সুবিচার, নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা৷ আর এই জন্যই এই দীনের নাম এসলাম(islam), আক্ষরিক অর্থেই শান্তি৷ প্রথম থেকে শেষ পর্য্যন্ত, আদম (আঃ) থেকে মোহাম্মদ (দঃ) পর্য্যন্ত ঐ একই নাম, এসলাম(islam) বা শান্তি৷ আজ আমাদের ধর্মীয় ও অধর্মীয় (অর্থাৎ রাজনৈতিক) নেতারা যে অর্থে এসলাম(islam)কে শান্তির ধর্ম বলেন তার ঠিক বিপরীত অর্থ৷ রাষ্ট্রশক্তি অধিকার না কোরলে আল্লাহ(Allah)র আইন কেন, কোন আইনই প্রতিষ্ঠা বা কার্য্যকরী করা যায় না এটা সাধারণ জ্ঞান আর রাষ্ট্রশক্তি কেউ বিনা যুদ্ধে ছেড়ে দেয় না, এটাও জানা কথা৷ তাই রাষ্ট্রশক্তি তাদের অধিকার কোরতে হোয়েছে সশস্ত্র সংগ্রামে৷ কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে একটি মানুষকেও তারা তার ধর্ম ত্যাগ কোরে এই দীন গ্রহণে বাধ্য করেন নি৷ শুধু তাই নয়, যেখানেই তারা আল্লাহ(Allah)র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা কোরেছেন সেখানেই অন্য ধর্মের চার্চ, সিনাগগ, মন্দির ও প্যাগোডা রক্ষার দায়িত্ব তো নিয়েছেনই তার উপর ঐ সব ধর্মের লোকজনের যার যার ধর্ম পালনে কেউ যেন কোন অসুবিধা পর্য্যন্ত না কোরতে পারে সে দায়িত্বও তারা নিয়েছেন৷ অন্যান্য ধর্মের লোকজনের ধর্মের নিরাপত্তার যে ইতিহাস এই জাতি সৃষ্টি কোরেছে তা মানব জাতির ইতিহাসে অনন্য, একক, পৃথিবীর কোন জাতি তা কোরতে পারে নি৷ অর্দ্ধেক পৃথিবীতে আল্লাহ(Allah)র আইন প্রবর্ত্তন করার ফলে ঐ সমস্ত এলাকায় লুপ্ত হোয়ে গেলো শোষণ, অবিচার, অন্যায়, নিরাপত্তাহীনতা অর্থাৎ ফাসাদ ও সাফাকুদ্দিমা৷ প্রতিষ্ঠিত হোল সুবিচার; ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত, অর্থর্নৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সুবিচার ও নিরাপত্তা; এক কথায় শান্তি৷
এরপর ঘোটলো এক মহাদুর্ভাগ্য জনক ঘটনা৷ ঐ জাতি হঠাত্‍ তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ভুলে গেলো৷ ভুলে গেলো তার জন্ম হোয়েছে কেন, ভুলে গেলো তাকে গঠন কেন করা হোয়েছিলো, ভুলে গেলো আল্লাহ(Allah)র রসুল স্বয়ং প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে পৃথিবীতে সবচেয়ে দুর্দ্ধর্ষ যোদ্ধা জাতিতে কেন পরিণত কোরেছিলেন৷ জাতি ভুলে গেলো যে কাজের জন্য তাদেরকে সৃষ্টি করা হোয়েছে, গঠন করা হোয়েছে, প্রশিক্ষণ দেয়া হোয়েছে সেই কাজ ছেড়ে দেওয়া আল্লাহ(Allah) ও তাঁর রসুলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা৷ কিন্তু জাতির লোকদের আকীদা অর্থাৎ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্বন্ধে ধারণা বিকৃত হোয়ে যাওয়ায় জাতি তাই কোরলো, আল্লাহ(Allah)র দীন সমস্ত পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার জেহাদ অর্থাৎ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, সংগ্রাম ত্যাগ কোরলো এবং ত্যাগ কোরে অন্যান্য রাজা বাদশাহরা যেমন রাজত্ব করে তেমনি শান শওকতের সঙ্গে তাদের মতই রাজত্ব কোরতে শুরু কোরলো৷ এই সর্বনাশা কাজের অর্থ কি, পরিণতি কি তা তারা উপলদ্ধি কোরতে পারলেন না৷ তারা উপলদ্ধি কোরতে পারলেন না যে, যে জিনিস যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয় সেটা যদি সেটাকে দিয়ে না হয়, তবে আর ঐ জিনিসের কোন দাম থাকে না, সেটা অর্থহীন হোয়ে যায়৷ একটা ঘড়ির উদ্দেশ্য হোচ্ছে সময় জানা, ঘড়িটা যদি না চলে, সময় না দেখায়, এমন কি যদি ভুল সময় দেখায় তবে আর সে ঘড়িটার কোন দাম থাকে না৷ ঘড়িটা সোনা, হীরা জহরত দিয়ে তৈরী কোরলেও না৷ একটি গাড়ি যদি কোন কারণে অচল হোয়ে যায়, বা আকীদার ভুলে সেটাকে ব্যবহার না কোরে গ্যারেজে রেখে দেওয়া হয় তবে সে গাড়ির আর কোন মূল্য থাকে না, সেটা পৃথিবীর সবচেয়ে দামী গাড়ি হোলেও না, কারণ যে উদ্দেশ্যে গাড়িটিকে তৈরী করা হোয়েছে অর্থাৎ একস্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া তা আর সেটাকে দিয়ে হোচ্ছে না৷ শান-শওকতের সঙ্গে রাজত্ব করার মোহ তাদের এমন ভাবে পেয়ে বোসলো যে তারা ভুলে গেলেন আল্লাহ(Allah) কোর'আনে মো'মেন হবার যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তার মধ্যে ঐ জেহাদ অঙ্গীভূত করা আছে৷ সুরা হুজরাতের ১৫ নং আয়াতে আল্লাহ(Allah) বোলেছেন-"সত্যনিষ্ঠ মো'মেন শুধু তারাই যারা আল্লাহ(Allah) ও তাঁর রসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে, তারপর (সে সম্বন্ধে) আর কোন সন্দেহ করে না (অর্থাৎ এ বিশ্বাসের উপর দৃঢ়, অবিচল থাকে) এবং তাদের সম্পদ ও প্রাণ দিয়ে আল্লাহ(Allah)র রাস্তায় জেহাদ করে৷" তারপর তিনি আবার বোলেছেন সুরা তওবার ১১১ নং আয়াতে- ''নিশ্চয়ই আল্লাহ(Allah) মো'মেনদের জীবন ও সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন, তারা আল্লাহ(Allah)র রাস্তায় কেতাল (অর্থাৎ- সশস্ত্র সংগ্রাম) করে, হত্যা করে এবং নিহত হয়৷ এটা এমন একটা প্রতিশ্রুতি যে প্রতিশ্রুতিতে আল্লাহ(Allah) তওরাত, এনজিল ও কোর'আনে আবদ্ধ হোয়ে আছেন৷ নিজের প্রতিশ্রুতি পালনে আল্লাহ(Allah)র চেয়ে বড় আর কে আছেন? কাজেই তোমরা যে সওদা কোরেছো, সে সওদার জন্য আনন্দ কর, কারণ এই সওদা হোচ্ছে চুড়ান্ত সাফল্য৷"

এছাড়া কোর'আনের অন্যত্রও আল্লাহ(Allah) মো'মেন কে এবং কারা তার সংজ্ঞা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন এবং এই সংজ্ঞায় আল্লাহ(Allah) ও তাঁর রসুলে বিশ্বাস ও আল্লাহ(Allah)র রাস্তায় জেহাদ এই দুই শর্ত্ত রোয়েছে৷ কাজেই এই জাতির পথভ্রষ্ঠ লোকেরা যখন নীতি হিসাবে জেহাদ ত্যাগ কোরলেন তখন তারা বুঝলেন না যে আল্লাহ(Allah) ও তাঁর রসুলের দৃষ্টিতে আর তারা মো'মেন রোইলেন না৷ তাদের ঐ দুভার্গ্যজনক কাজের ন্যায্যতা প্রমাণের চেষ্টায় তারা হাদীস উদ্ভাবন কোরলেন নফসের সঙ্গে জেহাদই হোচ্ছে জেহাদে আকবর, বড় জেহাদ৷ এই হাদীসের সংকলক এমাম বায়হাকি নিজেই স্বীকার কোরেছেন যে, এই হাদীসের সনদ ত্রুটিযুক্ত এবং এই দয়িফ হাদীস সম্বন্ধে হাফেয ইবনে হাজ্জার প্রমুখ মোহাদ্দেসরা বোলেছেন, এটা কোন হাদীসই না, এটা একটা আরবী প্রবাদ বাক্য মাত্র৷ তার চেয়েও বড় কথা হোচ্ছে কোন হাদীস সহীহ্ কি না তা যাচাই করার প্রথম কষ্ঠিপাথর হোচ্ছে কোর'আন৷ সেই কোর'আনেই আল্লাহ(Allah) স্বয়ং আমাদের বোলে দিচ্ছেন বড় জেহাদ অর্থাৎ জেহাদে আকবর বা কবীর কোন্টা৷ সুরা ফোরকানের ৫২ নং আয়াতে তিনি বোলেছেন, ''সুতরাং কাফেরদের কথামত চলো না এবং এর (কোর'আনের) সাহায্যে তাদের সঙ্গে বড় জেহাদ কর৷ জেহাদান কবীর কর৷" অর্থাৎ কাফেরদের বিরুদ্ধে জেহাদই হোচ্ছে জেহাদে আকবর, নফসের সঙ্গে নয়৷

শুধু তাই নয়, জেহাদ ত্যাগ কোরেই তারা ক্ষান্ত হোলেন না৷ তারা রসুলের সুন্নাহরও ভিন্ন সংজ্ঞা আবিষ্কার কোরলেন৷ আল্লাহ(Allah) কোর'আনে অন্ততঃ তিনবার বোলেছেন যে, তিনি (আল্লাহ) তাঁর রসুলকে সঠিক দিক নির্দেশনা ও সত্যদীন দিয়ে পাঠিয়েছেন এই জন্য যে তিনি এটাকে অন্যান্য সমস্ত দীনের ওপর বিজয়ী কোরবেন৷ এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর নবী ঘোষণা কোরলেন- "আমি আদিষ্ট হোয়েছি সমস্ত মানব জাতির বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যেতে যে পর্য্যন্ত না তারা একথা মেনে নেয় যে আল্লাহ(Allah) ছাড়া আর কোন এলাহ নেই, এবং মোহাম্মদ (দঃ) তাঁর রসুল" [হাদীস- আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বোখারী]৷ ইতিহাস সাক্ষী যতোদিন তিনি এই দুনিয়ায় ছিলেন ততোদিন তিনি ও তাঁর আসহাব একদেহ একপ্রাণ হোয়ে আল্লাহ(Allah)র দেয়া ঐ আদেশ ও দায়িত্ব পালন কোরে গেছেন এবং তা কোরতে যেয়ে মাত্র ১০ বছরের মধ্যে ১০৭টি ছোট বড় যুদ্ধ কোরেছেন৷ তারপর যখন আল্লাহ(Allah)র রসুল এই দুনিয়া থেকে চোলে গেলেন তখন ঐ দায়িত্ব স্বভাবতঃই এসে পোড়লো তাঁর গঠন করা জাতিটির ওপর কারণ রসুলের ওপর আল্লাহ(Allah)র দেয়া দায়িত্ব তখনও পূর্ণ হয় নি৷ শুধু আরব দেশটাকে আল্লাহ(Allah)র আইনের শাসনের মধ্যে আনা হোয়েছে; বাকী পৃথিবী মানুষের তৈরী আইনের অধীনে চোলছে৷ রসুলাল্লাহর নিজ হাতে গড়া জাতিটি অর্থাৎ উম্মতে মোহাম্মদী তার জান্নাতবাসী নেতার ওপর আল্লাহ(Allah)র দেয়া দায়িত্ব তাদের মাথায় এসে পড়া সম্বন্ধে এত সচেতন ছিলেন যে নেতার দুনিয়া থেকে চোলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি-ঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্ষেত-খামার পরিবার পরিজন, এক কথায় পার্থিব সব কিছু কোরবান কোরে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পূর্ণ কোরতে অস্ত্র হাতে তাদের স্বদেশ আরব থেকে বের হোয়ে পোড়েছিলেন৷ এই কাজকে তাদের নেতা বোলেছিলেন আমার সুন্নাহ, সুন্নাতি এবং বোলেছিলেন আমার এই সুন্নাহ যে বা যারা ত্যাগ কোরবে তারা আমার কেউ নয়, মান তারাকা সুন্নাতি ফালাইসা মিন্নি, অর্থাৎ তারা উম্মতে মোহাম্মদীই নয়৷ শুধু তাই নয়, তিনি বোলেছেন- মান রাগেবা আন সুন্নাতি ফালাইসা মিন্নি (বোখারী, মোসলেম(Muslim)) অর্থাৎ যে আমার সুন্নাহ থেকে শুধু মুখ ফিরিয়ে নেবে সেও আমার কেউ নয়৷ জেহাদ ছেড়ে দেবার পর নবীর সুন্নাহর বিকল্প হিসাবে নেয়া হোল তাঁর ব্যক্তিগত অভ্যাস-অনভ্যাস, পছন্দ-অপছন্দ ইত্যাদি যেগুলোর সাথে তাঁর জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য, তাঁর উপর আল্লাহ(Allah)র দেয়া দায়িত্বের কোন সম্বন্ধই নেই; যেগুলো নেহায়েত্‍ ব্যক্তিগত ব্যাপার৷ নিষ্ঠুর পরিহাস এই যে, জেহাদ ত্যাগকারীদের কাছে মানব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম বিপ্লবীর সুন্নাহ হোয়ে দাঁড়ালো, তাঁর বিপ্লব নয়, তাঁর মেসওয়াক করা, খাবার আগে জিহবায় একটু নিমক দেওয়া, খাবার পর একটু মিষ্টি খাওয়া, ডান পাশে শোয়ার মত ছোট-খাট অসংখ্য তুচ্ছ ব্যাপার৷ মানুষের ইতিহাসে কোন জাতি তার নেতার এমন অপমানকর অবমূল্যায়ন কোরেছে বোলে আমার জানা নেই৷ জেহাদ ত্যাগ কোরে ঐ জাতি মোমেন ও উম্মতে মোহাম্মদীর সংজ্ঞা থেকে বহিষ্কৃত হোয়ে যাওয়া ছাড়াও আরও ভয়ংকর পরিণতি হোলো৷ তাহোলো এই যে আল্লাহ(Allah) সুরা তওবায় ৩৮ এবং ৩৯ নং আয়াতে এই জাতিকে জেহাদ ছেড়ে দেবার পরিণতি সম্বন্ধে এই বোলে সাবধান কোরে দিয়েছেন- "হে মো'মেনরা তোমাদের কি হোয়েছে যে যখন তোমাদের বলা হয় আল্লাহ(Allah)র পথে (সামরিক) অভিযানে বের হও, তখন যেন তোমরা ঝুঁকে পোড়ে মাটির সাথে মিশে যাও৷ (তাহোলে কি) তোমরা পরকালের পরিবর্ত্তে এই জীবনকেই প্রাধান্য দিয়েছো? এই জীবনের ভোগ তো পরকালের জীবনের তুলনায় অতি সামান্য৷ যদি তোমরা সামরিক অভিযানে বের না হও তবে তিনি তোমাদের কঠিন শাস্তি দেবেন এবং তোমাদের স্থলে অন্য কোন জাতিকে প্রতিষ্ঠা কোরবেন (অর্থাৎ তোমাদের অন্য কোন জাতির দাস, গোলাম বানিয়ে দেবেন) এবং তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি কোরতে পারবে না, আল্লাহ(Allah) সমস্ত কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান৷" এই কঠোর সতর্কবাণী সত্ত্বেও আকীদা অর্থাৎ জাতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্বন্ধে সঠিক সম্যক ধারণার (Comprehensive Conception) বিকৃতিতে এই জাতি জেহাদ ছেড়ে দিয়ে নফসের সাথে নিরাপদ জেহাদ শুরু কোরলো৷ আল্লাহ(Allah)ও তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কিছুদিন পরই ইউরোপের খ্রীস্টান জাতিগুলিকে দিয়ে ঐ জাতিকে সামরিক ভাবে পরাজিত ও পর্যুদস্ত কোরে শাসনভার ও কর্তৃত্ব তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে খ্রীস্টানদের হাতে তুলে দিলেন৷

আল্লাহ(Allah) কোর'আনের বিভিন্ন স্থানে এবং সুরা নুরের ৫৫ নং আয়াতে মো'মেনদের এই পৃথিবীর আধিপত্য ও কর্তৃত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে যতদিন ঐ জাতি, জাতি হিসাবে জেহাদ চালিয়ে গেছে ততদিন আল্লাহ(Allah) তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা কোরেছেন- অর্দ্ধেক পৃথিবীতে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোয়েছিল এবং ঐ জাতি যদি তখন জেহাদ ত্যাগ না কোরতো তবে অবশ্যই আল্লাহ(Allah) বাকি অর্দ্ধেকও তাদের হাতে তুলে দিতেন এবং রসুলের ওপর আল্লাহ(Allah)র দেয়া দায়িত্বও পূর্ণ হতো৷ আল্লাহ(Allah)র ঐ প্রতিশ্রুতির মধ্য থেকে আরেকটি সত্য ফুটে ওঠে- সেটা হোল এই যে, আমরা নিজেদের মো'মেন অর্থাৎ আল্লাহ(Allah) ও তাঁর রসুলে বিশ্বাসী বোলে দাবি কোরি৷ তাহোলে আল্লাহ(Allah)র প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পৃথিবীর কর্তৃত্ব, আধিপত্য আমাদের হাতে নেই কেন? তাহোলে সেই সর্বশক্তিমান কি তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা কোরতে অসমর্থ (নাউযুবিল্লাহে মিন যালেক)? এর একমাত্র জবাব হোচ্ছে- আমরা যতোই নামাজ পড়ি, রোযা রাখি, যতোই হাজার রকম এবাদত কোরি, যতোই মুত্তাকী হই, আমরা মো'মেন নই, মোসলেম(Muslim) নই, উম্মতে মোহাম্মদী হবার তো প্রশ্নই ওঠে না৷ মো'মেন হোলে (ইন কুন্তুম মো'মেনীন) যে পৃথিবীর ওপর আধিপত্যের অঙ্গীকার আল্লাহ(Allah) কোরেছেন, সেই পৃথিবীতে আজ আমাদের অবস্থা কী? আমাদের অবস্থা হোচ্ছে (ক) পৃথিবীতে যে কয়টি প্রধান জাতি আছে তার মধ্যে আমরা নিকৃষ্টতম৷ (খ) আমাদের ছাড়া আর যে কয়টি জাতি আছে তারা সকলেই পৃথিবীর সর্বত্রই আমাদের অপমানিত, অপদস্থ কোরছে, আমাদের আক্রমণ কোরে হত্যা কোরছে, আমাদের ধন-সম্পদ লুটে নিচ্ছে, আমাদের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছে, আমাদের মা, মেয়ে, বোনদের ওপর পাশবিক অত্যাচার কোরে সতিত্ব নষ্ট কোরছে৷ (গ) ঐ কাজগুলি খ্রীস্টানরা অতীতে কোরেছে স্পেনে, সেখান থেকে তারা সম্পুর্ণ মোসলেম(Muslim) জাতিটিকেই সমূলে উত্‍খাত কোরেছে, আজ সেখানে মোসলেম(Muslim) বোলতে নেই এবং বর্ত্তমানে কোরছে বসনিয়া হারযেগোভিনিয়ায়, সুদানে, ফিলিপাইনে৷ খ্রীস্টানরা বসনিয়ায় যা কোরেছে মানব জাতির ইতিহাসে তার কোন নজির নাই৷ তারা দুই লক্ষ মোসলেম(Muslim) মেয়েকে ধর্ষণ কোরে গর্ভবতী কোরেছে, তাদের সাতমাস পর্য্যন্ত আটকে রেখেছে যাতে তারা ঐ খ্রীস্টানদের ঔরসের সন্তানগুলি গর্ভপাত কোরে ফেলে দিতে না পারে৷ বসনিয়ায় কয়েক হাজার মসজিদের মধ্যে সারায়েভোর কয়েকটি মাত্র মসজিদ ছাড়া আর সমস্ত মসজিদ ভেংগে দেয়া হোয়েছে৷ হিন্দুরা কোরছে কাশ্মীরে, ভারতের প্রতিটি রাজ্যে৷ বৌদ্ধরা কোরছে মায়ানমারে অর্থাৎ বার্মায়, আরাকানে, থাইল্যান্ডে, ভিয়েতনামে, কামপুচিয়ায় ও চীনে৷ এগুলিতো বড় বড় জাতি৷ অতি ক্ষুদ্র ইহুদী জাতি ঐ কাজ কোরছে পশ্চিম এশিয়ায়, প্যালেস্টাইনে৷ ভারতে দশ হাজারের বেশী মসজিদ হয় মন্দীরে পরিণত করা হোয়েছে না হয় অফিস ইত্যাদি অন্য কাজে ব্যবহার করা হোচ্ছে, না হয় ভেংগে দেয়া হোয়েছে৷ এটা ১৯৮৫ সালের হিসাব৷ ক্ষুদ্র ইহুদী জাতিকে দিয়ে ১৯৪৭ সন থেকে আজ পর্য্যন্ত গুতিয়ে মেরেও খুশী না হোয়ে অপমানের, শাস্তির চুড়ান্ত করার জন্য গাছ পাথর উপাসক আসামের একটি পাহাড়ী উপজাতি দিয়ে আল্লাহ(Allah) এই জাতিকে পেটাচ্ছেন, গুলী কোরে, কুপিয়ে হত্যা করাচ্ছেন, বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে উচ্ছেদ করাচ্ছেন৷ আর কত শাস্তি, কত আযাব আল্লাহ(Allah) দেবেন? এর পরের ধাপের শাস্তিতো একেবারে নির্মূল কোরে দেয়া- যেমন দিয়েছেন স্পেনের তথাকথিত মোসলেম(Muslim)দের, সেখানে এখন তাদের নাম গন্ধও নেই৷

আল্লাহ(Allah)র নবী ঈসাকে (আঃ) প্রত্যাখ্যান করার শাস্তি হিসাবে আল্লাহ(Allah) ইহুদী জাতিকে লা'নত অর্থাৎ অভিশাপ দিয়েছিলেন, যার ফলে খ্রীস্টান রোমানরা তাদের হাজার হাজার বছরের স্বদেশ থেকে মেরে কেটে উত্‍খাত কোরে দিয়েছিলো৷ প্রাণ বাঁচাবার জন্য তারা পালিয়ে যেয়ে ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছিলো৷ আল্লাহ(Allah)র অভিশাপ তাদের পেছনে পেছনে গেছে৷ যেখানেই তারা আশ্রয় নিয়েছে, বসতি স্থাপন কোরেছে সেখানেই তাদের ঘৃণার চোখে দেখা হোয়েছে, অবজ্ঞা করা হোয়েছে৷ মাঝে মাঝেই খ্রীস্টানরা দলবেধে ইহুদীদের বসতি আক্রমণ কোরে তাদের পুরুষদের হত্যা কোরে মেয়েদের নিয়ে গেছে, তাদের সম্পত্তি লুটপাট কোরেছে, বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে৷ ইউরোপের প্রতিটি রাষ্ট্রে এটা হোয়েছে এবং বারবার হোয়েছে৷ এই কাজটাকে বোঝাবার জন্য ইউরোপীয় ভাষায় একটি নতুন শব্দেরই জন্ম হোয়েছে Pogrom, যার আভিধানিক অর্থ হোল Organised killing and plunder of a community of people,বাংলায়- সুসংগঠিত ভাবে সম্প্রদায় বিশেষের হত্যা ও লুন্ঠন৷ আল্লাহ(Allah) লা'নত দেবার পর ইহুদীদের ভাগ্যে যা ঘোটেছিলো আজ মোসলেম(Muslim) নামের এই জাতিটির ওপর ঠিক তাই ঘোটছে৷ তফাত্‍ শুধু এইটুকু যে, ইহুদী জাতির ওপর ঐ Pogrom ইউরোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো আর আমাদের ওপর Pogrom হোচ্ছে সমস্ত পৃথিবীময়৷ এক কোটির ছোট্ট ইহুদী জাতি আজ আমাদের একশ' বিশ কোটির এই জাতির ওপর Pogrom কোরছে৷ অভিশপ্ত অর্থাৎ মালাঊন হবার যে সব চিহ্ন ইহুদী জাতির গায়ে লেখা হোয়েছিলো সে সব চিহ্ন আজ এই জাতির গায়ে লেখা৷ সারা শরীরে আল্লাহ(Allah)র অভিশাপের ছাপ নিয়ে যে নামায রোজা এবং আরও হাজার রকমের এবাদত করা হোচ্ছে তা আল্লাহ(Allah)র দরবারে কবুল হোচ্ছে মোনে কোরে আমরা আহাম্মকের স্বর্গে বাস কোরছি৷

মো'মেন, মোসলেম(Muslim) ও উম্মাতে মোহাম্মদী বোলে পরিচিত এই জাতিটি আকীদার বিকৃতিতে আল্লাহ(Allah) ও তাঁর রসুলের দেখানো দিক নির্দেশনা, হেদায়াতের ঠিক বিপরীত দিকে চলার ফলে আল্লাহ(Allah)র চোখে এটা আর মো'মেনও নেই, মোসলেম(Muslim)ও নেই, উম্মতে মোহাম্মদীও নেই৷ এই জাতি এখন আল্লাহ(Allah)র লা'নতের ও গযবের বস্তু, এর অবস্থা এখন অতীতের অভিশপ্ত ইহুদী জাতির চেয়েও নিকৃষ্ট৷ আল্লাহ(Allah)র রসুলের গঠন করা জাতিটির প্রথম একশ' বছরের অবস্থার সাথে বর্ত্তমান অবস্থার একটা তুলনা এ কথা প্রমাণ কোরবে৷


আল্লাহ(Allah) রসুলের প্রকৃত এসলাম(islam) ও মুসলিম(Muslim) জাতি


বর্তমানের বিকৃত এসলাম(islam) ও এই জাতি

১৷ সংখ্যায় পাঁচ লাখের মত৷


১৷ সংখ্যায় একশ' বিশ কোটি৷

২৷ জাতির প্রাকৃতিক সম্পদ- শুন্য
- কিছুই ছিলো না৷


২৷ পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদের এক বিরাট অংশের মালিক৷ যে তেল ও গ্যাস ছাড়া বর্তমান ইহুদী খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা অচল, সেই তেলের শতকরা ৬০ ভাগ এবং গ্যাসের একটা বিরাট অংশ এই জাতির হাতে৷ এ ছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের এক প্রধান অংশের মালিক৷

৩৷ ঐ পাঁচ লাখের জাতির মধ্য মাত্র ৪০ জনের মত লোক লেখা পড়া জানতেন৷


৩৷ বর্তমানে এই জাতির মধ্য কোটি কোটি লোক লেখা পড়া জানে, লক্ষ লক্ষ লোক উচ্চ শিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, আইনজ্ঞ, বিজ্ঞানী, শিল্পী এবং লক্ষ লক্ষ মসজীদ, মাদ্রাসা, খানকা, হাফেজে কোরআন, ফকিহ, মুহাদ্দিস, আলেম ওলামা, পীর-মাশায়েখ ইত্যাদি সবই আছে৷

৪৷ ঐ জাতির কাছে আল্লাহ(Allah)র দেয়া সংবিধান কোরআনের মাত্র কয়েকটি হাতে লেখা কপি ছিল৷


৪৷ বর্তমানে এই জাতির কাছে কোরআনের কোটি কোটি কপি পৃথিবীর সর্বত্র বিদ্যমান৷ এক মাত্র বাইবেলের সংখ্যার সাথে কোরআনের সংখ্যার তুলনা করা যায় এমন কি অনেকের মতে বাইবেলের চেয়েও বেশী৷

৫৷ কোরআনের কোন অনুবাদ ছিলো না৷


৫৷ বর্তমানে পৃথিবীর প্রত্যেক প্রধান ভাষায় কোরআনের একাধিক অনুবাদ হোয়ে গেছে৷ এমন কি অনেক আঞ্চলিক ভাষায়ও এর অনুবাদ হোয়ে গেছে৷

৬৷ অর্ধেক বিশ্বজয়ী ঐ জাতির বহু মানুষ বই আকারে কোরআনকে কোনদিন চোখেই দেখেননি৷ তাদের মধ্যে যার যেটুকু মুখস্থ ছিলো তারা সেইটুকুই জানতেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ কোরতেন৷


৬৷ বর্তমানে ঝকঝকে হরফে ছাপানো অতি সুন্দর কোরআন পৃথিবীতে কোটি কোটি সংখ্যায় বর্তমান৷ লক্ষ লক্ষ মানুষের ঐ বিরাট কোরআন মুখস্থ৷

৭৷ কোরআনের লিখিত কোন ব্যাখ্যা অর্থাৎ তফসির ছিলো না৷


৭৷ বর্তমানে কোরআনের শত শত ব্যাখ্যাকারী অর্থাৎ মুফাসসির আছেন৷

৮৷ ঐ জাতি ইস্পাতের মত ঐক্যবদ্ধ ছিলো৷


৮৷ বর্তমানের এই জাতিটি রাজনৈতিক ভাবে পঞ্চান্নটির মত ভৌগলিক রাষ্ট্রে, দীনের ব্যাখ্যায় বহু মযহাবে ও ফেরকায়, আধাত্মিক ভাবে শত শত তরিকায় এবং ইহুদী খৃষ্টানদের নকল কোরে হাজার হাজার রাজনৈতিক দলে ছিন্নবিছিন্ন৷

৯৷ তদানিন্তন সভ্য পৃথিবী থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন, রোমান এবং পারসিক বিশ্বশক্তির নাম শুনলে ভয়ে কম্পমান আরব জাতিকে সেই এসলাম(islam) মাত্র দশ বছরের মধ্যে এমন দুর্ধর্ষ যোদ্ধায় রূপান্তরিত কোরেছিলো যে ঐ মহাশক্তিধর রোমান এবং পারসিকরা যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের সামনে ঝড়ের মুখে তুলোর মত উড়ে গিয়েছিলো; একবার নয়, বহুবার৷ যে আরবদের তারা মাত্র কয়েক বছর আগেই অবজ্ঞা কোরতো, পরে তাদের নাম শুনলেই তারা ভয়ে কাঁপতো৷


৯৷ বর্তমান এসলাম(islam) এমন জাতি সৃষ্টি করে এবং কোরছে যারা পৃথিবীতে ১২০ কোটি হওয়া সত্বেও শুধু সেই খৃষ্টানরা নয়, পৃথিবীর সমস্ত জাতিগুলির অবজ্ঞা ও ঘৃণার পাত্র এবং সে অবজ্ঞা ও ঘৃণা বোঝার শক্তিও এ জাতির নেই৷ অন্যান্য জাতিগুলোর বিরুদ্ধতা করার শক্তিও নেই৷ কখনও কোরলে পরাজয় ও অপমান অবধারিত৷

১০৷ বিশ্বনবী মোহাম্মদের (দঃ) নেতৃত্বে সেই এসলাম(islam) দশ বছরের মোধ্যে সৃষ্টি কোরেছিলো খালেদ বিন ওয়ালিদের (রাঃ) মত আল্লাহ(Allah)র তলোয়ার, আলী বিন আবু তালিবের (রাঃ) মত আল্লাহ(Allah)র সিংহ এবং দেরারের (রাঃ) মত বহু অপরাজেয় দুর্ধর্ষ যোদ্ধা৷


১০৷ বর্তমানের এই এসলাম(islam) ১২০ কোটির জাতির মধ্য থেকে প্রায় দেড় হাজার বছরেও একটি মাত্র খালেদ একটি আলী বা একটিও দেরার (রাঃ) সৃষ্টি কোরতে পারে নাই৷

১১৷ আল্লাহ(Allah)র- রসুলের সেই এসলাম(islam) অতি শান্ত মেজাজের, সুফী চরিত্রের আবু ওবায়দা (রাঃ) কে এমন অজেয় যোদ্ধা ও অপরাজেয় সেনাপতিতে রূপান্তরিত কোরেছিল যে তার নেতৃত্বে সেই উম্মাহ সমস্ত উত্তর সিরিয়া জয় কোরে আল্লাহ(Allah)র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা কোরেছিল৷ শুধু সেনাপতি হিসাবে নয়, একক দ্বন্দযুদ্ধে অর্থাৎ ঝরহমষব পড়সনধঃ-এ ঐ স্বল্পভাষী শান্ত মানুষটি রোমান এবং পারসিকদের প্রখ্যাত যোদ্ধাদের পরাজিত ও ধরাশায়ী কোরেছেন৷


১১৷ আর আজ ধর্ম সম্মন্ধে বেখেয়াল, বেপরোয়া কিন্তু সাহসী ও দাপটওয়ালা কোন মানুষকে যদি বর্তমানের এসলামে(islam)র ধার্মিক বানানো যায় তবে ঐলোকটি অচিরেই একটি নিরীহ গো-বেচারা কাপুরুষে পরিণত হোয়ে যায়৷ অর্থাৎ আল্লাহ(Allah)-রাসুলের সেই প্রকৃত এসলাম(islam) একটি শিয়ালকে সিংহে রূপান্তরিত করে আর আমাদের বর্ত্তমানের এই এসলাম(islam) সিংহকে শিয়ালে পরিণত করে৷

১২৷ আল্লাহ(Allah)র রসুলের এসলাম(islam) নির্জনবাসি কামেল সুফী সাধক ওয়ায়েস করনি (রাঃ) কে নির্জনবাস থেকে বের কোরে এনে তলোয়ার হাতে যুদ্ধ ক্ষেত্রে শহীদ কোরেছিলো৷


১২৷ আর বর্ত্তমানের এই এসলাম(islam) যোদ্ধার হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তার হাতে তসবীহ ধোরিয়ে দিয়ে মসজিদে আর খানকায় বসিয়ে দেয়৷

১৩৷ আল্লাহ(Allah)র রসুলের এসলাম(islam) সম্পুর্ণ উম্মতে মোহাম্মদীকে আল্লাহ(Allah)র দীন পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার জন্য অস্ত্র হাতে তাদের স্বদেশ থেকে এমন ভাবে বের কোরে দিয়েছিলো যে তাদের শতকরা আশি জনের কবর হোয়েছে বিদেশে যুদ্ধক্ষেত্রে৷


১৩৷ বর্তমানের এসলাম(islam) এমন জাতি তৈরী করে এবং করছে যারা তসবীহ হাতে মসজিদে, খানকায় বোসে থাকে এবং কোন রকম বিপদের আভাষ পেলেই হাওয়ার বেগে ইঁদুরের গর্তে লুকিয়ে যায়৷ এ সম্বন্ধে অতি সাম্প্রতিক একটি ঘটনা উল্লেখ না কোরে পারছিনা৷ কাশ্মীরে মুজাহিদদের পাতা মাইন ফেটে কয়েকটি ভারতীয় সৈন্য আহত হওয়ায় তারা রেগে গিয়ে এলোপাথাড়ী গুলি ছুড়তে থাকে৷ কিছু দুরেই একটি মসজীদ ছিলো এবং সেখানে নামাযের জন্য বর্তমান এসলামে(islam)র মুসল্লিরা সমবেত হোয়েছিলেন৷ গুলীর শব্দে ঐ মুসল্লিরা প্রাণের ভয়ে আতঙ্কিত হোয়ে দৌঁড়ে মসজীদ থেকে বের হোয়ে পালাতে যেয়ে নয় জন এক কুয়োর মধ্যে পড়ে যান৷ পাঁচজন ঐখানেই মারা যান এবং চার জনের খবর জানা যায় নাই৷ খবরটা এদেশের সব দৈনিকেই বের হোয়েছিলো - আমি উদ্ধৃতি দিচ্ছি ১০ই সেপ্টেম্বরের Newnation (১৯৯৪) থেকে৷ মৃত্যুভয়ে কতখানি দিশাহারা হোলে মানুষ অমন ঘৃণিতভাবে মোরতে পারে৷ এমন লজ্জার ঘটনা শুধু যে ঐ কাশ্মীরেই ঘোটেছে তা নয়, অনুরূপ অবস্থায় পৃথিবীর যে কোন মসজীদে কাপুরুষতার ঐ রকম ঘটনাই ঘোটবে৷

১৪৷ আল্লাহ(Allah)র রসুলের এসলাম(islam) যে জাতি গঠন কোরেছিলো সে জাতির চরিত্রের সর্ব প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল যোদ্ধার চরিত্র, তার প্রমাণ জাতির নেতা আল্লাহ(Allah)র রসুল (দঃ) সহ সমস্ত জাতির মধ্যে এমন একটা লোকও বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যেতনা যার শরীরে অস্ত্রের আঘাত নেই৷


১৪৷ বর্তমানের এসলাম(islam) যে জাতি গঠন করে তার চরিত্রের সর্বপ্রধান বৈশিষ্ট্য হোচ্ছে কাপুরুষতা৷ ছোট বড় সমস্ত রকম সংঘর্ষ, বিপদ আপদ থেকে পলায়ন৷ যে যতো বেশী ধার্মিক সে তত বেশী কাপুরুষ; অস্ত্রের আঘাত তো দুরের কথা, এদের গায়ে সুঁচের খোঁচারও দাগ নেই৷

১৫৷ আল্লাহ(Allah)র রসুলের এসলাম(islam) তার জাতির মধ্যে যে নারী সৃষ্টি কোরেছিলো তাদের মায়েরা নিজেদের ছেলেদের যুদ্ধের পোষাক পরিয়ে মাথায় শিরস্ত্রাণ, কোমরে তলোয়ার ঝুলিয়ে দিয়ে হাত তুলে দোয়া কোরতেন, হে আল্লাহ(Allah)! আমার ছেলে যেন যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে ফিরে না আসে৷ তুমি তার শাহাদাত কবুল কর৷


১৫৷ বর্তমানের এসলামে(islam) যুদ্ধতো নেই-ই, যদি ব্যাতিত্রুম হিসাবে কোন ছেলে জেহাদের জন্য মায়ের অনুমতি চায় তবে তার মা চিত্‍কার করে অজ্ঞান হোয়ে যান৷

১৬৷ আল্লাহ(Allah)র রসুলের এসলামে(islam)র মেয়েরা রসুলল্লাহর (দঃ) পাশে দাঁড়িয়ে তলোয়ার ও তীর ধনুক নিয়ে যুদ্ধ কোরেছেন এবং রসুল (দঃ) দুনিয়া থেকে চোলে যাবার পর অস্ত্র ও তাবুর খুঁটি দিয়ে পিটিয়ে খৃষ্টানদের শিক্ষিত যোদ্ধাদের পরাজিত কোরেছেন৷


১৬৷ বর্তমানে এসলামে(islam)র ধার্মিক মেয়েদের তাদের বাক্সবন্দী অবস্থা থেকে বের কোরে চৌরাস্তার মোড়ে ছেড়ে দিয়ে আসলে তারা ওখান থেকে আর বাড়ি ফিরতে পারেন না, ওখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কাঁদতে থাকেন৷


সমবেত সুধীমণ্ডলী৷ আল্লাহ(Allah)র রসুল চৌদ্দশ' বছর আগে এসলামে(islam)র যে শেষ সংস্করণটি মানব জাতিকে উপহার দিয়েছিলেন সেটি এবং বর্ত্তমানে আমরা যে এসলাম(islam) বোলে পরিচিত দীনটি পালন কোরছি এই দুইটি যে শুধু ভিন্ন নয়, একেবারে বিপরীতমুখী দু'টি পথ তা দেখাতে সংক্ষেপে মাত্র ১৬টি প্রমাণ উপস্থাপিত কোরলাম৷ এ লিষ্টি আরও অনেক বড় করা যায়, তা আর কোরলাম না৷ প্রকৃত সত্য হোচ্ছে এই যে, আল্লাহ(Allah)র অবতীর্ণ এসলামে(islam)র চরিত্র হোচ্ছে বহির্মুখী অর্থাৎ Extrovert এবং বিস্ফোরণমুখী অর্থাৎ Explosive এবং বর্ত্তমানে আমাদের এসলাম(islam) বিকৃত হোয়ে- হোয়ে গেছে অন্তর্মুখী, Introvert এবং সংকোচনশীল অর্থাৎ Implosive৷ বিকৃত এবং বিপরীতমুখী এই এসলাম(islam)কেই আমরা সঠিক এসলাম(islam) মোনে কোরে যথাসাধ্য তা পালন করার চেষ্টা কোরছি৷ এই এত বড় ভুল, এত বড় গোমরাহীর কারণ কি? এর কয়েকটি কারণ আছে৷ সর্বপ্রধান কারণ হোচ্ছে আকীদার বিকৃতি ও লোপ৷ এখানে আকীদা নিয়ে আলোচনায় যাব না কারণ হেযবুত তওহীদ থেকে প্রকাশিত 'এসলামে(islam)র প্রকৃত আকীদা' নামের ছোট্ট বইটিতে আকীদা সম্বন্ধে মোটামুটি লেখা হোয়েছে৷ এখানে শুধু এইটুকু বোলবো যে আকীদার বিকৃতিতে এই দীন সমস্ত পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা কোরে এবলিসের চ্যালেঞ্জে আল্লাহ(Allah)কে জয়ী করার সংগ্রাম, জেহাদ ত্যাগ কোরে রাজত্ব করা আরম্ভ করায় আল্লাহ(Allah) ঐ জাতির অভিভাবকত্ব ত্যাগ কোরলেন এবং কোর'আনের সুরা তওবার ৩৯ নং আয়াতে তাঁর সাবধানবাণী ও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাজত্ব ও রাষ্ট্রশক্তি ঐ জাতির হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন খ্রীস্টান জাতিগুলির হাতে তুলে দিলেন এবং মোসলেম(Muslim) বোলে পরিচিত ঐ জাতিটিকে তাদের দাস, গোলাম বানিয়ে দিলেন৷ এখানে একথা উপলব্ধি কোরতে হবে যে যখন মো'মেন মোসলেম(Muslim) ও উম্মতে মোহাম্মদী বোলে পরিচিত ঐ জাতিটিকে আল্লাহ(Allah) খ্রীস্টানদের দিয়ে সামরিক ভাবে পরাজিত কোরে দিলেন তখন স্বভাবতঃই ঐ জাতি আর প্রকৃতপক্ষে মো'মেন, মোসলেম(Muslim) বা উম্মতে মোহাম্মদী এর কোনটাই রোইল না৷ কারণ কোর'আনে আল্লাহ(Allah) একাধিকবার পরিষ্কার বোলেছেন যে, সামরিক সংঘর্ষে মো'মেন জাতিকে কখনই তিনি শত্রুর হাতে পরাজিত হোতে দেবেন না, এটা তাঁর সুন্নাহ, তাঁর চিরস্থায়ী এবং অপরিবর্ত্তনীয় সুন্নাহ (সুরা ফাতাহ ২২ এবং ২৩ নং আয়াত)৷ আল্লাহ(Allah)র রসুলও বোলে গেছেন যে, আল্লাহ(Allah)র কাছ থেকে তিনি প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন যে তাঁর উম্মাহ কখনও শত্রুর কাছে সামরিক ভাবে পরাজিত হবে না [সাওবান ও খাব্বাব (রাঃ) থেকে মোসলেম(Muslim), তিরমিযি ও নাসায়ী]৷ খ্রীস্টানদের হাতে সামরিক পরাজয়ই প্রমাণ কোরে দিলো যে আল্লাহ(Allah)র চোখে ঐ জাতি, জাতি হিসাবে মো'মেন রোইলো না এবং মো'মেন রোইলো না অর্থই মোসলেম(Muslim)ও রোইলো না, উম্মতে মোহাম্মদীও রোইলো না৷
ঐ জাতিকে দাসে পরিণত করার পরও খ্রীস্টান জাতিগুলির মনে ঐ দাস জাতির সম্বন্ধে ভয় সম্পুর্ণ দুর হোলো না, কারণ তখনও তাদের মন থেকে সেই ইতিহাস সম্পুর্ণ মুছে যায় নি যে, অতীতে ঐ জাতির হাতে কতবার তারা সামরিক ভাবে পরাজিত হোয়েছিল৷ তারা জানতো, যে জাতিকে তারা এখন পরাজিত ও পদানত কোরেছে সে জাতির প্রচণ্ড শক্তির উত্‍স হোচ্ছে তাদের কোর'আন ও হাদীস৷ এই কোর'আন ও হাদীস এবং তাদের নবীর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণই তাদের এক অপরাজেয় দুর্দ্ধর্ষ যোদ্ধা জাতিতে রূপান্তরিত কোরেছিল যারা একদিন ইউরোপীয় খ্রীস্টানদের মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিতাড়িত তো কোরেছিলোই, শুধু তাই নয় তাদের ইউরোপের মধ্যেও অর্দ্ধেক ঢুকে পোড়েছিলো৷ তাই এই জাতি সম্পর্কে সম্পুর্ণ নিরাপদ ও নিশ্চিত হবার জন্য, এই জাতিটিকে সম্পুর্ণ পঙ্গু কোরে দেবার জন্য তারা এক শয়তানি ফন্দি আট্‌লো৷ সে ফন্দি হোল এই যে, সমস্ত মোসলেম(Muslim) দুনিয়ায় খ্রীস্টানেরা যার যার অধিকৃত অংশে মোসলেম(Muslim)দের "এসলাম(islam)" শিক্ষা দেবার জন্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা কোরলো৷ ইংরাজরা এই উপমহাদেশে, মালয়েশিয়ায়, মিশরে ইত্যাদিতে; ফরাসিরা আলজেরিয়া এবং অন্যান্য যে সব মোসলেম(Muslim) এলাকা দখল কোরেছিল সেখানে; ডাচ অর্থাৎ ওলন্দাজরা ইন্দোনেশিয়ায় ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে মাদ্রাসা স্থাপন কোরলো৷ ইংরাজ অধিকৃত এই উপমহাদেশের বড়লাট অর্থাৎ Viceroy মিঃ ওয়ারেন হেসটিংস ১৭৮০ সনে কোলকাতায় আলীয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা কোরলেন৷ এই মাদ্রাসায় "এসলাম(islam)" শিক্ষা দেবার জন্য খ্রীস্টান পণ্ডিতরা, যাদের ইংরাজিতে বলা হয় Orientalists, সম্মিলিত ভাবে বহু গবেষণা কোরে একটি নুতন "এসলাম(islam)" দাঁড় করালেন, যে "এসলামে(islam)র" বাহ্যিক দৃশ্য এসলামে(islam)র মতই কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যেটার আকীদা এবং চলার পথ অর্থাৎ সেরাত, আল্লাহ(Allah)র রসুলের এসলামে(islam)র, সেরাতুল মুস্তাকিমের ঠিক বিপরীত৷ ঐ বিপরীতমুখী এসলাম(islam) শিক্ষা দিতে কি কি বিষয় শিক্ষা দিতে হবে, কি কি বিষয়বস্তু বাদ দিতে হবে, কেমন কোরে শিক্ষা দিতে হবে অর্থাৎ এক কথায় Syllabus এবং Carriculam নির্দ্ধারণ ও স্থির কোরলেন ঐ খ্রীস্টান পণ্ডিতরা৷ ঐ Syllabus ও Carriculam এ আল্লাহ(Allah)র সর্বব্যাপী তওহীদকে সংকুচিত কোরে ব্যক্তি জীবনে সীমাবদ্ধ করা হোলো, কারণ সার্বভৌমত্ব তো বৃটিশের, আল্লাহ(Allah)র সার্বভৌমত্ব শিক্ষা দিলে তো তাদের রাজত্ব করাই বিপদজনক৷ তারপর আল্লাহ(Allah)র সার্বভৌমত্ব অর্থাৎ তওহীদের ঠিক পরেই যে জেহাদের স্থান সেই জেহাদকে ঐ মাদ্রাসার পাঠ্যবস্তুতে অতি অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে পরিণত কোরে প্রায় বাদ দেওয়া হোলো৷ সমষ্টিগত, জাতিগত বিষয়গুলিকে নিম্নস্তরে নামিয়ে দিয়ে অতি সাধারণ ব্যক্তিগত বিষয়গুলিকে অতি গুরুত্ব ও প্রাধান্য দেয়া হোলো৷ নামাজ, রোযা, বিয়ে-শাদী, বিবি তালাক, দাড়ি-টুপি, পাজামা, পাগড়ী, মেসওয়াক, কুলুখ, ওজু গোসল, হায়েয-নেফাস ইত্যাদি হাজার রকমের বিষয়গুলিকে এসলামে(islam)র অতি জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোলে উপরে স্থান দেয়া হোলো৷ ঐ সিলেবাসে (Syllabus) আরও প্রাধান্য দেয়া হোল সেই সব বিষয়গুলিকে যেগুলি সম্বন্ধে দুর্ভাগ্যক্রমে বিভিন্ন মাযহাবে ও ফেরকায় মতভেদ ও বিতর্ক আগে থেকেই মওজুদ ছিল ও আছে৷ খ্রীস্টান পন্ডিতেরা এটা কোরলেন এই জন্য যে তাদের শেখানো এসলামে(islam)র আলেমরা যেন ঐগুলি নিয়ে নিজেদের মধ্যে তর্কাতর্কি, বাহাস ও প্রয়োজনে মারামারি কোরতে থাকে, বৃটিশদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হোতে না পারে এবং তাদের শাসন নিরাপদ হয়৷ এই দাস জাতির আরেকটি অংশ, যেটি আল্লাহ(Allah)র সান্নিধ্যলাভের জন্য তাসাওয়াফ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো তাদের সম্বন্ধে বৃটিশ খ্রীস্টানদের কোন দুঃশ্চিন্তা ছিল না৷ কারণ তারা জানতো ঐ অংশটি তসবিহ হাতে খানকায়, হুজরায় আর মসজিদের চার দেয়ালের মধ্যেই আবদ্ধ আছে; সমাজ, রাষ্ট্র ব্যবস্থা আল্লাহ(Allah)র আইন মোতাবেক চোলছে, না খ্রীস্টান বা হিন্দু বা ইহুদীদের আইনে চোলছে সে ব্যাপারে তারা সম্পুর্ণ নিস্পৃহ৷ শুধু ঐটুকু কোরেই ইংরেজরা ক্ষান্ত হোল না৷ আলীয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা কোরে তাদের সৃষ্ট "এসলাম(islam)" শিক্ষা দিতে কোথাও কোন বাধা না আসতে পারে সে জন্য মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য পূর্ণ ক্ষমতাসহ অধ্যক্ষ পদটি তারা নিজেদের হাতেই রাখলো৷ প্রথম অধ্যক্ষপদে নিয়োজিত হোলেন Dr.A.Spiringer M.A৷ ১৭৮০ থেকে ১৯২৬ সন পর্য্যন্ত এই ১৪৬ বছর একাধিক্রমে ২৬ জন খ্রীস্টান পণ্ডিত আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষপদে থেকে এই জাতিকে "এসলাম(islam)" শিখিয়েছেন৷ তারা কোন্ "এসলাম(islam)" শিখিয়েছেন? অবশ্যই তারা আল্লাহ(Allah) রসুলের সেই প্রকৃত এসলাম(islam) সেখান নাই, যে এসলামে(islam)র সৃষ্ট দুর্দ্ধর্ষ যোদ্ধাদের হাতে তারা বার বার পরাজিত হোয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে পালিয়ে যেয়েও নিস্তার পান নাই, যে যোদ্ধারা তাদের তাড়া কোরে ইউরোপের মধ্যে অর্দ্ধেক ঢুকে পোড়েছিল৷ খ্রীস্টান পণ্ডিতরা তাদের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাগুলিতে শিখিয়েছেন তাদের তৈরী করা এমন একটি এসলাম(islam) যেটা তৈরী করে মৃত্যুভয়ে ভীত কাপুরুষ, যারা দাড়ি, মোচ, টুপি, পাগড়ি, মেসওয়াক, কুলুখ, হায়েয-নেফাস, যিকির আসকার আর বিবি তালাককেই এসলাম(islam) মোনে কোরে তাই নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাই নিয়ে নিজেদের মধ্যে বাহাস আর মারামারি কোরতে থাকে যাতে খ্রীস্টানরা নিশ্চিন্ত মোনে তাদের দাসদের ওপরে রাজত্ব কোরতে পারে৷ ১৪৬ বছর ধোরে নিজেদের তৈরী "এসলাম(islam)" শেখাবার পর ২৬ নং খ্রীস্টান অধ্যক্ষ Mr.Alexander Hamilton Harty ১৯২৭ সনে অধ্যক্ষপদ শামসুল ওলামা, কামাল উদ্দিন আহমদ এম.এ.আই.আই.এস এর হাতে ছেড়ে দেন৷
আলীয়া মাদ্রাসার শিক্ষা পদ্ধতিতে নিজেদের সাফল্য দেখে বৃটিশরা এই উপমহাদেশসহ তাদের অধিকৃত অন্যান্য মোসলেম(Muslim) দেশগুলিতেও আলীয়া মাদ্রাসার অনুকরণে শত শত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে ও তাদের তৈরী "এসলাম(islam)" শিক্ষা দেয়৷ ইংরাজ চোলে গেছে কিন্তু তাদের তৈরী করা "এসলাম(islam)" আজও আমাদের মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষা দেওয়া হোচ্ছে, ঐ মাদ্রাসাগুলি থেকেই ঐ এসলাম(islam) শিখে আলেমরা বের হোয়ে আসছেন ও আমাদের ঐ "এসলাম(islam)"ই শিক্ষা দিচ্ছেন৷ আমরা আজ এসলাম(islam) বোলতে সেই এসলাম(islam)ই বুঝি যে "এসলাম(islam)" খ্রীস্টান পণ্ডিতরা তৈরী কোরে ১৪৬ বছর ধরে আমাদের শিক্ষা দিয়েছে৷ ফলে আজ আমাদের রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক জীবন পরিচালিত হোচ্ছে পাশ্চাত্যের খ্রীস্টানদের তৈরী করা নানা রকম তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে আর ব্যক্তিগত ধর্মীয় জীবন পরিচালিত হোচ্ছে খ্রীস্টান পণ্ডিতদের তৈরী করা "এসলাম(islam)" দিয়ে, আল্লাহ(Allah) রসুলের এসলাম(islam) দিয়ে নয়৷ ভাবতে অবাক লাগে এর পরও আমরা নিজেদের মো'মেন, মোসলেম(Muslim) ও উম্মতে মোহাম্মদী বোলে বিশ্বাস কোরি এবং পরকালে আল্লাহ(Allah)র ক্ষমা ও জান্নাতের আশা কোরি৷
সমবেত সুধীগণ! আল্লাহ(Allah) তাঁর অসীম রহমতে আমাদের জন্য কোন্ এসলাম(islam) তাঁর শ্রেষ্ঠ রসুল দিয়ে এনায়েত কোরছেন, কোন্ এসলাম(islam) তিনি কবুল কোরবেন তা আমাদের এই হেযবুত তওহীদকে বুঝিয়ে দিয়েছেন৷ সম্পুর্ণ দিয়েছেন কিনা জানিনা তবে যেটুকু দিয়েছেন তাই-ই আমাদের জন্য যথেষ্ট৷ এই হেযবুত তওহীদ থেকে আমরা মানুষকে ডাকছি সেই প্রকৃত এসলামে(islam)র দিকে- যে এসলামে(islam)র ভিত্তি তওহীদ, সর্বব্যাপী তওহীদ, যার স্তম্ভ, থাম সালাহ (নামায) এবং যার ছাদ জেহাদ [হাদীস- মুয়ায (রাঃ) থেকে আহমদ, তিরমিযি, ইবনে মাজাহ, মেশকাত)]৷ আমরা আপনাদের আহ্বান কোরছি- আপনারা শুনুন আমরা কি বলি, আমাদের আকীদা কি, আমাদের ঈমান কি, আমাদের আমল কি তারপর সিদ্ধান্ত নিন৷ হেদায়াহ অর্থাৎ দিক নির্দেশনা আমাদের হাতে নেই, ওটা আল্লাহ(Allah)র নবীদের হাতেও ছিলো না৷ হেদায়াহ একমাত্র আল্লাহ(Allah)র হাতে৷ আমরা শুধু ডাকতে পারি৷ তাই আমরা ডাকছি, আহ্বান কোরছি৷ আমরা আহ্বান কোরছি- বর্ত্তমানের চালু এই এসলাম(islam)টা আসলে আল্লাহ(Allah) রসুলের এসলাম(islam)ই নয়, খ্রীস্টান এসলাম(islam), এই খ্রীস্টান এসলাম(islam) পরিত্যাগ কোরে, প্রত্যাখ্যান কোরে আবার আল্লাহ(Allah) রসুলের প্রকৃত এসলামে(islam) প্রবেশ কোরতে৷ আমরা জানি এই আহ্বান সহজ নয়, কারণ শত শত বছর ধোরে যে দীন বিকৃত হোয়ে গেছে এবং খ্রীস্টানদের তৈরী করা যে আকীদা আমাদের মন-মগজের গভীরে ঢুকে স্থায়ী আসন কোরে নিয়েছে, তাকে উপড়ে ফেলে সেখানে আবার আল্লাহ(Allah) রসুলের দেয়া প্রকৃত আকীদাকে প্রতিষ্ঠা করা হেলা-খেলা কথা নয়৷ কিন্তু সহজই হোক আর কঠিনই হোক আহ্বান আমাদের কোরতেই হবে নইলে বিচারের দিন আল্লাহ(Allah)কে আমাদের কোন কৈফিয়ত্‍ দেবার থাকবে না৷ আল্লাহ(Allah)র কাছে আমাদের শুধু এই জবাবই হবে- আমরা তোমার প্রকৃত এসলামে(islam)র দিকে, তোমার প্রকৃত তওহীদ, সেরাতুল মুস্তাকিমের দিকে মানুষকে ডেকেছি- তোমার কোর'আনের সুরা নহলের ১২৫ নং আয়াতের নির্দেশ অনুযায়ী অর্থাৎ হেকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং সদ্ভাবে, কিন্তু ঐ আয়াতেই তুমিই বোলেছো তোমার পথ ছেড়ে কে বিপথগামী হয় এবং কে তোমার পথে থাকে সে সম্বন্ধে তুমি সম্পুর্ণ অবহিত, সচেতন৷ ইয়া আল্লাহ(Allah)৷ হেযবুত তওহীদের এই প্রচেষ্টা তুমি কবুল কর৷ তোমার অসীম শক্তি থেকে আমাদের সাহায্য কর৷ বর্ত্তমানের বিকৃত ও বিপরীতমুখী খ্রীস্টান এসলাম(islam) থেকে তোমার বান্দাদের উদ্ধার কোরে তুমি যে দীন আদম (আঃ) থেকে মোহাম্মদ (দঃ) পর্য্যন্ত নাযেল কোরেছো, সেই দীনুল এসলাম(islam), সেই দীনুল কাইয়্যেমায় সেই দীনুল হক-এ, সেই দীনুল ফেতরায় আমাদের আবার প্রবেশ করাও৷ আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই৷ তুমি তোমার অপার ক্ষমায় আমাদের মাফ করো, আমাদের হেদায়াত করো এবং আমাদের আবার তোমার তওহীদ আর তোমার শেষ রসুলের শিক্ষা পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা কোরে তোমাকে এবলিসের বিরুদ্ধে জয়ী করার জেহাদের সুযোগ কোরে দাও৷
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×