somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সোহেল
একবার যখন দেহ থেকে বা’র হ’য়ে যাব আবার কি ফিরে আসবো না আমি পৃথিবীতে? আবার যেন ফিরে আসি কোনো এক শীতের রাতে একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে। কোনো এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে”

শিশুর বেড়ে ওঠা ও বিভিন্ন কৌশলের বিউপনিবেশায়ন

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শৈশব কাল টা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সমাজ ও একটি দেশে। গবেষণায় প্রমানিত , শুধুমাত্র শৈশব কাল অনেকটাই নির্ধারণ করে দেয় একটি শিশুর ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নিবে । আর এই শৈশব নিয়েই যত চিন্তা শিক্ষিত পরিবার গুলোতে । কিছু চিন্তা নিশ্চয় শিশুকে ভালো ভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। আবার কিছু কিছু সিদ্ধান্ত শিশু মনের বৈকল্য সাধন করে । বিশেষ করে শিশুকে, সে যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠবে শৈশবে তাকে সংস্কৃতির ভেতরকার বিচিত্রতাগুলো শেখানো উচিৎ, এতে সে তার সমাজ, সংস্কৃতির সাথে নিজেকে ভালোভাবে মিলিয়ে নিতে পারবে।
বিশ্ব জুড়ে ইংরেজি ভাষার একচেটিয়া আধিপত্য দেখে অনেক শিক্ষিত পরিবারই জন্ম থেকেই তার শিশুকে ইংরেজি শোনান, কথা বলতে শিখলে ইংরেজি পড়ান, একটু বড় হলে প্রাইভেট টিউটর রাখেন তাও ইংরেজি মাধ্যমকে সামনে রেখে । সেখানে এই শিশুটি একজন আউটসাইডার হিসেবে বেড়ে উঠার সম্ভবনা কতটুকু তা শহুরে সংস্কৃতি উপলব্ধি করলেই আমরা বুঝতে পারি । শিশু মন একের সঙ্গে অন্যর মিল খুজে নিতে পছন্দ করে । সে যখন তার চর্চিত সংস্কৃতির সাথে আশেপাশের দৈনন্দিন সংস্কৃতির মিল পাই না তখন তাকে হিনোমন্য দ্যাখায়।


শিশুকে আমাদের সংস্কৃতির মধ্য থাকা বিভিন্ন বর্ণের মানুষকে মানুষ হিসেবে চিনতে দিন। খাবার তালিকায় দেশীয় মেনু রাখুন । সম্ভব হলে প্রাকিতিকভাবে চাষাবাদ করা খাবারগুলো তালিকায় রাখুন । সাবধান থাকবেন, শিশুদের খাবারের জন্য বিশেষায়িত ভাবে তৈরি করা কর্পোরেট জগতের খপ্পরে পড়বেন না । কেননা অতীতে দেখা গেছে , বিশ্বের বেশ কতকগুলো “Conspiracy Theroy” গুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় শক্তিশালী দেশগুলো তার প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য কোন সময় সামরিক বাহিনীর খাবার্বের মধ্য , ওষুধের মধ্য বিভিন্ন রোগের জীবানু দিয়ে দিয়েছে। সন্দেহ হওয়াটা অস্বাভাবিক নয় যে আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের শিশুদের নিয়ে আন্তর্জাতিক শিশু খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান গুলো কোন Conspiracy এর সাথে যুক্ত নয়। মনে রাখবেন আজকের শিশু আগামী দিনের সমাজ, দেশ সর্বোপরি পৃথিবী গড়ার কারিগর । আর সেই কারিগরের মধ্যর কেউ আমাদের এখান থেকে সহজেই বেড়ে উঠুক তা বিশ্বের বর্তমান আধিপত্যবাদী শাসক দেশ গুলোর না চাইবারই কথা ।
আপনার বাড়ির আঙ্গিনা বড় থাকলে ছোট খাট একটি শাক সবজির ও ফুলের বাগান করে ফেলুন। সপ্তাহে নির্দিষ্ট সময়ে যত্ন নিন, শিশুটিকেও ছেড়ে দিন কাদামাটির মধ্য । বাসা বাড়ি হলে ছাঁদেও করতে পারেন ইচ্ছে করলে। বর্ষার সময় বৃষ্টি হলে কাদামাটির মধ্য মজার ছলে ছেলেটির সাথে দোড় প্রতিযোগিতা করুন। দেখবেন শরীরের সাথে সাথে ওর মনও ভালোভাবে গড়ে উঠবে। পারিবারিক বন্ধন দিঢ় হবে । গাছে একটি পাখি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করুন পাখিটির নাম কি? , লক্ষ্য করুন পড়ানো বিষয়ের সাথে মিলিয়ে নিতে পারছে কিনা। খেই হারিয়ে ফেলবেন না , মনে করিয়ে দিন । একটি ফুল দেখিয়ে ঘ্রাণ নেবার প্রকিয়া জানিয়ে দিন। দেখবেন, সে সুন্দরকে ভালবাসতে শিখবে ।


আপনার নিয়মিত কিছু অভ্যাস আপনি যেটা ওর জন্য ক্ষতিকর মনে করেন সেটা ওর সামনে করা থেকে বিরত থাকুন। তবে ধরা পড়ে গেলে সেটা কেনো ক্ষতিকর সেটা বলে না দিলে বরং উল্টো সমস্যা তৈরি হতে পারে , সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। বিশেষ করে ওর সাথে গল্প করার সময় মোবাইল ফোন নাড়াচাড়া থেকে বিরত থাকুন । কম্পিউটার ব্যবহারের সময় ওকে কাছে না নেওয়াই ভালো। লেখা শেখানোর সাথে সাথে ওকে ছবি আঁকানোটাও শেখানোর চেষ্টা করুন, আঁকানোর সামগ্রী ধরিয়ে দিয়ে ওর মত করে ছেড়ে দিন, দুয়েক দিনেই অবাক হয়ে যাবেন। ভালো করলে প্রশংসা করুন,তবে বেশি যেন না হয়। একটা “ইবুক” থাকলে ওর জন্য মন্দ হয় না । সেখানে অনেক বই থাকবে, ছবি থাকবে যা থেকে ও নতুন কিছু শিখবে ।
শিশুর ভয়কে জাগিয়ে না তুলে বরং ভয়কে জয় করতে শেখান । তবে “সুপারম্যান” হওয়ার উৎসাহকে নজরে রাখবেন। বিকেলে কোথাও হাটতে হাটতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে , দিন শেষে অন্ধকার নেমে আশে কেনো? জিজ্ঞেস করুন ওকে। কিছু সময় দিন । তারপর পরিস্কার করুন বিষয়টি। অন্ধকার যে ভয়ের কোন উৎস নয় সেটাও বোঝান।


মাঝে মাঝে ওর সাথে খেলা কিংবা মজার ছলে তাকে বোঝান এই খাবারের ইতিহাস । যেমন ওকে জিজ্ঞেস করতে পারেন , “ বলোতো আমরা প্রতিদিন ভাত খাই কেনো? অথবা আমরা বাংলায় কথা বলি কেনো?। ওকে দেশীয় শিল্পীদের ক্লাসিক গান গুলো শুনতে দিন । সেই সাথে ও প্রশ্ন করলে সহজে বুঝিয়ে দিন । সতর্ক থাকবেন বড় হয়ে ও যা জানবে তা থেকে আপনার বর্ণনা যেনো ৩৬০ ডিগ্রি হারে পরিবর্তিত না হয়। আপনার কাছ থেকে ও যেনো গল্প শুনতে চাই তেমন সময় করে দেবার দিকে নজর দেবেন। গল্প শুনতে চাইলে দেশীয় সংস্কৃতির ভেতরের বিভিন্ন ধর্মীয়/কাল্পনিক মীথ গুলো সহজ করে শোনান। আপনার পড়া বাংলা ভাষার কিছু ক্লাসিক বইগুলোর গল্প শোনাতে পারেন। প্রশ্ন করলে সময় নিয়ে উত্তর দিন । দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ওকে নিয়ে ঘুরতে বের হোন । সপ্তাহে অন্তত একবার অপরিচিত জাইগায় বেড়াতে নিয়ে যান । শিশু কে পরিচয় করিয়ে দিন আপনার পরিচিতজনদের সাথে । তাকে পাড়া/মহল্লার অন্য শিশুদের সাথে খেলার সুযোগ করে দিন । সর্বোপরি, শিশুকে বাধার মধ্য বেঁধে রাখবেন না । ওকে যতটুকু সম্ভব মুক্তভাবে সিন্ধান্ত নেবার সুযোগ করে দিন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:১৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×