somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সোহেল
একবার যখন দেহ থেকে বা’র হ’য়ে যাব আবার কি ফিরে আসবো না আমি পৃথিবীতে? আবার যেন ফিরে আসি কোনো এক শীতের রাতে একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে। কোনো এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে”

দ্যা কাইট রানার ; বুক রিভিউ

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উপন্যাসের পটভূমি গড়ে উঠেছা আফগানিস্তান কে ঘিরে । আফগানিস্তানের কথা মনে হলে কল্পনায় কি ছবি ভেসে ওঠে আপনার? যুদ্ধবিধ্বস্ত, রুক্ষ, উষর, মরুভূমির এক দেশ । কিন্তু দেশটা কি এমনই ছিলো সব সময় ?

গল্পের মূল কাহিনী দুই আফগান বালকের শৈশবের কিছু ঘটানা, বন্ধুত্ব কে ভিত্তি করে; বালকদের নাম আমির জান এবং হাসান । সময়কাল সত্তরের দশক । আফগানিস্তান তখন ধীরে ধীরে এগোচ্ছে সমৃদ্ধির পথে, সমাজের অভিজাত সম্প্রদায়ের অনেকে এগিয়ে আসছেন নানা জনকল্যানমূলক কাজে । আমির জানের বাবা আগা সাহিব তাদেরই একজন । অন্যদিকে হাসান ও হাসানের বাবা আলী আমির জানদের বাসার ভৃত্য । হাসান আমির জানের একমাত্র বন্ধু হলেও তার প্রতি হাসানের আচরন একই সাথে আন্তরিক এবং অদ্ভুত । আমির জান অন্তর্মূখী, কিছুটা ভীতু প্রকৃতির আর হাসান সাহসী এবং বন্ধুর প্রতি অনুগত । বাবা আগা সাহিব হাসানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, কিন্তু নিজের ছেলের নানা দূর্বলতার জন্যে তাকে নিয়ে ততোটা সন্তুষ্ট নন । বাবার কাছে নিজের যোগ্যতা প্রমানের জন্যে মরিয়া আমির জান বেছে নেয় স্থানীয় ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগীতাকে এবং হাসানকে সাথে নিয়ে সেখানে সবাই কে হারিয়েও দেয় । কিন্তু সেই দিনই বাড়ি ফেরার পথে এমন একটা ঘটনা ঘটে যা চিরদিনের মতো বদলে দেয় আমির আর হাসানের বন্ধুত্ব ।

চলে আসে দুরুত্ব । তীব্র অপরাধবোধে আক্রান্ত আমিরের কাছে তার একমাত্র বন্ধু হাসানের উপস্থিতি অসহ্য হয়ে উঠলো আস্তে আস্তে । বাবাকে ভুল বুঝিয়ে সে হাসান আর তার বাবা আলিকে বাসা থেকে দূর করে দেয় । তারপরই আফগানিস্তানের বুকে নেমে আসে অন্ধকার । সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমন করে বসে আফগানিস্তান । লন্ড ভন্ড হয়ে যায় মানুষের জীবন । সর্বস্ব হারিয়ে, নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে বাবা আগা সাহিব ছেলে আমিরকে নিয়ে পালিয়ে চলে আসেন দেশ ছেড়ে ।

বহু বছর পর । আমির জান এখন বাস করছে সানফ্রান্সিসকোতে, পেশায় লেখক । ইতোমধ্যেই বাবা আগা সাহিব মারা গেছেন । ভালোবাসার মানুষকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে দুজনের ছোট্র সংসারে বেশ সুখীই তার জীবন । হাসানের খোঁজ সে আর পায়নি কখনো , খোঁজেও নি । এমনই এক সময়ে হঠাত্‍ একটা ফোন আসে বহুদূর থেকে । আবার বদলে যায় সবকিছু । তালেবানদের হাতে বন্দী হাসানের ছেলে সোহরাবকে উদ্ধার করতে আমির জান নিজের জীবন বিপন্ন করে ছুটে যায় আফগানিস্তান । যুদ্ধবিধ্বংস্ত আফগানিস্তানে তখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তালেবানরা, কায়েম করেছে ত্রাসের রাজত্ব, চলছে নির্বিচারে হত্যা । এমন অবস্থায়ও ভীতুমনা আমির জান কেন ছুটে গেলো নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে? শুধুই বন্ধুত্বের টানে ? নাকি অন্য কোন নিয়তিই আমির কে আবার টেনে নিয়ে গেলো নিজের মাটিতে? এতোদিন পর হাসান নিজেই বা এখন কেমন আছে, কোথায় আছে?. . . . সোহরাব আর বন্ধু হাসান কে খুঁজতে গিয়ে আমির জান খোঁজ পায় তার নিজের জীবনেরই এক অজানা অধ্যায়ের ।

আফগান লেখক খালেদ হোসেইনির হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া নানা পুরষ্কার পাওয়া কালজয়ী এই সৃষ্টি আপনার ভালো লাগবেই । বন্ধুত্ব, বিচ্ছেদ, যুদ্ধ, দুর্দশা , প্রেম আর জীবনের বাস্তবতা সব মিলিয়ে লেখক আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবেন পুরোটা সময়, আবেগে হয়তো চোখে চলে আসবে পানি ।

শেষ করি বইয়েরই একটা লাইন দিয়ে . . . There is always a way to be good again.
বুক রিভিউ: নাম : The Kite Runner লেখক : Khaled Hossaini উপন্যাসের পটভূমি গড়ে উঠেছা আফগানিস্তান কে ঘিরে । আফগানিস্তানের কথা মনে হলে কল্পনায় কি ছবি ভেসে ওঠে আপনার? যুদ্ধবিধ্বস্ত, রুক্ষ, উষর, মরুভূমির এক দেশ । কিন্তু দেশটা কি এমনই ছিলো সব সময় ? গল্পের মূল কাহিনী দুই আফগান বালকের শৈশবের কিছু ঘটানা, বন্ধুত্ব কে ভিত্তি করে; বালকদের নাম আমির জান এবং হাসান । সময়কাল সত্তরের দশক । আফগানিস্তান তখন ধীরে ধীরে এগোচ্ছে সমৃদ্ধির পথে, সমাজের অভিজাত সম্প্রদায়ের অনেকে এগিয়ে আসছেন নানা জনকল্যানমূলক কাজে । আমির জানের বাবা আগা সাহিব তাদেরই একজন । অন্যদিকে হাসান ও হাসানের বাবা আলী আমির জানদের বাসার ভৃত্য । হাসানই আমির জানের একমাত্র বন্ধু হলেও তার প্রতি হাসানের আচরন একই সাথে আন্তরিক এবং অদ্ভুত । আমির জান অন্তর্মূখী, কিছুটা ভীতু প্রকৃতির আর হাসান সাহসী এবং বন্ধুর প্রতি অনুগত । বাবা আগা সাহিব হাসানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, কিন্তু নিজের একমাত্র ছেলের নানা দূর্বলতার জন্যে তাকে নিয়ে ততোটা সন্তুষ্ট নন । বাবার কাছে নিজের যোগ্যতা প্রমানের জন্যে মরিয়া আমির জান বেছে নেয় স্থানীয় ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগীতাকে এবং হাসানকে সাথে নিয়ে সেখানে সবাই কে হারিয়েও দেয় । কিন্তু সেই দিনই বাড়ি ফেরার পথে এমন একটা ঘটনা ঘটে যা চিরদিনের মতো বদলে দেয় আমির আর হাসানের বন্ধুত্ব । চলে আসে দুরুত্ব । তীব্র অপরাধবোধে আক্রান্ত আমিরের কাছে তার একমাত্র বন্ধু হাসানের উপস্থিতি অসহ্য হয়ে উঠলো আস্তে আস্তে । বাবাকে ভুল বুঝিয়ে সে হাসান আর তার বাবা আলিকে বাসা থেকে দূর করে দেয় । তারপরই আফগানিস্তানের বুকে নেমে আসে অন্ধকার । সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমন করে বসে আফগানিস্তান । লন্ড ভন্ড হয়ে যায় মানুষের জীবন । সর্বস্ব হারিয়ে আমির জানের বাবা ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে চলে আসেন দেশ ছেড়ে । বহু বছর পর । আমির জান এখন বাস করছে সানফ্রান্সিসকোতে, পেশায় লেখক । ইতোমধ্যেই বাবা আমির সাহিব মারা গেছেন । একা নিজের স্ত্রীকে নিয়ে বেশ সুখীই তার জীবন । হাসানের খোঁজ সে আর পায়নি কখনো , খোঁজেও নি । এমনই এক সময়ে একটা ফোন আসে । আবার বদলে যায় সবকিছু । হাসানের ছেলে সোহরাবকে আমির জান নিজের জীবন বিপন্ন করে ছুটে যায় আফগানিস্তান । যুদ্ধবিধ্বংস্ত আফগানিস্তানে তখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তালেবান, কায়েম করেছে ত্রাসের রাজত্ব, চলছে নির্বিচারে হত্যা । এমন অবস্থায়ও ভীতুমনা আমির জান কেন ছুটে গেলো নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে? শুধুই বন্ধুত্বেরটানে ? নাকি আরো কিছু আছে এখানে ? এতোদিন পর হাসান নিজেই বা কোথায় আছে এখন ?. . . . সোহরাব আর বন্ধু হাসান কে খুঁজতে গিয়ে আমির জান খোঁজ পায় তার নিজের জীবনেরই এক অজানা অধ্যায়ের । আফগান লেখক খালেদ হোসাইনির হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া নানা পুরষ্কার পাওয়া কালজয়ী এই সৃষ্টি আপনার ভালো লাগবেই । বন্ধুত্ব, বিচ্ছেদ, যুদ্ধ, দুর্দশা , প্রেম আর জীবনের বাস্তবতা সব মিলিয়ে লেখক আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবেন পুরোটা সময়, আবেগে হয়তো চোখে চলে আসবে পানি । শেষ করি বইয়েরই একটা লাইন দিয়ে . . . There is always a way to be good again.
রিভিউঃ মোঃ খালিদ রহমান
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৮
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×