somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মৃতিরোমন্থনঃ [আল্টিমেট ফুড হান্টঃ পাইলট প্রোজেক্টঃ] বিউটির শরবত

২০ শে অক্টোবর, ২০২১ ভোর ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

2012 সালে আমার হঠাত করে মনে হলো, খাওয়া দাওয়া করা দরকার। কবে আবার মরে টরে যাই……… যেই ভাবা, সেই কাজ। হাসান ব্রো কে সাথে নিয়ে চলে গেলাম খাওয়া দাওয়া করতে। সবার প্রথম মিশন ছিলো, বিউটির লেবুর শরবত। আর তারই এক্কেবারে ফার্স্ট হ্যান্ড গরম গরম বিবরণ এটা, যা কিনা লিখেছিলাম সেই ২০১২ তেই (১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২)। দ্বিতীয় পর্ব ছিলো অবশ্য নান্নার শাহী মোরগ পোলাও যার বিবরণটা লিখা হয়ে ওঠেনি। ফেসবুক ব্যবহার সীমিত করে দেওয়ার পর লেখাটা আর হারাতে চাইনি। তাই এটাকে এই শো-কেসে সাজিয়ে রাখা আরকি……


DAY — 1#

SHORBOT HUNT:

আজই ইভেন্টের প্রথম দিন। আমি ভাবলাম, কথা যখন দিয়েছি, কথা রেখে ছাড়বো ইনশা আল্লাহ। তাই আজ সকাল ৯:০০ ঘটিকার জায়গায় ৯:২০ এ বের হলাম ওমেকা তে পরীক্ষা দিতে। যথারীতি বাঁশ মার্কা এক্সাম।তবে ঢাকা শহরের বাম্বু তো, পেটের জন্যে মোটেও উপকারী নয়।

এক্সাম হলের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্ণ ঝামেলা মাথায় তুলে এবং পেট ও পকেট দুই জায়গাতেই যথেষ্ট গোলোযোগ থাকা সত্ত্বেও দিয়ে দেওয়া কথা রেখে দেবার জন্য ছুটলাম শরবত খুঁজতে। লক্ষ্য জনসন রোড। এবং যথারীতি সাথে ছিলো আমাদের বাংলার নায়ক এম এ হাসান জোসেন ভাই। তো, ভাইকে সাথে নিয়ে ওমেকা থেকে বের হলাম বেলা ১টার সময়। বেরিয়েই সোজা ১১ নাম্বার নিয়ে বাইতুল মোকাররম। তারপর গুলিস্তান। ভাবলাম, এখানে তো কোন জনসন রোড দেখি নাই। তাই জান হাতে নিয়ে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে দিয়ে গেলাম অপর পাশে।শুরু করলাম হাঁটা। রমনা ভবন থেকে হাঁটতে হাঁটতে আর রাস্তা মাপতে মাপতে গিয়ে উঠলাম নর্থ-সাউথ রোডে।


নায়ক হাসান কয়, “দোস্ত দেখ, ইংলিশ নাম। নর্থ-সাউথ রোড। জনসন রোড ও মনে হয় কাছেই।” কিন্তু তার সেই কাছে যে কোন কাছে, ছিলো, তা বুঝছি ঠিকই, কিন্তু টাইমমত না আরকি। হাটছি তো হাঁটছিই, মাগার উত্তর-দক্ষিন রোড আর শেষ হয় না। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করলাম, একেকজন একেক দিক দেখায়, কিন্তু সবার জবান ঠিক, “সোজা যান”।

তো, যাইতে যাইতে হঠাত আল-রাজ্জাক এর সাথে দেখা। না না, আমাদের বোলার আব্দুর রাজ্জাক না, এটা হইলো “আল রাজ্জাক হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, বংশাল” । দেইখাই তো বলি, পাইসি। কলেজে থাকাকালীন এই জায়গায় দুইবার তাবলীগ জামাতে আসছিলাম। তো, সোজা যাইতে গিয়া সামনে দেখি এক বিশাল মোড়। এইটা হইলো “ইংলিশ রোড” ।

যদি ঢাকা শহরে কোথাও হারায়ে যান, জিগাইবেন কারে?? হয়তো কোন রিকশাওয়ালা ভাইরে, কিংবা ট্রাফিক পুলিশরে। আমরা এই ক্ষেত্রে পাইলাম একজন ভ্যান ড্রাইভারকে। জিগাই, “ও ভায়া, জনসন রোড কোনদিকে?” উনি কয়, “জংসন রোড? এই মোড় দিয়া বাম দিকে যাইবেন, সোজা যাইয়া বামে একটা মোড় দেখবেন, ওই রাস্তা লইবেন না। এর উলটা দিকে একটা রাস্তা আছে, ওইটাই জংসন রোড।”
আমি জনসন আর জংসনের মধ্যে ঝামেলা না পাকায়ে বললাম, “ভাই, রায় সাহেব বাজারটা……” । উনি কয়, “আরে মিয়া, ঐটাই রায়সাব বাজার। “ যাক, পুনরপ্রমাণিত হইলো, জনসন রোড আর জংসন রোড এই দেশে একই জিনিস।

যাক গা, যথামতো হাঁইটা গেলাম জনসন রোড। গিয়া আমি আমার চক্ষু সমতলে চাইয়া দোকান খুঁজবার লাগলাম, কিন্তু কিছু পাই না। নায়কের নজর আবার অনেক আগে থেকেই অনেক উচ্চে। সে উচ্চ দিকে তাকায়া চিল্লায়া কয়, “পাইছি।” আমার মনে হইলো, আর্কিমিডিস বাঙ্গাল হইলে “ইউরেকা” না বলে হাসান ভাইয়ের মতন “পাইসি” কয়ে বিকট চিল্লানি দিতো। বাংলা ভাষা তো!! ঝাল বেশি, তাইলে আর ওই ঝাল বিকিরণ করবার জন্য নগ্নগাত্রে রাস্তায় নেমে উত্তেজনা প্রশমন করা লাগতো না। এক চিল্লানিতেই কাভার। (যারা মনে মনে ভাবিতেছেন, নায়ক হাসান বাঙ্গাল না হয় গ্রীক হইলে কি করত?? আমি বলি, চুপ যান, শরবত খান, চিন্তার মুখে লাগাম লাগান।)

আসলাম ওই দোকানে। দোকান দেইখা আমি তো হা।
যা ভাবছিলাম, তার চেয়ে দোকান বহুত লম্বা।

অতো ফাল পাইরেন না মিয়া, কথা শেষ হয় নাই। গফের গোষ্ঠী নিয়া যাইবেন শরবত আর ফালুদা খাইতে, তা অইবো না। দোকান বহুত লম্বা আছে ঠিকই, মাগার যতটা চওড়া ভাবছিলাম, তার চেয়ে বহুত চিপা।
ঢুকলাম, অর্ডার দিলাম, পাইলাম, খাইলাম সেই আকাংক্ষিত শরবত।
তবে কেউ যদি আমার মতন ১১ নাম্বারে অর্ধেক আর বাকিটা পদব্রজে না গিয়া বড়লোকী দেখায়া রিকশা, বাস< হেলিকপ্তার, ড্রোন কিংবা ইউএফও তে কইরা যান, কদ্দূর ভাল্লাগবে, তা আমি কইতে পারি না।

শরবত হান্টঃ পার্ট ২
[আসলে মোবাইল থেকে লিখছি তো, তাই যতটুকু লিখা হইছে অতটুকু আগে পোস্ট করে নিলাম। বাকিটা এখন]

তো, বেচারা পুরা আইদ্ধেক লেবু দিয়া একটা শরবত বানাইলো। আমরাও স্ট্র দিয়া উহা পান করিলাম। আমি পান করিয়া তৃপ্তির শ্বাস ফেলতে গিয়া দেখি, আমার গেলাস ফাকা, নায়কের তখনো ২৫% বাকি। মনে হইলো, নাহ, আরও খাওয়া লাইগবেক। কিন্তু পারিপার্শিকতা বিবেচনা করিয়া শরবত না লইয়া লইলাম স্পেশাল লাচ্ছি। যদিও ইহা শরবতের মতন চরম লাগলো না, কিন্তু মনে হইলো, উহাতে আমাদের অতি পরিচিত কিছু একতা জিনিস মিশায়, যা কিনা এমনে অনেক খাইলেও লাচ্ছির সাথে জিন্দেগিতে খাই নাই।

পানাপানি পর্ব শেষ করিয়া সসম্মানে বাহিরে পদার্পন করিলাম। অবশ্যই বিল দিয়া। তা না হইলে বের হইতাম ঠিকই, কিন্তু সসম্মানে না।

ভাবলাম, আরও কিছু খাবো কিন্তু কেন যেন সাহস হইলো না। এইবার , যেদিক দিয়া আসছিলাম, তার বিপরীতে হাটা দিলাম। ওমা!! এ দেখি আমাদের আনারস মসজিদ। আমি নটরডেমে ভর্তির পর প্রথম যেই তাবলীগ জামাতে বের হই, সেটা ছিলো আনারস মসজিদে। যাত্রা সংক্ষিপ্ত করিবার সিদ্ধান্ত নিয়া অতঃপর রিকসা সহযোগে বাড়ি ফিরিলাম, তখন বেলা প্রায় ৩:০০। ঝামেলা পেট হইতে বুক আর গলাতে এসে বাসা বাঁধিয়াছে।

না না, ডরায়েন না, ডরায়েন না। শরবতে কিছু ছিলো না। বিগত কদ্দিন যাবত আমার খুবই ঠাণ্ডা লাগিয়াছিলো। বরফ দেয়া শরবত আর লাচ্ছি পেটে গিয়া, বুকে কফ জমিয়া গিয়াছে।

আরও কিছু কিছু ঘটিয়াছিল, কিন্তু তাহা যিনারা কষ্ট করিয়া শরবত খাইতে যাইবেন, তারাই অনুভব কইরেন।

SHOP NAME: BEAUTY LASSI AND FALUDA

ADDRESS: 4, JHONSON ROAD

PRICE RANGE:

shorbot-12 taka per glass

lassi- 20 taka per glass

special lassi- 30 taka per glass

faluda- 60 taka per glass

nearby places- english road; anarosh mosjid, goalghat.

ইহা ২০১২ সালের পোস্ট। ঢাকা শহরের আপগ্রেড হইয়াছে কিনা জানি না, কিন্তু দাম অবশ্যই আপগ্রেড হইয়াছে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০২১ ভোর ৫:৪৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×