somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্যান্ডিয়াগোতে বাংলাদেশী তরুণদের স্বপ্নযাত্রায় সঙ্গী হলো ‘অগ্রযাত্রা’

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ যেন এক ঝলকে দেশে ফিরে যাওয়া! হঠাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা, পুরান ঢাকার অলিগলি পথ অথবা এক পলকে পাহাড়-পর্বত আর অরণ্য দেখে আসা। চিরচেনা দেশের মায়বী মুখখানি দেখে হৃদয়ে কেমন মোচড় দিয়ে ওঠা। তারপর হঠাৎ গোলা-বারুদের শব্দে কেঁপে উঠে অভিমানে বলে ফেলা- ‘নাহ, আর দেশে ফিরব না’। শনিবার বাংলাদেশের উদিয়মান ১০ সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের তৈরি চলচ্চিত্র প্রদর্শর্নীতে স্যান্ডিয়াগোতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনুভূতি ছিলো অনেকটাই এমন।

দুপুর ২টার বেশ আগেই ‘রাঞ্চো বার্নার্ডো’ পাবলিক লাইব্রেরীতে পৌছে গেলাম। বাংলাদেশী হিসেবে সময়-জ্ঞান নিয়ে যে বদ-অভ্যাস আছে সেটি ঘুচানোর চেষ্টা করছি। এখানে এসে অনেকখানি কাটিয়ে উঠতেও পেরেছি। যাই হোক, সময় মতোই একে একে ভরে উঠলো লাইব্রেরীর ‘কমিউনিটি মিটিং হল’। সবাই যখন অধীর আগ্রহে, ঠিক তখনই শুরু করলেন স্যান্ডিয়াগোতে বাংলাদেশীদের সংগঠন ‘অগ্রযাত্রা’র বোর্ড অব ডিরেক্টর’র সদস্য মইনুল খান। সংগঠনের উদ্দোগে তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হলো বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতার স্বপ্ন দিয়ে গড়া এ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী। সৌভাগ্যবশত আমি ছিলাম ওই ১০ জনেরই একজন। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশী, আমেরিকান ছাড়াও কলকাতা থেকে আসা দর্শক-শোতারাও উপস্থিত ছিলেন।


এখানে একটু না বললেই নয়, স্যান্ডিয়াগোতে এসে যখন আমার প্রাণের ভাষা আর মাটির মানুষের সান্নিধ্য না পেয়ে মনটা বিষিয়ে উঠছিল তখনই ভার্চুয়াল জগৎ দিয়ে (ফেসবুক) স্যান্ডিয়াগোর বাংলা স্কুল ‘পাঠশালা’র মাধ্যমে বাংলাদেশীদের সাথে পরিচয়। তারপর তার শেকড়-‘অগ্রযাত্রা’র মাধ্যমে আস্তে আস্তে বাংলাদেশ নামক এই চীর সবুজ গাছের দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা ডাল-পালার ছায়ায় প্রাণের মানুষ গুলোর সাথে মিশে যাওয়া।

বাংলাদেশের ৫টি চলচ্চিত্র নিয়ে গত সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছিলাম। আমরা এখনো দেশের বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ক শিক্ষার্থী। আমেরিকা সরকারের অর্থায়নে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া স্যান্ডিয়াগো (ইউসিএসডি)’র একজন প্রফেসর, রবার্ট এ. হুপারের গবেষণা কার্যক্রমের এর আওতায় সম্প্রতি এগুলো নির্মাণের সুযোগ পাই।

বাংলাদেশে বিরাজমান প্ররিস্থিতিতে ‘টিভি সাংবাদিকতা ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে কীভাবে শান্তি ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠা করা যায়’ পূর্ব নির্ধারিত এই বিষয়টিতে আলোকপাত করেই দুটি ডকুমেন্টারি ও তিনটি ডকুড্রামা বানিয়েছি আমরা। এর পটভূমিতে স্থান পেয়েছে দেশের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক হামলা, আদিবাসীদের ভাষা সমস্যা এবং সাম্প্রতিককালে শাহবাগ আন্দোলনসহ দৈনন্দিন জীবনে শান্তি-সহনশীলতা বিষয়ক বিভিন্ন আলোচিত বিষয়াবলি। প্রদর্শনী শেষে দর্শকদের বিভিন্ন মন্তব্য ও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়।

অগ্রযাত্রা বোর্ড অব ডিরেক্টরের আরেক সদস্য, মাহমুদ হোসেন তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিন ঘন্টা ব্যাপি অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষনা করেন। তিনি বলেন,‘তোমরা তরুণেরা দেশের স্বপ্ন নিয়ে যে পথে হাটছ আমরা ‘অগ্রযাত্রা’র মাধ্যমে তাতে সামিল হওয়ার চেষ্টা করলাম। এ আমাদের এক প্রকার বিবেকের দায়বন্ধতা।’


তবে হ্যাঁ, এখানেই শেষ নয়! মাহমুদ হোসেনর নান্দনিক বাসায় প্রফেসর হুপার সহ বাংলাদেশীদের সাথে জাকজমকপূর্ণ ডিনারের স্বাদ কিন্তু সত্যিই ভোলার নয়। খাবারের গন্ধ যেন এখনো হাতে লেগে আছে। গল্প-গুজব-আড্ডার সাথে সুস্বাদু এমন সব খাবার আর পুরনো দিনের সুরেলা বাংলা গান...উহফ! সে কি ভোলা যায়!

লাকমিনা জেসমিন সোমা
স্যান্ডিয়াগো, ক্যালিফোর্ণিয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×