সারি সারি কাঠের দোতলা। প্রতিটি বাড়ীই দেখতে একই রকম। ধবধবে সাদা। আর বাড়ীর চারপাশে কমলা লেবুর গাছ। গাছে-গাছে সবুজ পাতার সাথে পাল্লা দিয়ে হাসছে হলদেটে রসালো কমলা। ফলের ভারে নুইয়ে পড়েছে ডাল। আমরা দুজন প্রথমেই ভুল করে ফেললাম। বাড়ীগুলো দেখতে একই রকম হওয়ায় একটি ভুল বাড়ীতে ঢুকে পড়ছিলাম। হঠাৎ বুঝতে পেরে থমকে দাড়ালাম। তারপর দিক পরিবর্তন করলাম। কিছু দূর হেটে আবার একটি বাড়ীর সামনে থামলাম। থামতেই হলো। এই ভিনদেশে ইংরেজির রাজত্বে ছোট্ট একটি বাড়ী থেকে ভেসে আসছে বাংলা গানের সুর! কৌতুহলী হয়ে আরেকটু ভালোভাবে কান পাতলাম। হুম, রবীন্দ্র সংগীত’ই তো! (আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে...দেখতে আমি পাইনি...!)। শতভাগ নিশ্চিৎ হলাম, এটিই আমাদের গন্তব্য। সেই কাঙ্খিত ঠিকানা!
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটের লস্-এঞ্জেলস্ শহরে এটি ছিলো আমার প্রথম দিন। ঠিক দিন না, দিনের শেষ ভাগ। সাদা আর কমলা রাঙা সেই প্রকৃতিতে তখন নেমে এসেছে সূর্যের লালচে আভা। বাড়ীতে ঢুকতেই যিনি স্বাগত জানালেন তার চেহারায় দুর্লভ এক ব্যাক্তিত্বের ছাপ। সরলতার উঠোনে যার গোপনে জ্বলে উঠে প্রতিবাদের আগুন। মনে মনে ভাবলাম, তাকে না হয় পরেই আবিষ্কার করব। বরং প্রকৃতির শেষ আলোটুকু নিভে যাওয়ার আগে ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। স্যান্ডিয়াগো থেকে এত পথ পাড়ি দিয়ে ক্লান্তির বদলে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে পড়ায় উনারা বোধহয় একটু অবাকই হলেন।
যাইহোক, সত্যি বলতে আমি এক বিশেষ আকর্ষণেই বের হয়েছিলাম। আসার পথে চলন্ত গাড়ীর (হাইচ্) জানালায় যা দেখেছি তা ছুঁয়ে না দেখলে নিজের সঙ্গে প্রতারণা করা হতো। চোখে অতৃপ্তি থেকে যেতো। তাকে আলিঙ্গন না করলে দেহ-মনের অমঙ্গল হতো। আর ক্যামেরায় ধারন না করলে হতো চরম বোকামী।
জানতে চান, কী সেই আকর্ষণ? পরের লেখায় লিখছি ‘ছবি সহ’ ...
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪